যশোরে বিএনপির ‘ধন্যবাদপত্র’ বিতরণ কর্মসূচিতে পুলিশের লাঠিপেটা, ৩০ জন আহত

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে যশোরে বিএনপির প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। মঙ্গলবার দুপুরে শহরের কাপুড়িয়াপট্টি এলাকায়
ছবি: প্রথম আলো

নির্বাচনে অংশ না নেওয়ায় জনগণকে ধন্যবাদ জানিয়ে যশোরে বিএনপির প্রচারপত্র (লিফলেট) বিতরণ কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। আজ মঙ্গলবার দুপুরে শহরের কাপুড়িয়াপট্টি এলাকায় এ ঘটনা ঘটে। লাঠির আঘাত ও পুলিশের সঙ্গে ধস্তাধস্তিতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগম, সদস্য সিরাজুল ইসলামসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন বলে বিএনপির পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে।

ঘটনার পর শহরের বড়বাজারসহ গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলোতে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। বিভিন্ন স্থানে পুলিশের টহলের পাশাপাশি তল্লাশি অভিযান চালাতে দেখা গেছে।

বিএনপির নেতা-কর্মীদের সূত্রে জানা গেছে, দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বর্জন করায় জনগণকে ধন্যবাদ জানাতে আজ দুপুর ১২টার দিকে ধন্যবাদ জানিয়ে প্রচারপত্র বিতরণ কর্মসূচি শুরু হয়। বিএনপির নেতা-কর্মীরা দুটি দলে ভাগ হয়ে শহরের দড়াটানা মোড় থেকে হাজী মোহাম্মদ মহসীন সড়কের দিকে যান। বিএনপির খুলনা বিভাগীয় ভারপ্রাপ্ত সাংগঠনিক সম্পাদক অনিন্দ্য ইসলাম ও জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগম এই দুটি দলের নেতৃত্বে ছিলেন। নার্গিস বেগমের নেতৃত্বাধীন অংশটি বড়বাজারের ভেতরে পৌঁছালে পুলিশ তাদের ছত্রভঙ্গ করতে লাঠিপেটা করে। নেতা-কর্মীরা দৌড়ে বেরিয়ে যাওয়ার সময় সিটি প্লাজার সামনে পুলিশের আরেকটি দল দ্বিতীয় দফায় লাঠিপেটা করে।

পুলিশ লাঠিপেটায় যশোর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগসহ অন্তত ৩০ জন আহত হয়েছেন। মঙ্গলবার দুপুরে শহরের কাপুড়িয়াপট্টি এলাকায়

এ বিষয়ে অনিন্দ্য ইসলাম বলেন, ‘আওয়ামী লীগের নেতৃত্বাধীন সরকার ভোটারশূন্য একটি ডামি নির্বাচন করেছে। ওই নির্বাচন সাধারণ মানুষ প্রত্যাখ্যান করেছেন। সেই জনগণকে ধন্যবাদপত্র বিতরণের শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিপেটা করেছে। এতে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক নার্গিস বেগম, সদস্য সিরাজুল ইসলামসহ অন্তত ৩০ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। আমরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাই।’

নার্গিস বেগম বলেন, ‘কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে যশোরে শান্তিপূর্ণ লিফলেট বিতরণ করেছি। কিন্তু কর্মসূচির শেষ দিকে নির্দয়ভাবে পুলিশ আমাদের দলের নেতা-কর্মীদের ওপর হামলা করেছে। জনগণকে সঙ্গে নিয়ে যখন আমরা শান্তিপূর্ণ কর্মসূচি করছি, এই অবৈধ সরকার এখন বিএনপির শান্তিপূর্ণ কর্মসূচিকেও ভয় পাচ্ছে। গণতন্ত্র হত্যা করে সরকার একদলীয় ব্যবস্থা কায়েম করে যে কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করেছে, সেটার বহিঃপ্রকাশ হচ্ছে এ ভয়। নেতা-কর্মীদের ওপর এ হামলার ঘটনায় তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি।’

এ বিষয়ে কথা বলার জন্য যশোর জেলা পুলিশের মুখপাত্র বেলাল হুসাইনের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন ধরেননি। তবে যশোর কোতোয়ালি মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুর রাজ্জাক বলেন, বিএনপি কর্মসূচি করেছে কি না, সেটা জানা নেই। পুলিশ লাঠিচার্জ করেছে কি না, তা–ও জানা নেই।