রূপসী বাংলার কবি জীবনানন্দ দাশের ৭০তম প্রয়াণদিবসে কবিকে তাঁর জন্ম শহর বরিশালের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ শ্রদ্ধা ও ভালোবাসায় স্মরণ করেছেন। এ উপলক্ষে আজ মঙ্গলবার সকালে বরিশালের কবি ও সংস্কৃতিকর্মীরা তাঁর প্রতিকৃতিতে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা জানান। আয়োজন করেন আলোচনা সভা ও নানা অনুষ্ঠানের।
নগরের কবি জীবনানন্দ দাশ (বগুড়া রোড) সড়কে কবির পৈতৃক ভিটার একাংশে নির্মিত কবি জীবনানন্দ দাশ স্মৃতি মিলনায়তন ও গ্রন্থাগারে আজ সকালে আলোচনা সভার আয়োজন করা হয়। জাতীয় কবিতা পরিষদ ও প্রগতি লেখক সংঘ যৌথভাবে এই স্মরণ অনুষ্ঠানের আয়োজন করে। আলোচনা সভায় বক্তারা কবির পৈতৃক ভিটা উদ্ধার করে, সেখানে কবির নামে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট নির্মাণের দাবি জানিয়েছেন।
১৯৫৪ সালের ১৪ অক্টোবর কলকাতার বালিগঞ্জে ট্রামের ধাক্কায় আহত হন জীবনানন্দ দাশ। এরপর হাসপাতালে মৃত্যুর সঙ্গে লড়াই করে ২২ অক্টোবর পাড়ি দিয়েছিলেন অনন্তলোকে। কিছু শেষ, কিছু অসমাপ্ত আর বেশির ভাগ অপ্রকাশিত রেখে জীবনানন্দ দাশ মৃত্যুর মধ্য দিয়ে তাঁর শিল্পপ্রচেষ্টার যবনিকা টেনেছিলেন। এ কারণে এখনো প্রতিনিয়ত তিনি নতুন করে প্রকাশ হচ্ছেন।
আলোচনা সভায় কবি আসমা চৌধুরী বলেন, বাংলা ভাষার প্রবাদপ্রতিম কবি জীবনানন্দ দাশের জন্ম হয়েছিল বরিশালে। এখানেই তিনি বেড়ে উঠেছেন, শৈশব, কৈশোর, যৌবনের বড় একটা অংশ অতিবাহিত করেছেন। পেশাগত জীবনও কেটেছে বেশ কিছুটা সময়। তাঁর সৃষ্টিকর্মের এক বিশাল অংশজুড়ে আছে বরিশালের প্রকৃতি ও সৌন্দর্য। তিনি বলেন, ‘কবির পৈতৃক ভিটা ছিল নগরের আজকের জীবনানন্দ দাশ সড়কের এই সর্বানন্দ ভবন। আমরা দাবি জানাচ্ছি, সর্বানন্দ ভবন ঘিরেই কবির নামে শিক্ষা ও গবেষণার জন্য একটি বড় প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলার।’
অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, কবির বাবা সত্যানন্দ দাশ ছিলেন বরিশাল ব্রজমোহন স্কুলের ইংরেজি বিষয়ের শিক্ষক। কবি নিজেও ব্রজমোহন কলেজে ১৯৪৬ সাল পর্যন্ত ইংরেজি ভাষার শিক্ষক ছিলেন। বরিশালের প্রকৃতি ঘিরেই কবির অজস্র রচনা ও সাহিত্যকর্ম দেখা যায়। এ জন্য কবির এই সাহিত্যকর্মের গবেষণা, স্মৃতি সংরক্ষণ করা সবার দায়িত্ব। তাঁরা বলেন, কবির পৈতৃক বাড়ির অনেকাংশ বেদখল হয়েছে। এটি উদ্ধার করে এখানে শিক্ষা ও গবেষণা ইনস্টিটিউট প্রতিষ্ঠার দাবি জানান তাঁরা।
জাতীয় কবিতা পরিষদ, বরিশালের সভাপতি কবি তপঙ্কর চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন কাজী সেলিনা, হাসিনা বেগম, অপূর্ব গৌতম, সুভাষ চন্দ্র দাস, শোভন কর্মকার, পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় প্রমুখ।