মৌলভীবাজারের জুড়ী উপজেলায় ভাটা থেকে ইট কিনে বিক্রি করেন জহিরুল ইসলাম (৫৫)। এ ব্যবসার আড়ালে বেশ কিছুদিন ধরে পুরোনো একটি গুদাম ভাড়া নিয়ে অবৈধভাবে ধান মজুত করে ব্যবসা করছিলেন। গতকাল বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় উপজেলা সদরের জাঙ্গিরাই এলাকায় ওই গুদামে অভিযান চালিয়ে তাঁকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালত। সেই সঙ্গে গুদামটি সিলগালা করে দেওয়া হয়। জহিরুল ইসলামের বাড়ি একই এলাকায়।
প্রশাসন ও ভ্রাম্যমাণ আদালত-সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা যায়, খাদ্য অধিদপ্তরের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে গতকাল সন্ধ্যা সাড়ে ৭টার দিকে জুড়ী উপজেলার সহকারী কমিশনার (ভূমি) সানজিদা আক্তারের নেতৃত্বে ভ্রাম্যমাণ আদালতের একটি দল জাঙ্গিরাই এলাকায় মক্তদীর বালিকা উচ্চবিদ্যালয়ের সামনের সড়কের বিপরীত পাশে একটি পুরোনো গুদামে অভিযান চালায়। ধান মজুতের বিষয়ে কেউ যাতে সন্দেহ করতে না পারেন, সে জন্য গুদামের সামনে ইটের স্তূপে আড়াল করে রাখা। সেখানে ট্রাক থেকে ইট নামানো হচ্ছিল। একপর্যায়ে গুদামের ভেতরে অভিযান চালিয়ে বস্তাভর্তি ৭৩ দশমিক ৬০ মেট্রিক টন ধান মজুত পাওয়া যায়। যার বাজারমূল্য ২০ লক্ষাধিক টাকা। পরে গুদামের ভাড়াটিয়া জহিরুল ইসলামকে জরিমানা করা হয়। অভিযানে মৌলভীবাজার জেলা খাদ্যনিয়ন্ত্রক বিনয় কুমার দেবসহ জুড়ী থানা-পুলিশের একটি দল উপস্থিত ছিল।
অভিযান শেষে সহকারী কমিশনার সানজিদা আক্তার বলেন, খাদ্য অধিদপ্তরের অনুমতিপত্র (লাইসেন্স) ছাড়াই জহিরুল ইসলাম অবৈধভাবে ধান মজুত করে ব্যবসা করছিলেন। এ কারণে ২০২৩ সালের খাদ্যদ্রব্য উৎপাদন, মজুত, হস্তান্তর, বিপণন ও পরিবহন আইনে তাঁকে ৩০ হাজার টাকা জরিমানা করা হয় এবং অনাদায়ে এক মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়। পাশাপাশি গুদামটি সিলগালা করা হয়েছে।
অভিযানকালে আশপাশের কিছু লোক সেখানে জড়ো হন। তাঁরা বলেন, জহিরুল ইসলামকে ইট ব্যবসায়ী বলেই জানতেন। বিভিন্ন ভাটা থেকে তিনি ইট কিনে বিক্রি করেন। তিনি যে গোপনে ধান-চালেরও ব্যবসা করেন, সেটা জানা ছিল না।
এ বিষয়ে জহিরুল ইসলাম সাংবাদিকদের বলেন, ‘কিছুদিন ধরে এই ব্যবসা (ধান মজুত) শুরু করেছিলাম। লাইসেন্স না নিয়ে ভুল করে ফেলেছি। দোষ স্বীকার করছি।’