লক্ষ্মীপুরে বন্যাদুর্গত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ শেষে চট্টগ্রামে ফেরার পথে আহত এক তরুণ চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা গেছেন। তাঁর নাম দেলোয়ার হোসেন (১৯)। গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলের দিকে ঢাকার সম্মিলিত সামরিক হাসপাতালে (সিএমএইচ) চিকিৎসাধীন অবস্থায় তাঁর মৃত্যু হয়।
দেলোয়ার হোসেন চট্টগ্রামের সাতকানিয়া উপজেলার দক্ষিণ চরতী গ্রামের মোহাম্মদ হাসানের ছেলে। তিনি সাতকানিয়ার চরতী মজিদিয়া দাখিল মাদ্রাসার দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী ছিলেন। ২১ দিন চিকিৎসাধীন থাকার পর গতকাল তাঁর মৃত্যু হয়।
দেলোয়ার হোসেনের পরিবার ও বন্ধুদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গত ২৯ আগস্ট সকালে স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন রেইনবো ফাউন্ডেশনের পক্ষ থেকে ১২ জন তরুণের একটি দল চট্টগ্রাম নগর থেকে পিকআপ ভ্যান ভাড়া করে লক্ষ্মীপুরে বন্যাদুর্গত মানুষের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে যান। ত্রাণ বিতরণ শেষে পরের দিন ভোরবেলা ওই পিকআপ ভ্যান নিয়েই চট্টগ্রামের দিকে ফিরছিলেন তাঁরা। তাঁদের পিকআপ ভ্যানটি ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কের সীতাকুণ্ডের বাঁশবাড়িয়া আরআর টেক্সটাইল মিল এলাকায় পৌঁছালে সামনে থাকা একটি গাড়িকে ধাক্কা দিয়ে সড়কের পাশের গাছে গিয়ে ধাক্কা খায়। এতে পিকআপ ভ্যানটি দুমড়েমুচড়ে গিয়ে চালক ও ১২ জন তরুণ আহত হন। পরে ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা আহত ব্যক্তিদের উদ্ধার করে প্রথমে সীতাকুণ্ড উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও পরে চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করেন। গুরুতর আহত ও সংজ্ঞাহীন অবস্থায় দেলোয়ার হোসেনকে ঢাকার সিএমএইচে স্থানান্তর করা হয়।
ত্রাণ বিতরণে অংশ নেওয়া মো. হাবিব উল্লাহ প্রথম আলোকে বলেন, চরতী ইউনিয়নের ৫ জন, বাঁশখালী উপজেলার ৬, চট্টগ্রাম নগরের আগ্রাবাদ এলাকার ১ জনসহ মোট ১২ জন তরুণ লক্ষ্মীপুর জেলায় বন্যাদুর্গতদের মধ্যে ত্রাণ বিতরণ করতে গিয়েছিলেন। দুর্ঘটনার শিকার ১০ জনের মধ্যে দেলোয়ার ও সোহেল সিকদারের অবস্থা ছিল গুরুতর। সোহেল সিকদার এখনো চট্টগ্রামের একটি বেসরকারি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। পিকআপ ভ্যানের চালক তন্দ্রার ঘোরে গাড়ির নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে ফেলায় দুর্ঘটনাটি ঘটে।
চরতী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সাবেক চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম প্রথম আলোকে বলেন, দেলোয়ার হোসেন এলাকায় মানবতাবাদী ও ভালো ছেলে হিসেবে পরিচিত ছিলেন। আজ শুক্রবার সকাল ১০টার দিকে স্থানীয় একটি মাঠে জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে তাঁকে দাফন করা হয়েছে। তাঁর মৃত্যুতে এলাকায় শোকের ছায়া নেমে এসেছে।