‘বন্ধু, কী খবর বল?’ দীর্ঘ বছর পর বাল্যকালের বন্ধুর সঙ্গে দেখা হতেই এভাবে কুশল বিনিময় শুরু হয়। চলে আলাপচারিতা আর পারিবারিক ও কর্মস্থলের গল্প। কেউ কেউ ফিরে যান বিদ্যালয়জীবনের মজার স্মৃতির কথায়।
নতুন-পুরোনো শিক্ষার্থীদের এমন আড্ডায় জমজমাট হয়ে উঠেছিল সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার সোনাখাড়া ইউনিয়নের ঐতিহ্যবাহী নিমগাছি উচ্চবিদ্যালয়ের সবুজ মাঠ। ঈদুল ফিতরের পরের দিন আজ শুক্রবার অনুষ্ঠিত হয়েছে বিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পুনর্মিলনী।
‘এসো মিলি প্রাণের স্পন্দনে’ স্লোগান সামনে রেখে বিদ্যালয় চত্বরে আয়োজিত অনুষ্ঠান জাতীয় সংগীতের মাধ্যমে শুরু হয়। এ সময় জাতীয় পতাকা উত্তোলন করেন ১৯৬৪ সালে প্রতিষ্ঠিত বিদ্যালয়ের প্রথম ব্যাচের এসএসসি পরীক্ষার্থী প্রাক্তন শিক্ষক গোলজার হোসেন ও প্রাক্তন প্রধান শিক্ষক মো. পিয়ার আলী। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো. মনিরুজ্জামান জিন্নাহ। এ পর্ব উপস্থাপনা করেন প্রাক্তন ছাত্র ও উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল হোসেন তালুকদার। প্রথমবারের মতো আয়োজিত অনুষ্ঠান উপলক্ষে বর্ণাঢ্য শোভাযাত্রা বের করা হয়।
দ্বিতীয় পর্বে প্রাক্তন শিক্ষার্থীদের পরিচয় ও স্মৃতিচারণা অনুষ্ঠানে বিভিন্ন বছরের শিক্ষার্থীরা তাঁদের অনুভূতি প্রকাশ করেন। এ পর্ব উপস্থাপনা করেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী আহসান হাবীব। বক্তব্য দেন উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ইমরুল হোসেন তালুকদার, সহকারী প্রধান শিক্ষক কে এম ইউনুস, সরকারি মাইকেল মধুসূদন কলেজের সমাজবিজ্ঞান বিভাগের প্রধান খ ম রেজাউল করিম, বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও সোনাখাড়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবু হেনা মোস্তফা কামাল, সাবেক চেয়ারম্যান আমজাদ হোসেন, গাইবান্ধা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুশান্ত কুমার মাহাতো, একটি বেসরকারি সংস্থার আঞ্চলিক ব্যবস্থাপক কে এম এনামুল হক প্রমুখ। অনুষ্ঠানে আমন্ত্রিত অতিথি হিসেবে বক্তব্য দেন উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আবদুল হাদী আলমাজী ও সাধারণ সম্পাদক আবুল কালাম আজাদ।
নিজের অভিব্যক্তি প্রকাশ করতে গিয়ে ১৯৭১ সালের এসএসসি ব্যাচের শিক্ষার্থী ও প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষক মমতাজ বেগম বলেন, ‘শেষ জীবনে এ রকম একটা আয়োজনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পেরে খুব ভালো লাগছে।’ আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে ২০০১ সালে এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নেওয়া সোহেলী আক্তার বলেন, ‘আজকের দিনটা স্মরণীয় হয়ে থাকবে।’ প্রাক্তন শিক্ষার্থী ও গাইবান্ধা জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক সুশান্ত কুমার মাহাতো বলেন, এ আয়োজন ধারাবাহিকভাবে করার জন্য উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে।
আয়োজনে অংশগ্রহণকারীদের জন্য আপ্যায়নের ব্যবস্থা ছিল বৈচিত্র্যময়। ফুচকা, আইসক্রিম, চা আর দুপুরের খাবার ছিল উল্লেখযোগ্য। বিকেলে সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানের আয়োজন রয়েছে।