ফ্যাসিবাদী সরকারের দোসররা আবারও মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে বলে মন্তব্য করেছেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের আহ্বায়ক হাসনাত আবদুল্লাহ। আজ মঙ্গলবার বিকেলে কুমিল্লার দেবীদ্বার উপজেলা পরিষদ হলরুমে আয়োজিত এক সভায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসররা আবারও মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে। আমরা চাই, এই ফ্যাসিবাদ যেন অন্য কোনো ফর্মে পুনর্বাসিত না হতে পারে। ফ্যাসিবাদ বিভিন্ন ফর্মে আসতে পারে, ফ্যাসিবাদ আপনার স্কুলেও থাকতে পারে, সমাজকাঠামোতেও থাকতে পারে, অর্থনৈতিক কাঠামোতেও থাকতে পারে। ফ্যাসিবাদের পুনরুত্থান যেন আর কোথাও না হতে পারে, এ বিষয়ে আমাদের সবাইকে সচেতন থাকতে হবে।’
বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতা হাসনাত আবদুল্লাহ আরও বলেন, ‘ফ্যাসিবাদী আচরণ যে কারও মাঝে থাকতে পারে। এটা এই অন্তর্বর্তী সরকারের হতে পারে, নাহিদও হতে পারে, সারজিসও হতে পারে, এটা হাসনাতও হতে পারে। যে কেউ হতে পারে এই ফ্যাসিবাদের পুনর্বহিঃপ্রকাশ। তবে আর যাতে কেউ ফ্যাসিবাদ প্রতিষ্ঠা না করতে পারে, সেদিকে সবাইকে খেয়াল রাখতে হবে। আমরা একটি নতুন বাংলাদেশ গড়তে যাচ্ছি। এই নতুন বাংলাদেশ সবাইকে নিয়েই গড়ব। এ জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধভাবে কাজ করতে হবে।’
বিকেলে উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা পরিবারের উদ্যোগে বন্যাদুর্গতদের অর্থসহায়তা প্রদান অনুষ্ঠানে যোগদানের আগে দুপুরে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত এক স্মরণসভায় বক্তব্য দেন হাসনাত আবদুল্লাহ। জুলাই-আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে আহত ও শহীদদের স্মরণে ওই সভার আয়োজন করা হয়।
সভায় আওয়ামী লীগের প্রশ্নে জিরো টলারেন্স ঘোষণা দিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘আওয়ামী লীগ যদি কখনো ফিরত তাহলে শেখ হাসিনাকে দেশ ছেড়ে চলে যেতে হতো না। পৃথিবীতে এমন কোনো ইতিহাস নেই যে কোনো ফ্যাসিবাদের পতন হয়েছে এবং সেটা আবার ফিরে এসেছে। এ ছাড়া আওয়ামী লীগ বাংলাদেশে ফিরবে কি ফিরবে না, সেটা চূড়ান্ত হয়ে গেছে গত ৫ আগস্ট। ফ্যাসিবাদ থেকে যারা উৎখাত হয়েছে, তারা ক্রমেই ইতিহাসে নিগৃহীত হয়েছে। আওয়ামী লীগের পরিণতিও একই হবে।’
জার্মানি ও ইতালির উদাহরণ দিয়ে হাসনাত আবদুল্লাহ বলেন, ‘পৃথিবীতে নাৎসি পার্টি ও মুসোলিনি পার্টি যে ক্যাটাগরির, এই ফ্যাসিবাদী আওয়ামী লীগও সেই ক্যাটাগরির। এই আওয়ামী লীগের বাংলাদেশে বিচার নিশ্চিত হওয়ার পূর্বে বা পরে আর কোনোভাবে ফেরার সুযোগ নেই।’
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) নিগার সুলতানার সভাপতিত্বে স্মরণসভায় জ্যেষ্ঠ সহকারী পুলিশ সুপার (দেবীদ্বার সার্কেল) মো. শাহীন, উপজেলা সহকারী কমিশনার (ভূমি) মোহাম্মদ রায়হানুল ইসলাম, উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মিনহাজ উদ্দিন, দেবীদ্বার থানার পুলিশ পরিদর্শক (তদন্ত) মো. শাহিনুল ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।