আকাশ থেকে মাটিতে নেমে এল একটি হেলিকপ্টার। সেখানে থেকে বর আর কনের সাজে বেরিয়ে এলেন দুই তরুণ–তরুণী। গ্রামের মাঠে এই দৃশ্য দেখতে চারপাশে তখন শত শত মানুষের ভিড়। হেলিকপ্টার থেকে নেমে ছবি তোলার পর্ব চলল। এর পরই বর উঠলেন হাতির পিঠে। আর কনে চড়লেন গাড়িতে।
গতকাল শনিবার বিকেলে সুনামগঞ্জের জগন্নাথপুর পৌর শহরের হলুদপুর গ্রামে ব্যতিক্রমী এই আয়োজন দেখা যায়। মূলত এটা ছিল যুক্তরাজ্যপ্রবাসী শাহ সামছুল ইসলাম ও মনিষা ইসলামের বিবাহোত্তর সংবর্ধনার আয়োজন।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, সামছুল ইসলাম উপজেলার লুদরপুর গ্রামের যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সিরাজুল ইসলামের ছেলে। সিরাজুল তাঁর স্ত্রী, তিন ছেলে ও তিন মেয়ে নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে যুক্তরাজ্যে বাস করছেন। প্রায় এক মাস আগে তাঁর ছেলে সামছুল ইসলাম যুক্তরাজ্যপ্রবাসী পাকিস্তানি বংশোদ্ভূত তরুণী মনিষা ইসলামকে বিয়ে করেন। ৭ মার্চ নববধূকে নিয়ে দেশে আসেন সামছুল ও তাঁর পরিবার। দেশে আসার পর থেকে তাঁরা সিলেট শহরে বসবাস করলেও গতকাল গ্রামের বাড়িতে বিবাহোত্তর সংবর্ধনার আয়োজন করেন।
গতকাল সিলেট থেকে হেলিকপ্টারে সামছুল ও মনিষা লুদরপুর গ্রামের একটি মাঠে অবতরণ করেন। পরে হাতির পিঠে চড়ে সামছুল নিজ বাড়িতে যান। আর মনিষা গাড়িতে চড়ে শ্বশুরবাড়িতে যান। জাঁকজমকপূর্ণ এই বিয়ের আয়োজন দেখতে গ্রামের বিভিন্ন বয়সী মানুষ ওই মাঠে ও সামছুলের গ্রামের বাড়িতে ভিড় করেন।
সামছুলের বাবা যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সিরাজুল ইসলাম বলেন, ‘লন্ডনেই ছেলের বিয়ে অনুষ্ঠিত হয়েছে। এখন গ্রামের বাড়িতে আত্মীয়–স্বজনদের নিয়ে বিয়ের অনুষ্ঠান করলাম। বড় ছেলের বিয়ে তাই সবাই মিলে আনন্দ করতে হেলিকপ্টার ও হাতির ব্যবস্থা করেছি। দেশের লোকজনের সঙ্গে আনন্দ করতে আমরা দুই পরিবারের ১০ জন দেশে এসেছি। সবার আনন্দে আমরাও বেশ খুশি।’
যুক্তরাজ্যপ্রবাসী সামছুল বলেন, মূলত তাঁর বড় বোনের ছেলেমেয়ের শখ পূরণের জন্য বিয়েতে হেলিকপ্টার ও হাতির আয়োজন করা হয়েছে। সবাই মিলে আনন্দ করায় কনেও আনন্দ পেয়েছেন। তিনি জানান, লন্ডনে তিনি ও তাঁর স্ত্রী মনিষা ইসলাম একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন।
লুদরপুর গ্রামের প্রবীণ সুরুজ মিয়া বলেন, হঠাৎ করে হেলিকপ্টার ও হাতি চড়ে লন্ডনি বর–কনের বিয়ের আয়োজন দেখে গ্রামবাসী আনন্দিত।