মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের আড়িয়াল বিল সম্পর্কিত উপস্থাপনা ও ব্রিফিংয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান
মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগরের আড়িয়াল বিল সম্পর্কিত উপস্থাপনা ও ব্রিফিংয়ে অনুষ্ঠানে বক্তব্য দিচ্ছেন উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

‘আড়িয়ল বিল কারা ভরাট করছে, সেটি পুলিশ–প্রশাসন জানে না, এটা হতে পারে না’

‘মাঠ পর্যায়ে কাজ করতে (অভিযানে) এলেই খননযন্ত্রগুলো (ড্রেজার) উধাও হয়ে যায়। পরে আবার ফিরে আসে। এখানে জেলা প্রশাসন, উপজেলা প্রশাসন বলতে কিছু শব্দ আছে। প্রশাসনের কাজটা কী? খননযন্ত্র দিয়ে আড়িয়ল বিলে কারা মাটি ভরাট করছে, সেটি পুলিশ, উপজেলা প্রশাসন, জেলা প্রশাসন জানে না, এটা হতে পারে না।’

আজ সোমবার দুপুরে মুন্সিগঞ্জের শ্রীনগর উপজেলা প্রশাসনের আয়োজনে পরিষদের মিলনায়তনে আড়িয়ল বিল–সম্পর্কিত উপস্থাপনা ও ব্রিফিংয়ে এসব কথা বলেন অন্তর্বর্তী সরকারের পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ সময় তিনি মুন্সিগঞ্জ জেলা প্রশাসক মো. আবুজাফর রিপনের উদ্দেশে বলেন, ‘ড্রেজার যেন আড়িয়ল বিলে আর না আসে আপনি সেই ব্যবস্থা গ্রহণ করবেন, নিয়মিত তদারক করবেন।’ এ ছাড়া ডিসিকে ২০ দিন পরপর প্রতিবেদন জমা দেওয়ারও নির্দেশ দেন তিনি।

সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, ‘পলি পড়ে পদ্মার প্রবাহ কমে গিয়ে এই অঞ্চলের খালগুলো সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়ে গেছে। কিন্তু যখন খাল খননের কথা বলব, তখনই আপনারা হাজার কোটি টাকার প্রকল্প দেবেন। হাজার কোটি টাকা এ মুহূর্তে আমাদের হাতে নেই। আমরা দিতে পারছি না।’ কাজের বিনিময়ে খাদ্য কর্মসূচি ও স্থানীয় স্বেচ্ছাসেবীদের সমন্বয়ে খাল খননের উদ্যোগ গ্রহণের পরামর্শ দেন তিনি।

আড়িয়ল বিলে কোনো আবাসন বা শিল্পপ্রতিষ্ঠান হবে না বলেও জানান সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান। এ ছাড়া ব্রিফিংয়ে প্রশাসনের অনুমোদনবিহীন ও পরিবেশ ছাড়পত্রবিহীন ইটভাটাগুলো তিনি ভেঙে দেওয়ার নির্দেশ দেন জেলা প্রশাসনকে।
আড়িয়ল বিল–সম্পর্কিত উপস্থাপনা ও ব্রিফিংয়ে অন্তর্বর্তী সরকারের শিল্প, গৃহায়ণ ও গণপূর্ত উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান এ সভায় উপস্থিত ছিলেন। এ ছাড়া বাংলাদেশ পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মহাপরিচালক আমিরুল হক ভূঁইয়া, পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সচিব নাজমুল আহসান, জেলা প্রশাসক মো. আবুজাফর রিপন, পুলিশ সুপার মুহম্মদ শামসুল আলম সরকার প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।

উপদেষ্টা আদিলুর রহমান খান বলেন, ‘যে আন্দোলনের মাধ্যমে পরিবর্তনটা এসেছে, সে পরিবর্তন যেন স্বাভাবিকভাবেই থাকে। যেন বাংলাদেশের মানুষ এই অবৈধ ভূমি দস্যুদের আক্রমণ ও বালু ফেলে জমি দখল করে নেওয়া থেকে পরিপূর্ণভাবে মুক্ত হতে পারে। আমরা এটি শুরু করে দিয়ে যেতে চাই।’

এ সময় সরকারের এই দুই উপদেষ্টা আড়িয়ল বিল রক্ষার জন্য প্রশাসনসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের নানা পদক্ষেপ নেওয়ার নির্দেশনা দেন।