উত্তরের জেলা কুড়িগ্রামে উজানের ঢলে সব কটি নদ-নদীর পানি বাড়ছে। তিস্তা নদীর পানি বেড়ে চার দিন ধরে বিপৎসীমার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ধরলা-দুধকুমার নদের পানিও বিপৎসীমা ছুঁই ছুঁই করছে। পানি বেড়ে যাওয়ায় চরাঞ্চলসহ নদীর তীরবর্তী জমির ফসল ডুবে গেছে। এসব নদ-নদীর অববাহিকায় আবার বন্যার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে।
কুড়িগ্রাম পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) নির্বাহী প্রকৌশলী আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টায় ধরলা নদীর পানি বেড়ে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। এ ছাড়া দুধকুমার, ব্রহ্মপুত্র নদের পানি বাড়ছে। তবে বড় ধরনের বন্যার আশঙ্কা নেই। উজানের বৃষ্টি কমে গেলে এক সপ্তাহের মধ্যে কুড়িগ্রামের সব নদ-নদীর পানি স্বাভাবিক হবে বলে জানান তিনি।
পাউবোর কুড়িগ্রাম কার্যালয়ের দেওয়া তথ্যানুযায়ী, আজ সকাল ৯টায় তিস্তা নদীর পানি কাউনিয়া পয়েন্টে বিপৎসীমার ২ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল। আর ব্রহ্মপুত্র নদের পানি চিলমারী পয়েন্টে বিপৎসীমার ২৮ সেন্টিমিটার, নুনখাওয়া পয়েন্টে ৩৬ সেন্টিমিটার, ধরলা নদীর পানি সদর পয়েন্টে ২ সেন্টিমিটার, দুধকুমার নদের পানি পাটেশ্বরী পয়েন্টে ৭ সেন্টিমিটার নিচ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছিল।
কুড়িগ্রাম সদর উপজেলার ঘোগাদহ ইউনিয়নের দুধকুমার নদের পাড়ের বাসিন্দা মো. হাসান রানা বলেন, গতকাল থেকে পানি বেড়ে যাওয়ায় ঘোগাদহ ইউনিয়নের গিরাই ও দুধকুমার নদের অববাহিকার নিম্নাঞ্চলের ফসলি জমি পানিতে তলিয়ে গেছে। ধানখেতের কোথাও কোমরসমান পানি হয়েছে। দফায় দফায় বন্যায় এবার কৃষকের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে বলে তিনি জানান।
রোববার থেকে তিস্তার পানি কমলেও গত রাত থেকে আবারও নদীতে পানি বাড়তে শুরু করেছে। এতে তিস্তার তীরবর্তী এলাকায় সামান্য ভাঙন দেখা দিয়েছে। রাজারহাট উপজেলার বিদ্যানন্দ ইউনিয়নের রামহরি গ্রামের বাসিন্দা ইদ্রিস আলী বলেন, তিস্তা স্পার বাঁধ শনিবার রাতে ভেঙে গেলে ভাটিতে বিদ্যানন্দ ইউনিয়নে ভাঙন দেখা দেয়। সোমবার ভোরে তিস্তার তীব্র ভাঙনে তাঁর ও তাঁর প্রতিবেশী সহিদুল ইসলামের বসতবাড়ি ভেঙে যায়।
কুড়িগ্রামের জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ সাইদুল আরিফ বলেন, উজানের ঢলে জেলার নদ-নদীর পানি বাড়ছে। নদীর তীরবর্তী ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মধ্যে ইউনিয়ন চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে উপজেলা প্রশাসন ত্রাণ বিতরণ করছে। নদীভাঙন মোকাবিলায় তাৎক্ষণিক জিও ব্যাগ ফেলার জন্য পানি উন্নয়ন বোর্ডকে নির্দেশনা দেওয়া আছে বলে তিনি জানান।