নড়িয়ায় ফল ঘোষণার পর সংঘর্ষে অধ্যক্ষ আহত, প্রতিবাদে মানববন্ধন

শরীয়তপুরের নড়িয়ার ডগ্রি ইসমাইল হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষকে মারধর করার প্রতিবাদে শিক্ষার্থীরা বিক্ষোভ ও মানববন্ধন করে । ডগ্রি এলাকায় বৃহস্পতিবার দুপুরে
ছবি: প্রথম আলো

শরীয়তপুরের নড়িয়া উপজেলা পরিষদ নির্বাচনে ফলাফল ঘোষণার পর দুই পক্ষের সংঘর্ষের সময় গত বুধবার রাতে নশাসন ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ও ডগ্রি ইসমাইল হোসেন স্কুল অ্যান্ড কলেজের অধ্যক্ষ দেলোয়ার হোসেন তালুকদার আহত হন। তাঁর ওপর হামলার প্রতিবাদে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা মানববন্ধন করেছেন।

বৃহস্পতিবার দুপুরে ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কে ডগ্রি বাজার এলাকায় এ কর্মসূচি পালন করা হয়েছে।  এতে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও স্থানীয় লোকজন অংশ নেন। দেলোয়ার হোসেন তালুকদার ঢাকার একটি বেসরকারি হাসপাতালে নিবিড় পরিচর্যা কেন্দ্রে (আইসিইউ) চিকিৎসাধীন।

নড়িয়া থানা ও স্থানীয় সূত্র জানায়, বুধবার নড়িয়া উপজেলা পরিষদের নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। এতে বিজয়ী হয়েছেন জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ইসমাইল হক। আর পরাজিত হন নড়িয়া সরকারি কলেজের সাবেক ভিপি মামুন মোস্তফা। মামুন মোস্তফাকে নশাসন ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন তালুকদার ও ১ নম্বর ওয়ার্ড সদস্য কাদের মুন্সি সমর্থন করেন। আর বিঝারী উপসী তারা প্রসন্ন উচ্চবিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক নুরুল আমীন, লিটন হাওলাদার, মাহাবুব ফকির, নুরুজ্জামান হাওলাদারসহ তাঁদের স্বজনেরা ইসমাইল হকের পক্ষ নেন।

বুধবার ফলাফল ঘোষণার পর নুরুল আমীন, লিটন হাওলাদার, মাহাবুব ফকির ও নুরুজ্জামান হাওলাদারের নেতৃত্বে ডগ্রি বাজারে বিজয় মিছিল বের করা হয়। ওই মিছিল থেকে ইউপি চেয়ারম্যান দেলোয়ার হোসেন তালুকদারের বাসভবন ও বিপণিবিতানে হামলা করা হয়। তখন দেলোয়ারকেও মারধর করা হয়। পরে দুই পক্ষের মধ্যে সংঘর্ষ হয়। এতে দেলোয়ার হোসেন তালুকদারসহ দুই পক্ষের ১৩ জন আহত হন।

পরে রাতে দেলোয়ারের সমর্থকেরা ডগ্রি মাদবর কান্দিতে মাদবর বাড়িতে হামলা করেন। সেখান থেকে ১০টি বসতঘর ভাঙচুর ও ৮–১০টি গবাদিপশু নিয়ে যান। দুটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়েছে। এ সময় দুই বৃদ্ধাকে মারধর করা হয়।

দেলোয়ার হোসেনকে মারধর করার প্রতিবাদে দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে ডগ্রি এলাকায় ঢাকা-শরীয়তপুর সড়কে মানববন্ধন করেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও এলাকার লোকজন। শিক্ষক বিজয় কুমার মণ্ডল বলেন, ‘আমাদের অধ্যক্ষের ওপর সন্ত্রাসী হামলা হয়েছে। তিনি ঢাকায় একটি হাসপাতালের আইসিইউতে চিকিৎসাধীন। আমরা ওই হামলার নিন্দা জানাই। আর অপরাধী ব্যক্তিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি করছি।’

এ বিষয়ে নুরুল আমীনের মুঠোফোন নম্বরে ফোন করা হলে তাঁর স্ত্রী জামশেদা আক্তার ফোন ধরেন। তিনি বলেন, বুধবার রাতেই পুলিশ তাঁকে (নুরুল আমীনকে) আটক করে থানায় নিয়ে গেছে।

নড়িয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, ডগ্রির ঘটনায় একজন ইউপি চেয়ারম্যান আহত হয়েছেন। তাঁরা আইনগত পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য কয়েকজনকে আটক করেছেন। এ বিষয়ে মামলা প্রক্রিয়াধীন।