পরীক্ষার রুটিন প্রকাশসহ চার দফা দাবি মেনে নেওয়ার আশ্বাস পাওয়ার পর আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের গণযোগাযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের শিক্ষার্থীরা। আজ মঙ্গলবার বেলা দুইটার দিকে তাঁরা বিভাগের সভাপতি ও অফিসকক্ষের তালা খুলে দেন।
এর আগে সকাল সাড়ে আটটার দিকে চার দফা দাবিতে বিভাগের সভাপতি ও অফিসকক্ষে তালা দিয়ে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন শিক্ষার্থীরা। এ সময় ‘আটক শুধু আমরাই, অন্য বিভাগের পরীক্ষা তো বন্ধ নাই’, ‘এক বছরে এক সেমিস্টার, ধিক্কার ধিক্কার’, ‘আর নয় বাড়াবাড়ি, পরীক্ষা চাই তাড়াতাড়ি’, ‘পরীক্ষা কেন ধীরগতি, কী করছেন সভাপতি’ ইত্যাদি স্লোগান দেন শিক্ষার্থীরা।
শিক্ষার্থীদের দাবিগুলো হলো ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় বর্ষ দ্বিতীয় সেমিস্টারের আটকে থাকা কোর্সগুলোর রুটিন আজকের মধ্যে প্রকাশ; ২০২১-২২ শিক্ষাবর্ষের দ্বিতীয় বর্ষ প্রথম সেমিস্টারের ফরম পূরণের তারিখসহ রুটিন প্রকাশ; অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে একাডেমিক কার্যক্রম থেকে সাময়িক অব্যাহতি পাওয়া অধ্যাপক মুসতাক আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্তের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনকে সর্বাত্মক সহযোগিতা ও বিভাগের সহযোগিতার অগ্রগতি জানানো এবং সেশনজট নিরসনে চার মাসে সেমিস্টার শেষ করা।
অবস্থান কর্মসূচি করা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে বেলা পৌনে ১১টায় কথা বলতে আসেন বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মো. মোজাম্মেল হোসেন (বকুল), অধ্যাপক আ-আল মামুন, অধ্যাপক মশিহুর রহমান, সহযোগী অধ্যাপক শাতিল সিরাজসহ বেশ কয়েকজন শিক্ষক। তাঁরা তাৎক্ষণিকভাবে শিক্ষার্থীদের দুটি দাবি মেনে নেন।
তবে অর্থ আত্মসাৎসহ নানা অভিযোগে সাময়িক অব্যাহতি পাওয়া অধ্যাপক মুসতাক আহমেদের বিরুদ্ধে তদন্তে বিভাগ থেকে প্রশাসনকে সহযোগিতার অগ্রগতি ও চার মাসে সেমিস্টার শেষ করা নিয়ে মতানৈক্য তৈরি হয়। পরে শিক্ষার্থীদের একটি প্রতিনিধিদল নিয়ে দুপুর ১২টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক সালেহ্ হাসান নকীবের সঙ্গে আলোচনায় বসেন শিক্ষকেরা। তখন অধ্যাপক মুসতাকের বিষয়টি আজকের সিন্ডিকেটের আলোচ্যসূচি হিসেবে রাখা হয়েছে বলে জানান উপাচার্য। এ ছাড়া সেশনজট নিরসনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রস্তুতের ব্যাপারে আশ্বস্ত করেন সভাপতি। এরপর শিক্ষার্থীরা তালা খুলে দিয়ে আন্দোলন প্রত্যাহার করেন।
শিক্ষার্থীদের প্রতিনিধিদলে থাকা ২০২০-২১ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থী মীর কাদির বলেন, চারটি দাবির মধ্যে দুটি তাৎক্ষণিকভাবে মেনে নেওয়া হয়। অন্য দুটির মধ্যে অধ্যাপক মুসতাক আহমেদের বিষয়টির ব্যাপারে বিভাগ থেকে প্রশাসনকে সহায়তার প্রমাণ পেয়েছেন। সেশনজটের বিষয়টি শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনার ভিত্তিতে সিদ্ধান্ত নেওয়ার ব্যাপারে আশ্বস্ত করা হয়েছে। এ জন্য তাঁরা আন্দোলন প্রত্যাহার করেছেন।
বিভাগের সভাপতি অধ্যাপক মোজাম্মেল হোসেন প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা শিক্ষার্থীদের সব দাবি মেনে নিয়ে দুপুরের মধ্যেই উদ্ভূত পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করেছি। ইতিমধ্যে একটি ব্যাচের পরীক্ষার রুটিন ও আরেকটি ব্যাচের পরীক্ষার ফরম পূরণের তারিখ প্রকাশ করা হয়েছে। সেশনজট নিরসনে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে একাডেমিক ক্যালেন্ডার প্রস্তুত করা হবে। অন্য দাবির বিষয়ে শিক্ষার্থী প্রতিনিধিদের নিয়ে আমরা উপাচার্য স্যারের সঙ্গে কথা বলেছি। তিনি শিক্ষার্থীদের জানিয়েছেন, বিষয়টি ইতিমধ্যেই সিন্ডিকেট সভার আলোচ্যসূচির অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।’