জামালপুর-৫ (সদর) আসনে সরকারি ভাতাভোগী ব্যক্তিরা আওয়ামী লীগ মনোনীত নৌকার প্রার্থী মো. আবুল কালাম আজাদের সভায় অংশ না নিলে নির্বাচনের পর ভাতার কার্ড বাতিলের হুঁশিয়ারি দিয়েছেন আওয়ামী লীগের স্থানীয় এক নেতা। গতকাল মঙ্গলবার রাতে সদর উপজেলার লক্ষ্মীরচর ইউনিয়ন নৌকা প্রতীকের পক্ষে একটি মিছিলের পর ভোটারদের উদ্দেশে ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাতেম আলী এ বক্তব্য দেন।
হাতেম আলীর দেওয়া বক্তব্যের ২ মিনিট ১০ সেকেন্ডের একটি ভিডিও আজ বুধবার সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়েছে। তাঁর এমন বক্তব্যের সমালোচনা করেছেন অনেকে। তবে ভুলবশত ওই বক্তব্য দিয়ে ফেলেছেন বলে জানিয়েছেন হাতেম আলী।
ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে হাতেম আলীকে বলতে শোনা যায়, ‘শান্তিপূর্ণভাবে নির্বাচনে অংশগ্রহণ করুন, আমাদের আপত্তি নেই। কিন্তু শান্তি যদি নষ্ট করতে চান, তাহলে বিএনপি-জামায়াতের মতো আপনাদের অবস্থান হবে। আর আমি বলতে চাই, এই ১৫ বছরে যে ভাইয়েরা, বিভিন্ন ভাতার অধীনে অন্তর্ভুক্ত হয়ে চেয়ারম্যান ও মেম্বারের মাধ্যমে ভাতা ভোগ করছেন। অতি শিগগির আমাদের চেয়ারম্যান সাহেব, আপনাদের আহ্বান করবে প্রাইমারি স্কুলের মাঠে, আপনারা স্বতঃস্ফূর্তভাবে সেদিন উপস্থিত হবেন। আর যদি উপস্থিত না হন, ভিডিও ফুটেজের মাধ্যমে আমরা নির্বাচনের পরে, যাঁরা আমাদের বিরুদ্ধে থাকবেন, সব ভাতাই চেয়ারম্যান সাহেবের উপস্থিতিতে বলছি, সকল ভাতাই কিন্তু কাটা পড়ে যাবে।’
হাতেম আলী আরও বলেন, ‘আমি আপনাদের কাছে অনুরোধ রাখছি, আওয়ামী লীগ করেন, আওয়ামী লীগ খাবেন, নৌকা মার্কার অর্থ ভোগ করবেন, সুবিধা ভোগ করবেন, আর এই ১০ দিনের জন্য লেমন জুস খাবেন অন্য দলের, এটা আমরা পাঁচ বছরের জন্য অন্য দলের লেমন জুস খেতে দেব না। ১০-২০ দিন যাঁরা লেমন জুস খাবেন, তাঁরা পাঁচ বছর লেমন জুস থেকে বঞ্চিত হবেন, কথাটা মনে রাখবেন। তাই যাঁরা স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশগ্রহণ করেছেন, ধন্যবাদ জানাই। প্রতিদিন আপনারা এই অফিসের সামনে আসবেন, মিছিল নিয়ে আসবেন। যাঁরা মিছিল নিয়ে আসবেন, নৌকার মিছিল নিয়ে এলে আপনাদের সম্মান করা হবে, আপনাদের খরচ দেওয়া হবে। আপনাদের আপ্যায়ন করা হবে।’
গতকাল রাতে উপজেলার লক্ষ্মীরচর ইউনিয়নের বারুয়ামারী এলাকায় নৌকা প্রতীকের প্রার্থী আবুল কালাম আজাদের সমর্থনে একটি মিছিল বের হয়। মিছিলটি বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে বারুয়ামারী বাজার এলাকায় ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের দলীয় কার্যালয়ের সামনে গিয়ে শেষ হয়। সেখানে লক্ষ্মীরচর ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি হাতেম আলী বক্তব্য দেন। সেখানে দলীয় নেতা-কর্মী ও সাধারণ ভোটাররা উপস্থিত ছিলেন।
বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে হাতেম আলী আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, ‘নৌকা মার্কার একটি মিছিল ছিল। মিছিল শেষে আমি বক্তব্য দিচ্ছিলাম। সেই সময় চেয়ারম্যান আমাকে বলেছিল, তিনি নৌকার পক্ষে বারুয়ামারী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে একটি সভার আহ্বান করবেন। সেখানে সবার উপস্থিত হওয়ার জন্য বলছিলাম। সেই সময় ভুলবশত ওই সব কথা বলে ফেলছি। অথচ ওই সভার তো এখনো তারিখই ঠিক হয়নি।’