লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে দুই বাংলাদেশি নিহত হয়েছেন। আজ বৃহস্পতিবার ভোররাতে উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের দোলাপাড়া সীমান্তের ওপারে ভারতের বড় মধুসূদন গ্রামে এ ঘটনা ঘটেছে। এ সময় আরও এক বাংলাদেশি তরুণ গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। ফকিরপাড়া ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান ফজলার রহমান প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন।
নিহত ব্যক্তিরা হলেন উপজেলার ফকিরপাড়া ইউনিয়নের পূর্ব ফকিরপাড়া গ্রামের আবদুর সামাদের ছেলে নাজির হোসেন ওরফে মংলু (৪০) ও একই উপজেলার বড়খাতা ইউনিয়নের দোলাপাড়া গ্রামের হাফিজার রহমানের ছেলে সাদিক হোসেন (২৩)। গুলিবিদ্ধ অন্যজন হলেন পূর্ব ফকিরপাড়া গ্রামের আবুল হোসেনের ছেলে সাজু হোসেন (২৫)। তিনি বর্তমানে রংপুরের বেসরকারি একটি হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
বিজিবি ও স্থানীয় লোকজনের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল বুধবার দিবাগত রাতে দোলাপাড়া সীমান্ত দিয়ে নাজির হোসেন, সাদিক হোসেনসহ ১০ থেকে ১২ জনের একটি দল ভারতের বড় মধুসূদন গ্রাম থেকে অবৈধ পথে গরু আনতে যায়। ভোররাতের দিকে তাঁরা গরু নিয়ে ফেরার সময় সীমান্তের ৮৮৮ মেইন পিলারের কাছে এসে ভারতের বড় মধুসূদন বিএসএফ ক্যাম্পের টহল দলের সদস্যদের মুখোমুখি হন। এ সময় বিএসএফ সদস্যরা তাঁদের লক্ষ্য করে গুলি ছুড়লে ভারতের ভেতরে শূন্যরেখায় নাজির হোসেন, সাদিক হোসেন ও সাজু হোসেন গুলিবিদ্ধ হন। এতে ঘটনাস্থলে নাজির ও সাদিক নিহত হন। পরে তাঁদের সঙ্গীরা গুলিবিদ্ধ সাজু ও নিহত দুজনের লাশ উদ্ধার করে বাড়িতে নিয়ে আসেন।
বড়খাতা ইউপির সদস্য হাফিজুল ইসলাম বলেন, গভীর রাতে ভারত থেকে গরু আনতে গিয়ে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি দুই নাগরিক নিহত হয়েছেন। লাশ দুটি নিহত দুজনের বাড়িতে আছে।
রংপুর ৬১ বিজিবি (তিস্তা-২) ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কর্নেল মীর হাসান শাহরিয়ার মাহমুদ সাংবাদিকদের বলেন, সীমান্তে দুটি লাশ পাওয়া গেছে। বিষয়টি নিয়ে অনুসন্ধান চলছে। পুলিশকে খবর দেওয়া হয়েছে। পুলিশ লাশ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মর্গে পাঠাবে। ওই দুই ব্যক্তি কীভাবে নিহত হয়েছেন, সেটা বিএসএফের কাছে জানতে চাওয়া হবে। এ ছাড়া পতাকা বৈঠকের জন্য বিএসএফকে চিঠি দেওয়া হয়েছে।
আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে হাতীবান্ধা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা শাহ আলম বলেন, ঘটনাস্থলে এক পুলিশ কর্মকর্তাকে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে এ বিষয়ে বিস্তারিত জানানো হবে।