রাজশাহীতে ৪ মে থেকে গুটি আম বাজারজাত করা যাবে বলে প্রশাসনের পক্ষ থেকে ঘোষণা করা হয়েছিল। তবে রাজশাহীর স্থানীয় বাজারগুলোতে আজ শনিবার পর্যন্ত পাকা আম বিক্রি করতে দেখা যায়নি। আমচাষিরা বলছেন, গুটি আম এখনো পাকেনি। তাই এই আম বাজারে আসতে আরও সপ্তাহখানেক সময় লাগবে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, বাঘায় ‘চোরুষা’ জাতীয় একটি গুটি আম পাকাকে শুধু নমুনা হিসেবে ধরে এবারের আম পাড়ার তারিখ ঘোষণা করা হয়েছে। তবে এই আমও স্থানীয় বাজারে বিক্রি হচ্ছে না। বেশির ভাগ আম চলে যাচ্ছে ঢাকা, সিলেটসহ দেশের বিভিন্ন জেলায়। তবে রাজশাহীতে আচারের জন্য কিছু কাঁচা আম পাড়া শুরু হয়েছে। এগুলোও ব্যবসায়ীরা রাজশাহীর বাইরে নিয়ে যাচ্ছেন।
জেলার আম সংগ্রহ, পরিবহন, বিপণন ও বাজারজাত মনিটরিং-সংক্রান্ত সভায় গত বুধবার আম পাড়ার সময়সূচি ‘ম্যাঙ্গো ক্যালেন্ডার’ প্রকাশ করা হয়েছে। এতে বলা হয়েছে, গুটি আমের পর গোপালভোগ ১৫ মে, লক্ষণভোগ বা লখনা ও রানীপছন্দ ২০ মে এবং হিমসাগর বা ক্ষীরশাপাতি ২৫ মে থেকে বাজারজাত করা যাবে। অন্য জাতের আমগুলো আরও কিছুদিন পর বাজারে আসবে।
রাজশাহীতে বড় আমের বাজার হচ্ছে পুঠিয়া উপজেলার বানেশ্বর। এই বাজারের বণিক সমিতির সভাপতি ওসমান আলী বলেন, এখনো পাকা গুটি আম বাজারে আসেনি। আরও দিন দশেক পর থেকে গুটি আম বাজারে আসতে শুরু করবে। অন্য জাতের আম আরও পরে আসবে।
বাঘায় চোরুষা জাতের অল্প কিছু আম আছে। সেই আম পাকতে শুরু করেছে। এই আমের গাছ রয়েছে বাঘার বড় আমচাষি আশাফুদৌলার। তিনি বলেন, তাঁর বাগানে চোরুষা জাতের আম ২০ মণ হতে পারে। এই এলাকার অন্য চাষিদের যা আছে সব মিলিয়ে প্রায় ১২০ মণ হতে পারে। এই আম পাকতে শুরু হলেও স্থানীয় বাজারে তা বিক্রি হচ্ছে না। বাগানেই এই আম ২ হাজার ৫০০ টাকা মণ দরে বিক্রি হচ্ছে। বাগান থেকেই ঢাকা, সিলেট অথবা বিদেশে পাঠানো হচ্ছে। এই আম ছাড়া আর অন্য কোনো গুটি আম এখনো পাকা শুরু হয়নি।
স্থানীয় চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গতকাল শুক্রবার বাঘা উপজেলার পাকুড়িয়া গ্রামের অবনী পালের একটি গাছের গুটি আম পাড়া হয়েছে। ওই গাছ থেকে প্রায় দুই মণ আম হতে পারে। সাজিদুল ইসলাম নামের একজন ব্যবসায়ী আমগুলো কিনে ফেনীতে পাঠিয়েছেন। এ ছাড়া স্থানীয় বাজারে কোনো জাতের পাকা আম নেই। এর আগে গত বুধবার বাঘার একজন আমচাষির বাগান থেকে ৩০০ কেজি চোরুষা জাতের আম ইতালিতে পাঠানো হয়েছে।
এদিকে রজব আলী নামের পুঠিয়ার একজন ব্যবসায়ী জেলার দুর্গাপুর থেকে গত বৃহস্পতি ও শুক্রবার দুই দিন আচারের জন্য কাঁচা আম পেড়েছেন। তিনি বানেশ্বর বাজার থেকে সেই আম ঢাকার কারওয়ান বাজারে পাঠিয়েছেন। রজব আলী বলেন, গত বৃহস্পতিবার তিনি ৪০ মণ ও শুক্রবার চার মণ আম পেড়েছেন। সব আম তিনি ঢাকায় পাঠিয়েছেন। আচার তৈরির জন্য গুটি ও কাঁচামিঠা জাতের চাহিদা আছে। তবে পাকা আমের ব্যবসা এখনো শুরু হয়নি। তাই আপাতত তাঁরা কাঁচা আম পাঠাচ্ছেন।