বানিয়ারচরে গির্জায় হামলার ২৪ বছরেও বিচার শুরু হয়নি

গোপালগঞ্জ জেলার মানচিত্র
গোপালগঞ্জ জেলার মানচিত্র

গোপালগঞ্জের মুকসুদপুরে বানিয়ারচর গ্রামের ক্যাথলিক গির্জায় হামলার ২০ বছর পর ২০২১ সালে আদালতে অভিযোগপত্র দেয় পুলিশ। আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন। তবে এটি এখনো অভিযোগ গঠনের অপেক্ষায় আছে।

২০০১ সালের ৩ জুন ওই হামলা হয়। এতে ১০ জন নিহত ও অর্ধশতাধিক আহত হন। ওই ঘটনার ২৪ বছর পূর্তি আজ। এ ঘটনায় গির্জার তৎকালীন ফাদার পিতাঞ্জা মিম্মো ও ওই এলাকার বাসিন্দা পিটার বৈরাগী ৩৭ জনকে আসামি করে হত্যা মামলা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা করেন। দীর্ঘদিনেও বিচারকাজ শুরু না হওয়ায় হতাশা ও ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন হতাহত ব্যক্তির স্বজনেরা।

এ বিষয়ে গোপালগঞ্জের জেলা ও দায়রা আদালতের সহকারী সরকারি কৌঁসুলি (এপিপি) শহিদুজ্জামান বলেন, মামলায় ২৩ বার তদন্তকারী কর্মকর্তার পরিবর্তন হয়েছে। শেষ ২০২১ সালের ৩১ অক্টোবর পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) অভিযোগপত্র দাখিল করেছে। আদালত অভিযোগপত্র গ্রহণ করেছেন। মামলাটি চার্য গঠনের অপেক্ষায় আছে। এরপর শুনানির তারিখ নির্ধারণ করা হবে।

শহিদুজ্জামান জানান, ওই হামলার ঘটনায় দুটি মামলায় ৩৭ জন আসামি ছিলেন। ২৩ জনের বিরুদ্ধে অভিযোগপত্র দেওয়া হগয়। দীর্ঘদিন পার হওয়ায় মামলার অনেক আসামি মারা গেছেন।

‘আমার বুক যারা খালি করেছে, তাদের ফাঁসি চাই’
গির্জায় বোমা হামলায় নিহত হন রক্সিড জেত্রা, বিনোদ দাস, মন্মথ সিকাদার, সঞ্জীবন বাড়ৈ, পিটার সাহা, অমর বিশ্বাস, সতীশ বিশ্বাস, ঝিন্টু মন্ডল, মাইকেল মল্লিক ও সুমন হালদার।

কথা হয় সঞ্জীবন বাড়ৈর বোন ডলি বাড়ৈর (৩৫) সঙ্গে। তিনি বলেন, ‘ভাইয়ের শোকে–রোগে আক্রান্ত হয়ে শয্যাশায়ী বাবা। মা মেরী বাড়ৈ সন্তান হত্যার বিচারের আশায় থাকতে থাকতে ২০২১ সালে পৃথিবী ছেড়েছেন। আমার বাবা ছেলে হত্যার বিচার দেখে যেতে পারবেন কি না জানি না।’

বোমা হামলায় নিহত ঝিন্টু মন্ডলের মা ননী মন্ডল বলেন, ‘ঝিন্টু আমার একমাত্র ছেলে ছিল। আমার বাবাকে ওরা মেরে ফেলল। আজও বাবার পথ চেয়ে বসে থাকি। আমার বাবাকে যারা মারল, তারা কি ধরা পড়বে না? আমি বেঁচে থাকতে আমার বাবার হত্যাকারীদের বিচার দেখে যেতে পারব না? আমার বুক যারা খালি করেছে, তাদের ফাঁসি চাই।’