খুলনা সিটি নির্বাচন

বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে মনে হয়েছে ২০–২২ শতাংশ ভোট পড়েছে: স্বতন্ত্র প্রার্থী

খুলনা প্রেসক্লাবের হুমায়ুন কবির বালু মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলনে বক্তব্য দেন স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমান
ছবি: প্রথম আলো

খুলনা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে মোট ভোটার ছিলেন ৫ লাখ ৩৫ হাজার ৫২৯ জন। নির্বাচন কমিশনের তথ্য অনুযায়ী, ২ লাখ ৫৬ হাজার ৪৩৩ জন ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। এই হিসাবে প্রায় ৪৯ শতাংশ ভোট পড়েছে। তবে নির্বাচনে মেয়র পদে অংশ নেওয়া স্বতন্ত্র প্রার্থী এস এম শফিকুর রহমানের দাবি, সর্বোচ্চ ভোট পড়েছে ২২ শতাংশ।

খুলনা প্রেসক্লাবে নির্বাচনের সার্বিক বিষয় নিয়ে আজ মঙ্গলবার দুপুরে সংবাদ সম্মেলন করেন শফিকুর রহমান। এ সময় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘নির্বাচনে পারসেনটেনসই খুঁজে পাচ্ছি না, সেখানে প্রায় ৪৯ শতাংশ ভোট হলো কীভাবে? কে ভোট দিল, কখন ভোট দিল, তা বুঝতে পারছি না। বিভিন্ন কেন্দ্র ঘুরে মনে হয়েছে ২০ থেকে ২২ শতাংশ ভোট পড়েছে।’

ইভিএম যন্ত্রের মাধ্যমে কারচুপি হয়েছে, অভিযোগ করে শফিকুর রহমান করেন, ‘মানুষ ভোট দিয়েছে একদিকে, চলে যাচ্ছে আরেক দিকে। ভোটাররা তাঁর টেবিলঘড়ি প্রতীকে ভোট দিলেও চলে গেছে অন্য প্রতীকে। এসব কথা ভোটারদের মাধ্যমে তিনি জানতে পেরেছেন। ভোট কারচুপির প্রমাণ আছে কি না, জানতে চাইলে শফিকুর রহমান বলেন, ‘অনেক কিছু প্রমাণ করা যায় না।’

শফিকুর রহমান ২০১৮ সালের সিটি করপোরেশন নির্বাচনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। ওই সময় তিনি ভোট পেয়েছিলেন ১ হাজার ৭২টি। এবার স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে টেবিলঘড়ি প্রতীক নিয়ে ভোট পেয়েছেন ১৭ হাজার ২১৮টি। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি ছিলাম জনগণের মেয়র প্রার্থী। খুলনাবাসীর যৌক্তিক দাবির পক্ষে ছিল আমার অবস্থান। এ কারণে মানুষ আমাকে ভালোবেসে ভোট দিয়েছেন।’

ইভিএম নিয়ে শফিকুর রহমান লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘নির্বাচনে ব্যবহৃত হয়েছে বহুল আলোচিত ইভিএম। নির্বাচনের আগে এ সম্পর্কে আমার ধারণা ছিল না। কারণ, নির্বাচন কমিশন বারবার আশ্বস্ত করায় আমি বিশ্বাস করেছিলাম। কিন্তু নির্বাচনে দেখলাম এটি একটি ম্যান মেইড মেশিন। যার কন্ট্রোল মানুষের হাতে ও প্রযুক্তিবিদদের কমান্ডে চলে। সফটওয়্যারে যেভাবে কমান্ড থাকবে, সেভাবেই কাজ করবে। কিন্তু সেই কমান্ড নির্ধারণের মানুষগুলোর সততা নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। তাঁরা যে কমান্ড রেখেছিলেন, সে অনুযায়ী ভোট হয়েছে এবং ভোটারদের আশা-আকাঙ্ক্ষা পূরণ হয়নি। ইভিএমের মাধ্যমে ভোটারদের ধোঁকা দেওয়া হয়েছে। এ কারণে এই নির্বাচনে ভোটারদের ইচ্ছার প্রতিফলন ঘটেনি। ভোটের ফলাফল ডিজিটাল কায়দায় জালিয়াতি হয়ে গেছে।’

শফিকুর রহমান বলেন, ‘আমার কাছে জয়-পরাজয় বড় কথা নয়। যেটি সত্য, সেটি মেনে নিতে প্রস্তুত। আমি আজীবন খুলনাবাসীর জন্য কাজ করতে চাই। তাই একটি সামাজিক প্ল্যাটফর্ম করতে যাচ্ছি। যার মাধ্যমে আমার সীমিত সাধ্যের মাধ্যমে খুলনাবাসীকে সঙ্গে নিয়ে আগামীতে নাগরিক দাবি আদায়, খুলনার সার্বিক উন্নয়ন এবং সমস্যাগুলো সমাধানের চেষ্টা করতে চাই।’