ঝোপে নবজাতকের লাশ, স্ত্রীর বিরুদ্ধে চিকিৎসক স্বামীর হত্যা মামলা

কিশোরগঞ্জ জেলার মানচিত্র
কিশোরগঞ্জ জেলার মানচিত্র

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে সাত দিনের নবজাতকের লাশ উদ্ধারের ঘটনায় স্ত্রীর বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেছেন চিকিৎসক স্বামী। আজ বুধবার সকালে ভৈরব থানায় তিনি মামলাটি করেন।

এ খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেন ভৈরব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সফিকুল ইসলাম। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, নবজাতককে পাওয়া যাচ্ছে না, এমন তথ্য পুলিশকে জানানোর পর তদন্তে নামে পুলিশ। আলামত দেখে ধারণা স্পষ্ট হয়, পরিবারের কারও মাধ্যমে মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে থাকতে পারে। সবাইকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হয়। তখন নবজাতকের মা তৃষা বেগম সন্তানকে নয়তলা থেকে ফেলে দেওয়ার কথা স্বীকার করেন। তবে শুরুতে বলেছিলেন, তাঁর পাশ থেকে বাচ্চা হারিয়ে গেছে।

তৃষার স্বামী উসমান গণি বলেন, এমন কিছু ঘটতে যাচ্ছে, তা ছিল তাঁর ধারণার বাইরে।

পরিবারের সদস্যরা বলেন, সন্তান প্রসবের কিছুদিন আগে থেকে তৃষা কথা বলতেন কম। তাঁকে দেখে মনে হতো, কিছু একটা চিন্তা করছেন। সন্তান হওয়ার পর খুব বেশি ঘুমাতেন না। সারা রাত ঘরের মধ্যে হাটাহাটি করতেন।

পুলিশ ও পরিবারের সদস্যরা বলেন, তৃষা বেগম উসমান গণির দ্বিতীয় স্ত্রী। তাঁর প্রথম স্ত্রী একজন চিকিৎসক। তিনি ঢাকায় থাকেন। তৃষা একসময় নার্স হিসেবে কাজ করতেন। উসমান গণির বাড়ি ভৈরব পৌর শহরের ভৈরবপুর উত্তরপাড়ায়। সাড়ে তিন বছর আগে তিনি দ্বিতীয় বিয়ে করেন। তৃষা থাকেন ভৈরব পৌর শহরের নিউটাউন এলাকায়। উসমান গণি সপ্তাহে এক দিন শুক্রবার ভৈরবের একটি বেসকারি হাসপাতালে রোগী দেখেন। উসমান গণি-তৃষা দম্পতির দেড় বছর বয়সী আরেকটি সন্তান আছে। ভৈরবের বাসায় তৃষার সঙ্গে দুজন গৃহকর্মী ও তৃষার এক বান্ধবী থাকেন।

তৃষা বেগমের বিষয়ে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালের পরিচালক অধ্যাপক অভ্র দাশ ভৌমিকের কাছে জানতে চাওয়া হয়। তিনি বলেন, অন্তসত্ত্বা নারীর মানসিক সমস্যা দেখা দিতে পারে। এই সন্তান ক্ষতির কারণ হতে পারে, এমন ভ্রান্ত বিশ্বাস জন্ম নিতে পারে কারও কারও মনে। মানসিক স্বাস্থ্যের বড় ক্ষতি হয়ে গেলে নারীরা অতিমাত্রায় ভারসাম্যহীন হয়ে পড়েন। তখন তাঁদের মাধ্যমে মাঝেমধ্যে এমন ক্ষতিকর ঘটনা ঘটে যায়।