খুলনায় সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, সাবেক স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালসহ ৮৫ জনের নামে হত্যা মামলা হয়েছে। এতে আরও ৪০০ জনকে অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে। ২০২২ সালে বিএনপির এক কর্মীকে হত্যার ঘটনায় আজ বৃহস্পতিবার বিকেলে ফুলতলা থানায় মামলাটি করেছেন খুলনা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব এস এম মনিরুল হাসান।
বিষয়টি নিশ্চিত করে ফুলতলা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. হানিফ বলেন, মনিরুল হাসান বাদী হয়ে হত্যা মামলা করেছেন। বিষয়টি ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সঙ্গে আলোচনা করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মামলার অন্য আসামিদের মধ্যে রয়েছেন শেখ হাসিনার চাচাতো ভাই বাগেরহাট-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ হেলাল উদ্দিন ও খুলনা-২ আসনের সংসদ সদস্য শেখ সালাহউদ্দিন জুয়েল, আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য এস এম কামাল হোসেন, সাবেক সংসদ সদস্য বেগম মন্নুজান সুফিয়ান, সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সালাম মুর্শেদী, শেখ হেলালের ভাই শেখ সোহেল উদ্দিন, শেখ রুবেল, শেখ বেলাল উদ্দিন বাবু, খুলনা মহানগর আওয়ামী লীগের সভাপতি ও খুলনা সিটি করপোরেশনের মেয়র তালুকদার আবদুল খালেক, সাধারণ সম্পাদক এম ডি বাবুল রানা, খুলনা জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হারুনুর রশীদ, সাধারণ সম্পাদক সুজিত কুমার অধিকারী প্রমুখ।
এজাহারে বলা হয়েছে, ২০২২ সালের ২২ অক্টোবর খুলনা নগরের ডাকবাংলার মোড়ে সোনালী ব্যাংক চত্বরে রাস্তার ওপর বিএনপির বিভাগীয় সমাবেশ হয়। সমাবেশে যোগ দিতে ফুলতলা উপজেলা বিএনপির প্রায় দুই হাজার নেতা-কর্মী সড়কপথে রওনা হলে শেখ হাসিনার নির্দেশে আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা বাধা দেন। পরে বিএনপির নেতা-কর্মীরা বিকল্প হিসেবে নদীপথে ১০টি ট্রলার ভাড়া করে ফুলতলার শিকিড়হাট থেকে খুলনার উদ্দেশে রওনা হন। তাঁরা দিঘলিয়া থানা এলাকার চন্দনীমহল কাটাবনে পৌঁছালে শটগান, কাটারাইফেল, বন্দুক, রামদা, চায়নিজ কুড়াল, রড, লোহার পাইপ, চাপাতি, বোমা ও লাঠি নিয়ে তাঁদের ওপর হামলা করে মাথা ফাটিয়ে হাত-পা ভেঙে দেন আসামিরা। ওই হামলায় গুরুতর আহত হন ফুলতলা ইউনিয়ন বিএনপির ২ নম্বর ওয়ার্ডের সদস্য শেখ সাজ্জাদুজ্জামান। তখন তাঁকে ফুলতলা উপজেলায় চিকিৎসাও নিতে দেননি আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের নেতা-কর্মীরা। এক মাস পর ২৪ নভেম্বর ফুলতলার পায়গ্রাম কসবা গ্রামে একটি ওষুধের দোকানে সাজ্জাদুজ্জামান চিকিৎসক দেখাতে গেলে পুনরায় তাঁর ওপর হামলা করা হয়। ওই সময় আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীরা তাঁকে ব্যাপক মারধর করেন। এতে ঘটনাস্থলেই মারা যান সাজ্জাদুজ্জামান।
মামলার বাদী ও খুলনা জেলা বিএনপির সদস্যসচিব মনিরুল হাসান প্রথম আলোকে বলেন, ওই সময় ফুলতলা থানায় মামলা করতে গেলে মামলা নেওয়া হয়নি। এ কারণে আজ তিনি মামলা করেছেন।