ময়মনসিংহ-মোহনগঞ্জ পথে চলাচলকারী একমাত্র লোকাল ট্রেন টানা ৯ দিন ধরে বন্ধ রয়েছে। আজ শনিবার পর্যন্ত ট্রেনটি চালু না হওয়ায় দুর্ভোগে পড়েছেন স্থানীয় চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার যাত্রীরা। তাঁদের অভিযোগ, বিকল্প উপায়ে সড়কপথে গন্তব্যে যেতে সময় ও খরচ দুই–ই বেশি হচ্ছে।
নেত্রকোনা রেলস্টেশন সূত্রে জানা গেছে, জেলার মোহনগঞ্জ উপজেলা থেকে ঢাকা রুটে ২১০ কিলোমিটার রেলপথ রয়েছে। এর মধ্যে মোহনগঞ্জ-ময়মনসিংহ রেলপথের দূরত্ব ৬৮ দশমিক ৫ কিলোমিটার। ওই পথে হাওর এক্সপ্রেস ও মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস নামের দুটি আন্তনগর ট্রেন চলাচল করে। এ ছাড়া একটি লোকাল ও একটি কমিউটার ট্রেনও চালু রয়েছে। লোকাল ডাউন ট্রেনটি প্রতিদিন ময়মনসিংহ স্টেশন থেকে যথাক্রমে ভোর ৫টা ৪০ এবং বেলা ২টা ১০ মিনিটে মোহনগঞ্জ স্টেশনের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। অন্যদিকে ময়মনসিংহের উদ্দেশে প্রতিদিন সকাল সাড়ে আটটা ও বিকেল সাড়ে পাঁচটায় মোহনগঞ্জ স্টেশন ছাড়ে ট্রেনটি।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, ট্রেনটিতে সরকারি-বেসরকারি বিভিন্ন দপ্তরের চাকরিজীবী, ব্যবসায়ী, শিক্ষার্থীসহ নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ যাতায়াত করেন। কিন্তু গত ৩১ মে থেকে ট্রেনটি আর আসা-যাওয়া করছে না।
ময়মনসিংহ থেকে লোকাল ট্রেনে করে নিয়মিত মোহনগঞ্জে যান সরকারি চাকরিজীবী মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, এই ট্রেনে কম খরচ ও কম সময়ের মধ্যে সহজেই কর্মস্থলে যাওয়া-আসা করা যায়। কিন্তু ৯ দিন ধরে ট্রেনটি বন্ধ থাকায় দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে।
লোকাল ট্রেনটিতে চেপে আমি প্রতিদিন সকাল সাড়ে সাতটায় নেত্রকোনা বড় স্টেশনে উঠে কর্মস্থলে যাই। সন্ধ্যায় আবার চলে আসি। কিন্তু ট্রেন বন্ধ থাকায় আমার মতো অনেকের সমস্যা হচ্ছে।হোসনা আক্তার, যাত্রী
মিজানুর রহমান আরও বলেন, অনেকেই ময়মনসিংহ স্টেশন থেকে পর্যায়ক্রমে শম্ভুগঞ্জ, বিশকা, গৌরীপুর, শ্যামগঞ্জ, হিরণপুর, চল্লিশা, নেত্রকোনার বড় স্টেশন, কোর্ট স্টেশন, ঠাকুরাকোনা, বারহাট্টা, অতিথপুর ও মোহনগঞ্জে সুবিধামতো যাওয়া-আসা করতে পারেন। ট্রেনটি বন্ধ থাকায় যাত্রীদের দুর্ভোগ বেড়েছে।
হোসনা আক্তার নামের আরেক যাত্রী প্রথম আলোকে বলেন, ‘লোকাল ট্রেনটিতে চেপে আমি প্রতিদিন সকাল সাড়ে সাতটায় নেত্রকোনা বড় স্টেশনে উঠে কর্মস্থলে যাই। সন্ধ্যায় আবার চলে আসি। কিন্তু ট্রেন বন্ধ থাকায় আমার মতো অনেকের সমস্যা হচ্ছে। ট্রেন বন্ধ থাকার বিষয়টি জানা না থাকায় অনেক যাত্রীই স্টেশনে এসে দুর্ভোগে পড়ছেন। দ্রুততম সময়ের মধ্যে লোকাল ট্রেনটি চালুর দাবি জানাচ্ছি।’
মোহনগঞ্জ রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার আতাউর রহমান বলেন, লোকাল ট্রেনটি সর্বশেষ ৩১ মে সকালে মোহনগঞ্জ এসেছিল। এরপর আর আসেনি। ইঞ্জিনে সমস্যা হওয়ায় ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। ইঞ্জিনটি মেরামতের জন্য চট্টগ্রাম পাঠানো হয়েছে। ইঞ্জিন মেরামত সম্পন্ন হলে আবার চালু হবে। তবে কবে নাগাদ ইঞ্জিন মেরামত শেষ হবে, তা তিনি জানাতে পারেননি।
নেত্রকোনার স্টেশনমাস্টার আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, ইঞ্জিনের সমস্যা দূর হয়ে ঈদের আগেই লোকাল ট্রেনটি চালু হবে বলে আশা করা হচ্ছে।