হাতের অস্ত্রোপচার করাতে গিয়ে কিডনি অপসারণের অভিযোগ তদন্তে কমিটি

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল
ছবি: সংগৃহীত

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে এক রোগীর হাতের হাড়ভাঙার অস্ত্রোপচার করাতে গিয়ে কিডনি অপসারণের অভিযোগ তদন্তে আদালতের নির্দেশে কমিটি গঠন করা হয়েছে।

হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ শনিবার পাঁচ সদস্যের এ তদন্ত কমিটি গঠন করে। কমিটির প্রধান করা হয়েছে ওসমানী মেডিকেল কলেজের মেডিসিন বিভাগের প্রধান হিজবুল্লাহ জীবনকে। কমিটিকে তিন কর্মদিবসের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

সিলেট এম এ জি ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের উপপরিচালক সৌমিত্র চক্রবর্তী প্রথম আলোকে বলেন, কমিটি আজ (রোববার) তদন্তকাজ শুরু করেছে। আগামী তিন কর্মদিবসের মধ্যে হাসপাতালের পরিচালকের কাছে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা রয়েছে।

এর আগে গত বুধবার সিলেটের চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলার আবেদন করেন কানাইঘাটের ফতেহগঞ্জের বাসিন্দা খছরু মিয়া। আদালত আবেদনটি আমলে নিয়ে সিলেট কোতোয়ালি থানার পুলিশকে অভিযোগটি এজাহার হিসেবে নিয়ে তদন্তের নির্দেশ দেন।

মামলার আবেদনে উল্লেখ করা হয়, হাসপাতালে বাঁ হাতের অস্ত্রোপচারের সময় তাঁর বাঁ দিকের কিডনি অপসারণ করে নেওয়া হয়েছে। অস্ত্রোপচারের পর থেকে তিনি শারীরিকভাবে দুর্বল হয়ে পড়েন। কোনো কাজ করতে পারছেন না। পাশাপাশি প্রস্রাব ও মলত্যাগে সমস্যা দেখা দেয়। গত ১৫ জানুয়ারি জৈন্তাপুর উপজেলার জৈন্তা ডায়াগনস্টিক সেন্টারে গিয়ে আলট্রাসনোগ্রাম করে নিশ্চিত হন, তাঁর বাঁ দিকের কিডনি নেই। আর্থিক সুবিধার জন্য চিকিৎসকেরা তাঁর কিডনি অপসারণ করে নিয়ে থাকতে পারেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন খছরু মিয়া।

মামলায় কারও নাম উল্লেখ না করলেও গত বছরের ১৯ নভেম্বর হাসপাতালের ৯ নম্বর ওয়ার্ডে দায়িত্ব পালন করা সহকারী রেজিস্ট্রারসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের বিবাদী হিসেবে উল্লেখ করা হয়েছে।

সিলেট কোতোয়ালি থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ আলী মাহমুদ প্রথম আলোকে বলেন, আদালতের নির্দেশনা পাওয়ার পর গত শুক্রবার মামলাটি এজাহারভুক্ত করা হয়েছে। মামলা বর্তমানে তদন্তাধীন। তদন্তের পর আদালতের কাছে প্রতিবেদন দেওয়া হবে।

হাতের হাড়ভাঙার অস্ত্রোপচারে কিডনি অপসারণের সুযোগ নেই বলে দাবি করেছেন ওসমানী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অর্থোপেডিক বিভাগের প্রধান শংকর কুমার রায়। তিনি প্রথম আলোকে বলেন, ওই রোগীর শরীরের অন্য জায়গা থেকে হাড় সংগ্রহ করে হাতে জোড়া দেওয়া হয়েছিল। এটি নিয়মিত প্রক্রিয়া। এর বাইরে ওসমানী হাসপাতালে কিডনি প্রতিস্থাপন করা হয় না।