এক নারীর হাতে ল্যাপটপ তুলে দিচ্ছেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ। বুধবার দুপুরে ফেনীর প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট মাঠে
এক নারীর হাতে ল্যাপটপ তুলে দিচ্ছেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ। বুধবার দুপুরে ফেনীর প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট মাঠে

নিজের গ্রামে বসে স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে: প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ পলক বলেছেন, বিশ্ব জয়ের হাতিয়ার একটি স্মার্ট ল্যাপটপ। প্রতিবছর ২০ থেকে ২৫ লাখ তরুণ-তরুণী কর্মক্ষেত্রে প্রবেশ করছেন। সবাইকে চাকরি দেওয়া সম্ভব নয়। সবাই ইউরোপ ও মধ্যপ্রাচ্যে চলে যেতে পারবেন না। তাহলে নিজের গ্রামে বসে আর্থিক স্বাবলম্বী হওয়ার ক্ষেত্র তৈরি করতে হবে। তরুণ-তরুণীদের ওপর নির্ভর করছে স্মার্ট বাংলাদেশ।

আজ বুধবার দুপুরে ফেনীর প্রাথমিক শিক্ষক প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউট (পিটিআই) মাঠে ল্যাপটপ বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব কথা বলেন প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ।

তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি বিভাগের অধীন ‘হার পাওয়ার’ প্রকল্পের আওতায় ফেনী, চাঁদপুর ও লক্ষ্মীপুর জেলার নারী ফ্রিল্যান্সার, সেবাদাতা, ই-কমার্স প্রফেশনাল ও কল সেন্টার এজেন্টের ৭৪৫ প্রশিক্ষণার্থী নারীকে ল্যাপটপ উপহার দেওয়া হয়। এর মধ্যে ফেনী জেলার ২৪০ জন, লক্ষ্মীপুর জেলার ২৬৫ ও চাঁদপুর জেলার ২৪০ জন নারী আছেন।

জেলা প্রশাসন এবং তথ্য ও প্রযুক্তি অধিদপ্তরের আয়োজনে অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ফেনী জেলা প্রশাসক শাহীনা আক্তার। কাজী তারানার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি ছিলেন ফেনী-১ (ছাগলনাইয়া, ফুলগাজী ও পরশুরাম) আসনের সংসদ সদস্য আলাউদ্দিন আহমেদ চৌধুরী নাসিম, ফেনী-২ (সদর) আসনের সংসদ সদস্য নিজাম উদ্দিন হাজারী, ফেনীর পুলিশ সুপার জাকির হাসান। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন তথ্য ও যোগাযোগপ্রযুক্তি অধিদপ্তরের মহাপরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. মোস্তফা কামাল। এ ছাড়া প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্য থেকে বক্তব্য দেন ফেনীর চৈতি সাহা, লক্ষ্মীপুর জেলার ইসরাত জাহান তানজিনা, চাঁদপুর জেলার সাবিহা জামান।

প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহ্‌মেদ বলেন, দেশে যৌতুক প্রথা একটি ব্যাধি হয়ে উঠেছিল। ১৯৯৬ সালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার যুগান্তকারী সিদ্ধান্তে নারী শিক্ষার প্রসার, যৌতুক প্রথার বিরুদ্ধে সোচ্চার ভূমিকা রাখে। একসময় প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পুরুষ শিক্ষক ছিলেন। এখন ৬০ শতাংশ নারী। প্রধানমন্ত্রীর সিদ্ধান্তে অসংখ্য নারীর ক্ষমতায়ন ও কর্মক্ষেত্র তৈরি হয়েছে। ২০০৮ সালে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ ছিল না। এখন শতভাগ বিদ্যুতের আলোয় আলোকিত। ১৩ কোটি মানুষ ইন্টারনেটে যুক্ত। ১৫ বছর আগের চেয়ে বৈপ্লবিক পরিবর্তন হয়েছে। আইটি সেক্টরে ২০ লাখ তরুণ-তরুণীর কর্মসংস্থান হয়েছে। এ খাত থেকে ১ দশমিক ৯ মিলিয়ন ডলার আয় হয়েছে।

ল্যাপটপ উপহার পাওয়া নারীদের উদ্দেশে প্রতিমন্ত্রী বলেন, দেশের কল্যাণে তাঁরা যেন প্রত্যেকে ল্যাপটপ দিয়ে আরও ১০ জনকে প্রশিক্ষণ দিয়ে উদ্যোক্তা তৈরি করেন। তিনি বলেন, ফেনী জেলায় ১১৪টি শেখ রাসেল ডিজিটাল ল্যাব আছে। আরও ১০০টি ল্যাব করার ঘোষণাও দেন তিনি।

অনুষ্ঠান শেষে প্রতিমন্ত্রী পরশুরাম উপজেলার আলাউদ্দিন আহমেদ নাসিম কলেজ–সংলগ্ন শেখ কামাল আইটি ট্রেনিং ও ইনকিউবেশন সেন্টার স্থাপনের নির্ধারিত জায়গা পরিদর্শন করেন। দুপুরের পর প্রতিমন্ত্রী চট্টগ্রামের মিরসরাইয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ ‍মুজিব শিল্পনগর পরিদর্শনের উদ্দেশে ফেনী ছাড়েন।