নরসিংদী সদর উপজেলার মাধবদীতে অভিযান চালিয়ে প্রায় ৮০০ অবৈধ গ্রাহকের গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন করেছেন জেলা প্রশাসনের ভ্রাম্যমাণ আদালত। আজ মঙ্গলবার দুপুরে উপজেলার নুরালাপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রদী এলাকায় অভিযান চালিয়ে এসব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়। অভিযানে নেতৃত্ব দেন জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন।
তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষ বলছে, ছয় বছর ধরে মাধবদীর নুরালাপুর ইউনিয়নের রামচন্দ্রদী এলাকায় অবৈধ ৪টি পয়েন্ট ব্যবহার করে বিভিন্ন স্থাপনায় গ্যাস সংযোগ ব্যবহৃত হয়ে আসছিল। প্রভাবশালী ব্যক্তিদের মাধ্যমে তিন ইঞ্চি পাইপলাইনের মাধ্যমে বিভিন্ন বাণিজ্যিক ও আবাসিক স্থাপনায় এসব সংযোগ নেওয়া হয়। একাধিকবার অভিযান চালিয়ে বন্ধ করা হলেও এর কিছুদিন পরই এসব সংযোগ চালু করা হয় স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিদের হস্তক্ষেপে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আজ মঙ্গলবার দিনভর ওই এলাকায় ভ্রাম্যমাণ আদালত অভিযান চালায়। অভিযানে চারটি পয়েন্টের মাটি খুঁড়ে গ্যাসের পাইপ কেটে দেওয়া হয় এবং এসব পাইপের মুখ ঝালাই করে দেওয়া হয়। এতে অন্তত ৮০০ অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। এ সময় তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি জেলা প্রশাসন ও পুলিশের কয়েক কর্মকর্তা উপস্থিত ছিলেন।
গ্যাস সংযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়া কয়েকজন জানান, স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা এসব সংযোগ দেওয়ার সময় সংযোগপ্রতি ৫ থেকে ১০ হাজার টাকা করে নিয়েছেন। এ ছাড়া প্রতি মাসে তাঁরা এসব সংযোগ থেকে ১৫০ থেকে ২০০ টাকা করে আদায় করেন। তাঁদের দাবি, বৈধ উপায়ে গ্যাসের সংযোগ দেওয়া হোক তাঁদের।
নরসিংদীর তিতাস গ্যাসের ব্যবস্থাপক মাকসুদুর রহমান বলেন, আজকের ভ্রাম্যমাণ আদালতের অভিযানে এসব অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করার ফলে মাসে অন্তত ৩০ লাখ টাকার গ্যাস সাশ্রয় হবে তিতাস গ্যাস কর্তৃপক্ষের। এতে স্থানীয় শিল্পকারখানাগুলো পর্যাপ্ত গ্যাস পাবে এবং গতি বাড়বে।
নরসিংদী জেলা প্রশাসনের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট জাকির হোসেন বলেন, বাংলাদেশ গ্যাস আইন ২০১০ অনুযায়ী ভ্রাম্যমাণ আদালতের এই অভিযান পরিচালিত হয়েছে। অভিযানে প্রায় ৮০০ অবৈধ সংযোগ বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এসব অবৈধ গ্যাস সংযোগের কারণে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছিল। ভবিষ্যতে কেউ অবৈধ গ্যাস সংযোগ নিলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।