গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলায় পোশাক কারখানার শ্রমিক বহনকারী একটি বাসে ট্রেনের ধাক্কায় চারজন নিহত হয়েছেন। দুর্ঘটনায় আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন। আজ রোববার সকাল ৭টার দিকে উপজেলার ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলসড়কের মাইজপাড়া এলাকায় এ দুর্ঘটনা ঘটে। আহত ব্যক্তিদের জেলার বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম আজ বেলা সাড়ে ১১টার দিকে প্রথম আলোকে দুর্ঘটনায় চারজনের মৃত্যুর খবরের সত্যতা নিশ্চিত করেছেন। তিনি বলেন, দুর্ঘটনার পর ঘটনাস্থলে তিনজনের মৃত্যু হয়। হাসপাতালের নেওয়ার পর মারা যান আরও একজন।
নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেলা সাড়ে ১১টা পর্যন্ত একজনের পরিচয় জানা গেছে। রহিমা খাতুন (২৩) নামের ওই পোশাকশ্রমিক শ্রীপুর উপজেলার বালিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা জুলহাস মিয়ার স্ত্রী। তিনি শ্রীপুরের জামান ফ্যাশন ওয়ারস লিমিটেডে অপারেটর পদে চাকরি করতেন। নিহত দুজনের বয়স আনুমানিক ৪০ ও ৪২ বছর বলে জানিয়েছেন রেলওয়ে পুলিশের উপপরিদর্শক (এসআই) রফিকুল ইসলাম।
আহত ব্যক্তিদের মধ্যে বেশ কয়েকজনের নাম জানিয়েছে শ্রীপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স কর্তৃপক্ষ। তাঁরা হলেন জাহিদ (২৪), আরমান (১৭), নাইম (১৯), বুলু হোসেন (৩৪), মাসুমা (১৮), ফারজানা (২০), হালিমা (২৫), মাহফুজ (২৫), শিপন (১৭), হাবিবুল্লাহ (১৬), সোলেমা (১৯), বেবি (৪০), রেশমি আক্তার (৩০), বিল্লাল হোসেন (২০) ও আখির হোসেন (২০)। তাঁরা সবাই শ্রীপুরের জামান ফ্যাশন ওয়ারস লিমিটেড নামের কারখানার বিভিন্ন পদে চাকরি করতেন। তাঁদের বিভিন্ন হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে।
দুর্ঘটনায় আহত রাহিমা খাতুন প্রথম আলোকে বলেন, আজ সকালে কাজে যোগ দিতে শ্রমিক বহনকারী বাসে করে কারখানার উদ্দেশে রওনা দেন তাঁরা। সাড়ে ৭টার দিকে বরমীর মাইজপাড়া এলাকায় পৌঁছালে রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় একটি ট্রেন বাসটিতে ধাক্কা দেয়। এতে বাসে থাকা ২৫ জন শ্রমিকের মধ্যে বেশির ভাগই আহত হন। ঘটনাস্থলেই মারা যান একজন। রেলক্রসিং পার হওয়ার সময় সেখানে গতিরোধকটি নামানো ছিল না বলে তাঁর ভাষ্য।
শ্রীপুর রেলওয়ে স্টেশনমাস্টার হারুন অর রশিদ বলেন, ঢাকা থেকে ছেড়ে আসা ঝারিয়াগামী বলাকা এক্সপ্রেস ট্রেনটি শ্রীপুর রেলস্টেশন অতিক্রম করে সকাল সোয়া ৭টার দিকে। এরপর বরমী ইউনিয়নের মাইজপাড়া রেলক্রসিংয়ে ওই বাসের সঙ্গে ধাক্কা লেগে এ দুর্ঘটনা ঘটে।
এদিকে দুর্ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন গাজীপুরের জেলা প্রশাসক আনিসুর রহমান। এ সময় তিনি বলেন, দাফনের জন্য নিহতদের প্রত্যেকের পরিবারকে ২০ হাজার টাকা করে দেওয়া হবে। আহতদের দেওয়া হবে ১০ হাজার টাকা করে। এ ছাড়া দুর্ঘটনার কারণ বের করতে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে।
শ্রীপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) তরিকুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, ইতিমধ্যে নিহত একজন ও আহত দুজনের পরিবারকে বরাদ্দের টাকা হস্তান্তর করা হয়েছে।