‘হোসাইন খুব ভালো মানুষ ছিল। আমার দেখা বিচক্ষণ মানুষদের মধ্যে অন্যতম। সবার বিপদে–আপদে এগিয়ে আসত। অনার্স-মাস্টার্সে ওর ফল বেশ ভালো ছিল। ২৪ তারিখে ওর বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা ছিল। কিন্তু এর আগেই আমাদের বন্ধুটা চলে গেল।’ কিশোরগঞ্জের মিঠামইন উপজেলা পল্লী বিদ্যুৎ কর্মকর্তা মো. হোসাইন হিমেলকে (২৯) নিয়ে কথাগুলো বলছিলেন তাঁর সহপাঠী ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক শিক্ষার্থী মেহেদী হাসান ওরফে শামীম।
গতকাল সোমবার সন্ধ্যায় ইটনা-মিঠামইন-অষ্টগ্রাম অল ওয়েদার সড়কের দ্বিতীয় সেতুর কাছে শখের বশে জাল দিয়ে মাছ ধরতে গিয়ে প্রবল স্রোতে তলিয়ে যান হোসাইন হিমেল। এরপর আজ মঙ্গলবার দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ঘটনাস্থল থেকে এক শ গজ দূরে তাঁর লাশ পান ফায়ার সার্ভিসের ডুবুরিরা।
হোসাইন হিমেল নোয়াখালীর সুবর্ণচর উপজেলার চরজব্বার ইউনিয়নের চরহাসান গ্রামের নূর মোহাম্মদের ছেলে। তাঁরা তিন ভাই ও ছয় বোন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের আরবি বিভাগ থেকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তরে ৩ দশমিক ৫–এর বেশি সিজিপিএ নিয়ে শিক্ষাজীবন শেষ করেন তিনি। এরপর যোগ দেন কিশোরগঞ্জ পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির মিঠামইন জোনাল অফিসের সহকারী এনফোর্সমেন্ট কো-অর্ডিনেটর (এইসি) হিসেবে। এর মধ্যেই বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিসের (বিসিএস) লিখিত পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিলেন তিনি। ২৪ জুলাই তাঁর লিখিত পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা।
হোসাইন হিমেলের ছোট ভাই মো. হাসান ভাইয়ের লাশ আনতে গিয়েছেন কিশোরগঞ্জে। তিনি জানান, কিশোরগঞ্জ সদর হাসপাতালে ময়নাতদন্ত শেষে লাশ পরিবারের কাছে দেওয়া হবে বলে তাঁকে জানানো হয়েছে।
মো. হাসান প্রথম আলোকে বলেন, গত বুধবার বিয়ে করেছিলেন তাঁর ভাই হোসাইন। হাতের মেহেদির রং এখনো শুকায়নি। এর মধ্যে ঈদের ছুটি শেষে রোববার কর্মস্থলে যোগ দেন তিনি। গতকাল বিকেলে হোসাইন ঝাঁকি জাল দিয়ে মাছ ধরার জন্য অল ওয়েদার সড়কের দ্বিতীয় সেতুর কাছে যান। সেখানে জাল ফেলতে গিয়ে তিনি পানিতে পড়ে নিখোঁজ হন। এরপর আজ দুপুরে হাওর থেকে লাশ উদ্ধার করেন ডুবুরিরা।