কক্সবাজার-টেকনাফ মেরিন ড্রাইভ সড়কের হিমছড়ি সৈকতের কাছে সমুদ্রের পানিতে ভাসতে দেখা গেছে বিশালাকৃতির একটি মৃত তিমি মাছ।
মঙ্গলবার দুপুরে শরীরে রশি বেঁধে তিমিটি উপকূলে তুলে আনার চেষ্টা করেন সৈকতের স্বেচ্ছাসেবীরা। বিকেল চারটার দিকে ভাটা শুরু হলে তিমিটি গভীর সাগরের দিকে ভেসে যেতে থাকে।
ঘটনাস্থল ঘুরে এসে কক্সবাজার বন ও পরিবেশ সংরক্ষণ পরিষদের সভাপতি দীপক শর্মা প্রথম আলোকে বলেন, আজ দুপুর ১২টার দিকে স্থানীয় একজন জেলে হিমছড়ি সৈকত থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার গভীর সাগরে বিশালাকৃতির মৃত তিমি মাছটি ভাসতে দেখেন। এরপর জেলা প্রশাসন, পুলিশ ও মৎস্য বিভাগের কর্মকর্তারা ঘটনাস্থলে যান। বিকেল সাড়ে চারটা পর্যন্ত বিভিন্ন চেষ্টা চালিয়েও তিমিটিকে কূলে আনা যায়নি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, দুপুর ১২টার দিকে ১০-১২ জন স্বেচ্ছাসেবী দ্রুতগতির কয়েকটি নৌযান (স্পিডবোট) নিয়ে মৃত তিমিটির কাছে যান। এরপর তাঁরা রশি দিয়ে তিমিটি নৌযানের সঙ্গে বেঁধে কূলে টেনে আনার চেষ্টা করেন। বিশালাকৃতির কারণে তিমিটি ঘটনাস্থল থেকে নড়ানো সম্ভব হয়নি।
তিমি মাছটির গতিবিধি পর্যবেক্ষণের জন্য সেখানে পাহারা বসানো হয়েছে বলে জানিয়েছেন জেলা প্রশাসনের পর্যটন শাখার নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট মাসুম বিল্লাহ।
তিনি প্রথম আলোকে বলেন, দুপুর থেকে স্বেচ্ছাসেবীদের একটি দল নৌযান নিয়ে সমুদ্রে গিয়ে তিমিটি রশি দিয়ে বেঁধে উপকূলে টেনে আনার চেষ্টা করে। কিন্তু তা সম্ভব হয়নি। বিকেল চারটার দিকে তিমিটি ভাটার টানে আবার গভীর সমুদ্রের দিকে চলে যায়। ভোররাতের জোয়ারের পানিতে এটি আবার উপকূলের কাছাকাছি চলে আসতে পারে। তখন রশি দিয়ে বেঁধে উপকূলে তুলে আনা হবে। আগামীকাল বুধবার সকালে তিমিটি বালুচরে পুঁতে ফেলা হবে।
মাসুম বিল্লাহ আরও বলেন, প্রত্যক্ষদর্শীর বিবরণ শুনে মনে হয়েছে, জাহাজের ধাক্কায় বা প্রাকৃতিক কোনো দুর্যোগের কারণে কয়েক দিন আগে তিমি মাছটির মৃত্যু হয়েছে। মাছটির শরীরের বিভিন্ন অংশে পচন ধরেছে। পানিতে ভাসতে থাকায় দৈর্ঘ্য–প্রস্থ পরিমাপ করা কঠিন।
স্থানীয় জেলে আমান উল্লাহ (৫৫) বলেন, সাত–আট দিন ধরে কক্সবাজার উপকূলে তীব্র দাবদাহ চলছে। সমুদ্রের পানির লবণাক্ততার পরিমাণও বাড়ছে। তা ছাড়া চলতি এপ্রিলে বঙ্গোপসাগরে দুটি নিম্নচাপ ও একটি ঘূর্ণিঝড় হওয়ার কথা জানিয়েছে আবহাওয়া অধিদপ্তর। প্রাকৃতিক বিপর্যয় বা জাহাজের পাখার (প্রপেলার) আঘাতে তিমি মাছটির মৃত্যু হয়ে থাকতে পারে।
এর আগে ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে মেরিন ড্রাইভের দরিয়ানগর ও হিমছড়ি সৈকতে বিশাল আকৃতির দুটি মৃত তিমি ভেসে এসেছিল।