দীর্ঘ আট মাস পর গ্যাস পেয়ে পুরোদমে উৎপাদন শুরু করেছে চট্টগ্রামের আনোয়ারায় অবস্থিত রাষ্ট্রায়ত্ত সার কারখানা চিটাগাং ইউরিয়া ফার্টিলাইজার লিমিটেড (সিইউএফএল)। গতকাল রোববার দিবাগত রাত পৌনে একটার সময় ইউরিয়া উৎপাদন শুরু হয় কারখানাটিতে।
যান্ত্রিক ত্রুটি ও গ্যাস–সংকটের কারণে চলতি বছরের ৭ ফেব্রুয়ারি থেকে কারখানায় উৎপাদন বন্ধ ছিল। একই কারণে এর আগের বছরও শুধু পাঁচ দিন ইউরিয়া উৎপাদন করতে সক্ষম হয়েছিল কারখানাটি।
সিইউএফএল সূত্র জানায়, যান্ত্রিক ত্রুটি ও গ্যাস–সংকট কাটিয়ে ৩ অক্টোবর গ্যাস সরবরাহ পায় সিইউএফএল। গ্যাস পাওয়ার পর কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মধ্যে আনন্দ ছড়িয়ে পড়ে। সঙ্গে সঙ্গে স্টার্টআপে (কারখানা চালুর প্রক্রিয়া) যান তাঁরা। সব প্রক্রিয়া শেষে গত রাতে পুরোদমে উৎপাদনে যায় কারখানাটি। পূর্ণমাত্রায় উৎপাদনের জন্য সম্পূর্ণ গ্যাসনির্ভর এ কারখানায় দৈনিক ৪৮ থেকে ৫২ মিলিয়ন ঘনফুট গ্যাসের প্রয়োজন হয়। গ্যাস–সংকট ও যান্ত্রিক নানা সমস্যা থাকায় গত অর্থবছরে কারখানাটিতে প্রায় আড়াই লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া সার উৎপাদিত হয়েছে।
বাংলাদেশে ইউরিয়ার চাহিদা বছরে প্রায় ২৬ লাখ মেট্রিক টন। তার মধ্যে সিইউএফএলসহ বিসিআইসির অন্যান্য কারখানা প্রায় ১০ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদন করে। অবশিষ্ট ১৬ লাখ মেট্রিক টন ইউরিয়া উচ্চ মূল্যে আমদানি করতে হয়।
সিইউএফএলের উৎপাদন বিভাগীয় প্রধান উত্তম চৌধুরী বলেন, ‘আমরা গতকাল রাত থেকে ইউরিয়া উৎপাদন শুরু করেছি। কারখানায় উৎপাদনের প্রক্রিয়া শুরু হওয়ায় শ্রমিক, কর্মচারী ও কর্মকর্তাদের মধ্যে আনন্দ বিরাজ করছে।’
১৯৮৭ সালের ২৯ অক্টোবর জাপানের কারিগরি সহায়তায় কর্ণফুলী নদীর দক্ষিণ পারে আনোয়ারা উপজেলার রাঙ্গাদিয়ায় সার কারখানাটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। কারখানা চালু হওয়ার সময় দৈনিক ১ হাজার ৭০০ মেট্রিক টন এবং বার্ষিক ৫ লাখ ৬১ হাজার মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদনের ক্ষমতা থাকলেও বর্তমানে দৈনিক ১ হাজার ২০০ মেট্রিক টন ইউরিয়া উৎপাদিত হচ্ছে। পাশাপাশি দৈনিক ৮০০ মেট্রিক টন এবং বার্ষিক ৩ লাখ ১০ মেট্রিক টন অ্যামোনিয়া উৎপাদন করতে পারে সিইউএফএল।