চট্টগ্রামের বাঁশখালীতে পড়া মুখস্থ বলতে না পারায় এক মাদ্রাসাশিক্ষার্থীকে গরম পানি ঢেলে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে শিক্ষকের বিরুদ্ধে। ১২ অক্টোবর সকালে উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের ডোংরা গ্রামের গণি চৌধুরী বাড়িসংলগ্ন দারুস সুন্নাহ রহমানিয়া মাদ্রাসায় এ ঘটনা ঘটে।
আহত শিক্ষার্থীর নাম মো. আশরাফুল ইসলাম (১২)। সে খানখানাবাদের মো. শফিউল আলমের ছেলে। ঘটনার পর থেকে পালিয়ে আছেন অভিযুক্ত শিক্ষক মো. আলম।
আহত শিক্ষার্থীর স্বজন ও এলাকার লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, উপজেলার খানখানাবাদ ইউনিয়নের ডোংরা গ্রামের গণি চৌধুরী বাড়িসংলগ্ন এলাকায় দারুস সুন্নাহ রহমানিয়া মাদ্রাসা নামের একটি মাদ্রাসা আছে। সেখানে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত পড়ানো হয়। ওই মাদ্রাসার অধীনেই পাশের মসজিদে আলাদা করে একটি হেফজখানা (কোরআন মুখস্থ শিক্ষাকেন্দ্র) চালু করা হয়। সেখানে ২৩ জন শিক্ষার্থী পড়াশোনা করে। ওই হেফজখানার দায়িত্বে থাকা শিক্ষক মো. আলমের বিরুদ্ধে আশরাফুলকে গরম পানিতে ঝলসে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে।
ঘটনার বর্ণনা দিয়ে আহত শিক্ষার্থী মো. আশরাফুল ইসলাম বলে, ‘আমি পড়া মুখস্থ করেই হুজুরের সামনে যাই। তখন সামান্য ভুল হলে হুজুর চুলায় পানি গরম করে ওই পানি পাঞ্জাবি ও গেঞ্জি খুলে আমার গায়ে ঢেলে দেন। তখন আমি চিৎকার করলেও আমাকে মাদ্রাসায় আটকে রাখা হয়। পরে স্থানীয় লোকজন আমাকে উদ্ধার করে গুনাগরী এলাকার একটি হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা করান।’
আহত আশরাফুল ইসলামের বাবা মো. শফিউল আলম বলেন, ‘আমার ছেলে ওই মাদ্রাসার হেফজ বিভাগের আবাসিক শিক্ষার্থী। সে ১৮ পারা কোরআন মুখস্থ করেছে। ঘটনার দিন পড়া মুখস্থ দিতে না পারায় শিক্ষক গরম পানি দিয়ে তাকে ঝলসে দেন। তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য চমেক হাসপাতালে নেওয়া হয়েছে।’
শফিউল আলম আরও বলেন, ‘ঘটনার পরদিন রোববার বিকেলে স্থানীয় লোকজন ও শিক্ষার্থীদের কাছে বিষয়টি শুনে ছেলেকে উদ্ধার করি। এদিকে ঘটনার পর হেফজখানা বন্ধ রয়েছে এবং অভিযুক্ত শিক্ষক পালিয়ে গেছেন।’
তবে মাদ্রাসা পরিচালনা কমিটির সভাপতি আবু ইউসুফ চৌধুরী বলেন, ‘হেফজখানার ঘটনা নিয়ে আমরা শুক্রবার মাদ্রাসার গভর্নিং বডির সভা ডেকেছি। তাতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা থাকবেন।’
আবু ইউসুফ চৌধুরী আরও বলেন, ‘অভিযুক্ত ব্যক্তি দোষ স্বীকার করেছেন। আমরা সভার সিদ্ধান্ত অনুসারে আইনত ব্যবস্থা নেব।’