একজন প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা নিয়ে কর্মী-সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে পাঠানোর প্রস্তাব দিয়েছেন বরগুনার আমতলী উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জালাল উদ্দিন ফকির। দলের ইউনিয়ন পর্যায়ের নেতাদের কাছে এই প্রস্তাব দেওয়ার একটি অডিও ফাঁস হয়েছে। উপজেলার শীর্ষ নেতার এমন প্রস্তাবে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন স্থানীয় বিএনপির নেতা-কর্মীরা।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, বিএনপির চলমান আন্দোলনের বিষয়ে আলোচনা করতে গত বুধবার উপজেলার সব ইউনিয়নের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকদের ডাকেন উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জালাল উদ্দিন। তাঁর এক আত্মীয়ের বাসায় এই সভা হয়। সেখানে আলাপের একটি অডিও ফাঁস হয়েছে।
উল্লেখ্য, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বরগুনা-১ (সদর, আমতলী ও তালতলী) আসনে ১০ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। অবশ্য জাতীয় পার্টির প্রার্থী মো. খলিলুর রহমান গতকাল রোববার নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দিয়েছেন। এখানে আওয়ামী লীগ মনোনীত প্রার্থীর পাশাপাশি দলের আরও তিন নেতা স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন।
অডিওতে জালাল উদ্দিন ফকির নেতা-কর্মীদের উদ্দেশে বলেন, আওয়ামী লীগের এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছ থেকে তিনি প্রস্তাব পেয়েছেন। তাঁকে ভোট দিলে তিনি প্রতিটি ইউনিয়নে খরচ বাবদ এক লাখ টাকা করে দেবেন। এই মুহূর্তে নেতা-কর্মীদের হাতে টাকাপয়সা নেই। পদধারী ছাত্রদল, যুবদলসহ বিএনপির নেতা-কর্মীরা মাঠে নামতে পারবেন না। তবে সাধারণ কর্মী ও সমর্থকেরা কেন্দ্রে গিয়ে ভোট দিয়ে আসবেন।
একপর্যায়ে উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব তুহিন মৃধাকে বলতে শোনা যায়, এত অল্প টাকার জন্য কেন আন্দোলন-সংগ্রাম ছেড়ে কর্মী–সমর্থকদের ভোটকেন্দ্রে পাঠাবেন? এমন প্রশ্নের জবাবে জালাল ফকির বলেন, ‘আমার পেটে ক্ষুধা আছে। আন্দোলন–সংগ্রামে কেউ ৫০ হাজার টাকা, এক লাখ টাকা দিতে পারবেন? পারবেন মাত্র ৫ হাজার টাকা, ১০ হাজার টাকা দিতে।’ ওই অডিওতে আরও বলতে শোনা গেছে, টাকা দুই ধাপে পাওয়া যাবে। নির্বাচনের মাঝামাঝি সময়ে অর্ধেক আর নির্বাচনের দিন বাকি অর্ধেক।
এ বিষয়ে উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক জালাল উদ্দিন ফকিরের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগ বন্ধ পাওয়া গেছে।
গুলিশাখালী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি জসীম উদ্দিন বলেন, আন্দোলন চাঙা করতে জালাল উদ্দিন ফকির সভা ডেকেছিলেন। শুধু আন্দোলন জোরদারের কথা হয়েছে। তবে অডিওর বিষয়ে তিনি কিছুই জানেন না বলে দাবি করেন।
আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্যসচিব তুহিন মৃধা বলেন, আন্দোলন জোরদার করতে জালাল উদ্দিন ফকির সভা ডেকেছিলেন। ওই সভায় তিনি আন্দোলন-সংগ্রামের কথা বাদ দিয়ে এক স্বতন্ত্র প্রার্থীর কাছ থেকে টাকা এনে তাঁর পক্ষে কর্মী–সমর্থকদের ভোট দেওয়ার প্রস্তাব দেন। কিন্তু তিনি তাঁর এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে চলে এসেছেন।