কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়ে লাপাত্তা ছাত্রলীগ নেতা 

শান্ত সাতজনের কাছ থেকে ১ কোটি ৯ লাখ টাকা ধার নিয়েছেন। শনিবার থেকে তাঁর খোঁজ পাওয়া যাচ্ছে না। 

শান্ত কুমার রায়

ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা ছাত্রলীগের সাংগঠনিক সম্পাদক শান্ত কুমার রায় নবীনগর উপজেলার কয়েকজন তরুণ ও ব্যবসায়ীর কোটি টাকা নিয়ে আত্মগোপন করেছেন বলে অভিযোগ উঠেছে। ভুক্তভোগী সাতজন পৃথকভাবে গত মঙ্গলবার রাতে নবীনগর থানায় ওই ছাত্রলীগ নেতার বিরুদ্ধে প্রতারণার অভিযোগে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

শান্ত কুমার রায় (২৮) নবীনগর উপজেলার বড়িকান্দি ইউনিয়নের থোল্লাকান্দি গ্রামের নির্মল রায়ের ছেলে। শান্ত বাংলাদেশ ছাত্রলীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সাবেক উপসমাজসেবা সম্পাদক ছিলেন। অভিযোগে শান্তর বাবা নির্মল রায়ের নামও উল্লেখ করা হয়। গত শনিবার রাত থেকে আত্মগোপনে আছেন শান্ত। 

অভিযোগকারীরা হলেন সলিমগঞ্জ ইউনিয়নের বাড়াইল গ্রামের শ্যামল চন্দ্র দাস, হক সাব, আব্বাস উদ্দিন, সুজন মিয়া ও অক্লান্ত দেবনাথ, নিখলী গ্রামের খোরশেদ আলম এবং বড়িকান্দি গ্রামের ছগির আহমেদ। তাঁরা সবাই পৃথকভাবে নবীনগর থানায় লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। 

শ্যামল চন্দ্র দাস বলেন, চট্টগ্রামের বাবার স্বর্ণের ব্যবসা রয়েছে এবং স্বর্ণের ব্যবসা বাড়ানোর কথা বলে তাঁর কাছ থেকে ১৬ ফেব্রুয়ারি ৮ লাখ ৯০ হাজার টাকা ধার নেন শান্ত। দু-তিন দিনের মধ্যে টাকা ফিরিয়ে দেওয়ার অঙ্গীকার করেন শান্ত। টাকা নেওয়ার পর শ্যামল যোগাযোগ করলে টালবাহানা শুরু করেন শান্ত। একপর্যায়ে শান্ত সব ধরনের যোগাযোগ বন্ধ করে দেন।

লিখিত অভিযোগ সূত্রে আরও জানা যায়, গত বছরের ১৬ জুলাই সন্ধ্যা সাতটার দিকে শান্তকে ১২ লাখ টাকা ধার দেন ছগির। গত বছরের সেপ্টেম্বর মাসে হক সাবের কাছ থেকে ৪০ লাখ টাকা ধার নেন শান্ত। তিন মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধের অঙ্গীকার করেন শান্ত। গত ২১ নভেম্বর দুই মাসের মধ্যে টাকা পরিশোধের অঙ্গীকার করে আব্বাস উদ্দিনের কাছ থেকে ২০ লাখ ৬০ হাজার টাকা ধার নেন শান্ত। কারও টাকাই শোধ করতে পারেননি।

ভুক্তভোগীরা বলেন, তাঁরা কয়েকজন হিসাব করে দেখেছেন শান্ত তাঁদের সাতজনের কাছ থেকে ১ কোটি ৯ লাখের মতো টাকা ধার নিয়েছেন। তিন থেকে চার দিন আগে শান্ত ও তাঁর বাবা স্বেচ্ছায় আত্মগোপনে চলে যান। 

স্থানীয় লোকজন বলেন, গত শনিবার ও রোববার অনেককে টাকা পরিশোধের কথা ছিল। কিন্তু তাঁরা লাপাত্তা। এদিকে মাস দেড়েক আগে গ্রামের সব সম্পত্তি বিক্রি করে দেন বাবা-ছেলে।

একাধিকবার চেষ্টা করেও তিনটি মুঠোফোন বন্ধ পাওয়ায় শান্তর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি।

জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি রবিউল হোসেন বলেন, ‘অভিযোগ প্রমাণ সাপেক্ষে তাঁর বিরুদ্ধে সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’

নবীনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) সাইফুউদ্দিন আনোয়ার বলেন, মঙ্গলবার রাতে কয়েকজন লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন। পুলিশ বিষয়টি তদন্ত করছে।