পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলায় কালবৈশাখীতে গাছ পড়ে ও বজ্রপাতে দুজনের মৃত্যু হয়েছে। নদীতে মাছ ধরতে গিয়ে ঝড়ের কবলে পড়ে দুজন জেলে নিখোঁজ আছেন। এ ছাড়া ঝড়ের তাণ্ডবে লন্ডভন্ড হয়ে গেছে সহস্রাধিক গাছপালা, শতাধিক ঘর ও শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান।
আজ রোববার বেলা পৌনে ১১টা থেকে সোয়া ১১টা পর্যন্ত চলে ঘূর্ণিঝড়ের তাণ্ডব। ঝোড়ো বাতাস ও বৃষ্টির মধ্যে শুরু হয় বজ্রপাত। মুহূর্তেই ঘোর অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে যায় পুরো এলাকা। আতঙ্কিত হয়ে পড়েন ঘরে ও ঘরের বাইরে থাকা মানুষ। বিশেষ করে শিশুরা বেশি আতঙ্কিত হয়।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, ঝোড়ো বাতাসের প্রভাবে দাসপাড়া ইউনিয়নের চর আলগী গ্রামের বাসিন্দা আহাম্মদ প্যাদার বসতঘরের ওপর গাছ ভেঙে পড়ে তাঁর স্ত্রী সাফিয়া খাতুন (৮০) মারা যান। নাজিরপুর ইউনিয়নের রায় তাঁতেরকাঠি গ্রামের বাসিন্দা মো. জহির সিকদারের স্কুলপড়ুয়া ছেলে মো. রাতুল সিকদার (১৩) বজ্রপাতের কারণে হৃদ্যন্ত্রের ক্রিয়া বন্ধ হয়ে মারা যায়। তেঁতুলিয়া নদীতে মাছ শিকার করতে গিয়ে ঘূর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে নিখোঁজ হন চন্দ্রদ্বীপ ইউনিয়নের ইসমাইল ও ইব্রাহিম নামের দুই জেলে। এ ছাড়া বজ্রপাতে উপজেলার বাহির দাসপাড়া, চরমমিনপুর, কাছিপাড়া, চন্দ্রদ্বীপ গ্রামে আটটি গবাদিপশু মারা গেছে। বিদ্যুতের ২২টি খুঁটি ভেঙে পড়ায় বিদ্যুৎ সরবরাহ বন্ধ আছে। বাউফল থানা-পুলিশ এসব তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করেছে।
ঝোড়ো বাতাসে বাউফল ছালেহিয়া ফাজিল মাদ্রাসার পাঠদান ভবনের টিনের ছাউনি উড়ে গেছে। কর্পূরকাঠি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের একটি টিনশেড ভবন বিধ্বস্ত হয়েছে। গাছ পড়ে বিধ্বস্ত হয়েছে নাজিরপুর গ্রামের মান্নান হাওলাদারের ঘর। এ রকম উপজেলার বিভিন্ন এলাকার শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছেন উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. বশির গাজী।
পটুয়াখালী পল্লী বিদ্যুৎ সমিতির বাউফল জোনাল অফিসের উপমহাব্যবস্থাপক (ডিজিএম) মো. মুজিবুর রহমান চৌধুরী বলেন, ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাবে বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইনের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। ২২টি খুঁটি ভেঙে গেছে। মাঠকর্মীরা বিদ্যুৎ সরবরাহ লাইন সচল করতে কাজ শুরু করেছে, যাতে দ্রুত সময়ের মধ্যে বিদ্যুৎ সরবরাহ করা যায়।
ইউএনও মো. বশির গাজী প্রথম আলোকে বলেন, প্রাথমিকভাবে উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বিপুল পরিমাণ গাছপালা ও শতাধিক ঘর বিধ্বস্ত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ নির্ণয়ের কাজ চলছে।