জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ আহমদকে পুলিশে সোপর্দ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা
জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের অধ্যাপক ফরিদ আহমদকে পুলিশে সোপর্দ করেন জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আটক হওয়া জাহাঙ্গীরনগরের সেই অধ্যাপক গ্রেপ্তার

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন চলাকালে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর ছাত্রলীগ ও পুলিশি হামলার মদদ দেওয়ার অভিযোগে করা মামলায় এক অধ্যাপককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গ্রেপ্তার অধ্যাপক ফরিদ আহমদ বিশ্ববিদ্যালয়ের দর্শন বিভাগের শিক্ষক।

গতকাল বৃহস্পতিবার জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী অধ্যাপক ফরিদ আহমদকে আটক করে ঢাকা মহানগর পুলিশের কোতোয়ালি থানা–পুলিশে সোপর্দ করেন। পরে আজ শুক্রবার তাঁর বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাঁকে আদালতে নেওয়া হয়।

বিষয়টি নিশ্চিত করে আশুলিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবু বকর সিদ্দিক প্রথম আলোকে বলেন, জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের এক শিক্ষার্থীর করা মামলায় অধ্যাপক ফরিদকে গ্রেপ্তার করে আজ বেলা ১১টার দিকে আদালতে নেওয়া হয়।

আশুলিয়া থানার পরিদর্শক (তদন্ত) কামাল হোসেন আজ রাতে প্রথম আলোকে বলেন, আসামিকে আদালতে হাজির করে তাঁকে জিজ্ঞাসাবাদের জন্য পাঁচ দিনের রিমান্ড চাওয়া হয়। তবে আদালত তা নামঞ্জুর করে আসামিকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন। পরে তাঁকে কেরাণীগঞ্জ কারাগারে পাঠানো হয়।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ওপর গত ১৫ জুলাই ছাত্রলীগ-বহিরাগত সন্ত্রাসী ও পুলিশ হামলা করে। এ ঘটনায় গত ২৯ সেপ্টেম্বর বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের শিক্ষার্থী সাজ্জাদুল ইসলাম আশুলিয়া থানায় একটি মামলা করেন। ওই মামলায় বিশ্ববিদ্যালয়ের সাবেক দুজন উপাচার্য, প্রক্টরসহ ১৪ জনের নাম উল্লেখ করে অজ্ঞাতসহ মোট ২১৪ জনকে আসামি করা হয়। অধ্যাপক ফরিদকে ৮ নম্বর আসামি করা হয়।

মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৫ জুলাই উপাচার্যের বাসভবনে অবস্থান নেন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। একপর্যায়ে মধ্যরাতে ছাত্রলীগ ও বহিরাগত সন্ত্রাসীরা মিলে আন্দোলনকারীদের ওপর হামলা চালান। হামলায় উপাচার্যের বাসভবনের ফটকের সামনে দাঁড়িয়ে অধ্যাপক ফরিদসহ কয়েকজন হামলাকারীদের নির্দেশনা দেন।

বিশ্ববিদ্যালয়ের কয়েকজন শিক্ষার্থী বলেন, আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীদের ওপর ঘটে যাওয়া ছাত্রলীগ ও পুলিশি হামলার অন্যতম মদদদাতা ছিলেন অধ্যাপক ফরিদ। এসব অভিযোগে গত ১৮ আগস্ট ফরিদ আহমদকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে তাঁর পদত্যাগের দাবিতে বিক্ষোভ করেন তাঁর নিজের দর্শন বিভাগের শিক্ষার্থীরা।

এ ছাড়া আন্দোলন চলাকালে ১৭ জুলাই বিশ্ববিদ্যালয়ের আওয়ামীপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপের একটি চ্যাটবক্স ফাঁস হয়। চ্যাটবক্স বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের লোকপ্রশাসন বিভাগের অধ্যাপক জেবুন্নেসার লেখা ‘আমাদের এতগুলো শিক্ষক আহত হয়েছেন। আমরা না খেয়ে আছি। আমাদের খবর কাউকে নিতে দেখিনি।’ এই মেসেজের প্রত্যুত্তরে অধ্যাপক ফরিদ শিক্ষার্থীদের ‘রাজাকার’ আখ্যায়িত করে বলেন, ‘আর একটু অপেক্ষা করুন। রাজাকারদের পরাজয় সমাসন্ন। আপনাদের কষ্টের বিনিময়ে দেশ আগামী দিনে শুদ্ধ ধারায় এগিয়ে যাবে। জয় বাংলা, জয় বঙ্গবন্ধু।’