সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে পরিচয়। বিয়ে করার কথা বলে এক তরুণীকে ডেকে নেওয়া হয় রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলাতে। পরে ওই তরুণীকে ধর্ষণ করেন কথিত প্রেমিক ও তাঁর বন্ধুরা। ধর্ষণের বিষয়টি পুলিশকে জানিয়ে দেওয়ার কথা বললে তরুণীকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।
ওই তরুণীর লাশ উদ্ধারের প্রায় দেড় মাস পর রোববার দুপুরে প্রেস বিফ্রিংয়ে এসব তথ্য জানান জেলা পুলিশ সুপার জি এম আবুল কালাম আজাদ। এ সময় অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. সালাউদ্দিন, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রেজাউল করিম, সহকারী পুলিশ সুপার (পাংশা সার্কেল) সুমন কুমার সাহা, কালুখালী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) প্রাণবন্ধু চন্দ্র বিশ্বাস প্রমুখ উপস্থিত ছিলেন।
রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার সাওরাইল ইউনিয়নে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে। গত ১৭ জুলাই দুপুরে একটি পাটখেত থেকে ওই তরুণীর লাশ উদ্ধার করা হয়।
থানা-পুলিশ জানায়, ওই নারী বালিয়াকান্দি উপজেলার বাসিন্দা। গত ২ জুলাই সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম ফেসবুকে তাঁর সঙ্গে মাহফুজ মণ্ডল (২১) নামের এক যুবকের পরিচয় হয়। দুদিন পরই তাঁকে বিয়ে করার প্রস্তাব দেন মাহফুজ। ৫ জুলাই রাত সাড়ে ১২টার দিকে ওই তরুণী বাড়ি থেকে বের হয়ে মাহফুজের বাড়ির সামনে যান।
সেখানে রবিউল খান (২১) নামের এক ব্যক্তি এসে বলেন, ফেসবুকে তিনি মাহফুজ সেজে কথা বলেছেন। পরে সেখানে হাকিম মণ্ডল (২০) ও হাসিব খান (২০) উপস্থিত হয়ে বিয়েতে সহযোগিতা করার কথা বলেন। এরপর মাহফুজসহ চারজন ওই তরুণীকে একটি পাটখেতে নিয়ে ধর্ষণ করেন। এ সময় ওই তরুণী সবার বিরুদ্ধে থানায় মামলা করার কথা বললে তাঁকে শ্বাসরোধে হত্যা করা হয়।
হত্যাকাণ্ডের পর লাশ সেখানে ফেলে রেখে তাঁরা পালিয়ে যান। হত্যাকাণ্ডের ১২ দিন পর লাশের অংশবিশেষ উদ্ধার করা হয়। নিহতের বাবা লাশের পাশে থাকা ব্যাগ, পায়ের স্যান্ডেল, গায়ের জামা এবং ওড়না দেখে মেয়েকে শনাক্ত করেন। পরদিন অজ্ঞাতপরিচয় ব্যক্তিদের আসামি করে থানায় মামলা করা হয়।
পুলিশ সুপার বলেন, নিহত নারীর ফেসবুক মেসেঞ্জারের কথা বলার সূত্র ধরে মাহফুজকে গত ৮ আগস্ট গ্রেপ্তার করা হয়। তিনি পরদিন ১৬৪ ধারায় আদালতে জবানবন্দি দিয়েছেন। অপর তিন আসামিকে গত শনিবার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে গ্রেপ্তার করা হয়।