ভৈরবে দুর্ঘটনার ১৫ ঘণ্টা পর উদ্ধারকাজ সমাপ্ত, উভয় লাইনে চলছে ট্রেন

দুর্ঘটনাকবলিত বগি উদ্ধার করে রাখা হয়েছে রেললাইনের পাশে। আজ মঙ্গলবার সকালে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিম প্রান্তে
ছবি: শাহাদৎ হোসেন

কিশোরগঞ্জের ভৈরবে দুর্ঘটনার ১৫ ঘণ্টা পর দুর্ঘটনাকবলিত ট্রেনের উদ্ধার কাজ শেষ হয়েছে। আজ মঙ্গলবার ভোর ৪টা ২০মিনিটে বগি দুটি লাইন থেকে সরিয়ে নেওয়া সম্ভব হয়। ট্রেন চলাচলের জন্য লাইন পুরোপুরি প্রস্তুত হয় সকাল সাড়ে ছয়টায়। এরপর থেকে ডাউন এবং আপ উভয় লাইনে ট্রেন চলাচল শুরু হয়।

এতে করে উভয় পাশে আটকা পড়া ট্রেনগুলো ধীরে ধীরে গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যেতে শুরু করে। তবে ট্রেন চলাচল এবং শিডিউল (সময়সূচি) সম্পূর্ণ স্বাভাবিক হতে এক দিনের অধিক সময় লাগতে পারে বলে ধারণা করছেন সংশ্লিষ্টরা।

ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার মো. ইউসুফ প্রথম আলোকে এসব তথ্য নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নির্দেশে দুর্ঘটনাকবলিত লাইনে বর্তমানে ১০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চলাচলের কথা বলা হয়েছে। পরবর্তী নির্দেশ না পাওয়া পর্যন্ত এই গতিতে ট্রেন চালানো হবে।

রাতভর চলে ট্রেন উদ্ধার অভিযান। গতকাল দিনগত রাত দেড়টার দিকে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিম প্রান্তে

রেলওয়ে সূত্র জানায়, সন্ধ্যার পর থেকে আখাউড়া থেকে আসা উদ্ধারকারী ট্রেন উদ্ধার কাজ শুরু করে। দুটি বগি চূর্ণবিচূর্ণ হয়ে যাওয়ায় অনেকটা আলাদা করে করে সরানো যায়। উদ্ধারের প্রথম পর্যায়ে মালবাহী ট্রেনটিকে স্টেশনে সরিয়ে আনার ব্যবস্থা করা হয়। ট্রেনটি দুর্ঘটনাকবলিত স্থান থেকে সরানো হয় সন্ধ্যা ৭টা ৩৫ মিনিটে। ৭টা ৫৫ মিনিটে এগারসিন্ধুর ট্রেনের তিন বগি রেখে ট্রেনটি গন্তব্যের উদ্দেশে ছেড়ে যায়। মানুষের আশঙ্কা ছিল বগির নিচ অনেকে আটকা পড়ে মারা যেতে পারেন। তবে দুটি বগির নিচ থেকে আর কারও মৃতদেহ পাওয়া যায়নি। ফলে এখন পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা ১৮ জন।

গতকাল বেলা সাড়ে তিনটার দিকে ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিম প্রান্তে এগারসিন্দুর ট্রেনটির পেছনের তিনটি কোচে মালবাহী একটি ট্রেন ধাক্কা দেয়। এতে যাত্রীবাহী ট্রেনের পেছনের দুটি কোচ উল্টে গিয়ে ১৮ জন নিহত ও শতাধিক আহত হন। দুর্ঘটনার পর ঢাকা-চট্টগ্রাম, ঢাকা-সিলেট ও ঢাকা-কিশোরগঞ্জ—তিন পথে সাড়ে সাত ঘণ্টা ট্রেন চলাচল বন্ধ ছিল।

দুর্ঘটনাস্থলে স্থানীয় মানুষজনের ভিড়। আজ মঙ্গলবার সকালে কিশোরগঞ্জের ভৈরব রেলওয়ে স্টেশনের পশ্চিম প্রান্তে

এই ঘটনায় মালবাহী ট্রেনের চালক, সহকারী চালক ও পরিচালককে (গার্ড) সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। রেলওয়ের পক্ষ থেকে দুটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়। তিন দিনের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার কথা বলা হয়েছে। কমিটির সদস্যরা আজ ভৈরবে এসে মাঠ পর্যায়ের তদন্তের কাজ করবেন বলে রেলওয়ে সূত্র জানায়।