হবিগঞ্জে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে গুলিতে নিহত রিপন শীল (২৭) হত্যার ঘটনায় জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও হবিগঞ্জ-৩ (সদর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মো. আবু জাহিরকে প্রধান করে ৫৯ জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। মামলায় অজ্ঞাতনামা ১৫০ থেকে ২০০ জনকে আসামি করা হয়েছে।
আজ বৃহস্পতিবার নিহত রিপনের মা রুবি রাণী শীল বাদী হয়ে সদর মডেল থানায় মামলাটি করেন। মামলাটি এজাহার হিসেবে রেকর্ড করার বিষয়টি প্রথম আলোকে নিশ্চিত করেছেন থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. নূরে আলম।
মামলার উল্লেখযোগ্য আসামিরা হলেন জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মো. আলমগীর চৌধুরী, হবিগঞ্জ পৌরসভার মেয়র ও জেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান সেলিম, সদর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও হবিগঞ্জ পৌর আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক মোতাচ্ছিরুল ইসলাম, লাখাই উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মুশফিউল আলম আজাদ, শায়েস্তাগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আব্দুর রশিদ তালুকদার ইকবাল, বানিয়াচং উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান ও উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ইকবাল হোসেন, বানিয়াচং উপজেলার মন্দুরী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান শেখ শামছুল হক, জেলা যুবলীগের সভাপতি আবুল কাশেম চৌধুরী।
মামলার সংক্ষিপ্ত এজাহারে উল্লেখ করা হয়, ৪ আগস্ট দুপুরে হবিগঞ্জ শহরে বিক্ষোভ মিছিল বের করেন বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের শিক্ষার্থীরা। কয়েক হাজার শিক্ষার্থী মিছিল নিয়ে বের হন। এ সময় শহরের টাউন হল এলাকায় জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীরা সশস্ত্র অবস্থায় উপস্থিত ছিলেন। শিক্ষার্থীরা মিছিল নিয়ে শহরের প্রধান সড়ক দিয়ে জেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের সামনে দিয়ে যাওয়ার সময় সাবেক সংসদ সদস্য আবু জাহিরের নেতৃত্বে আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতা-কর্মী হামলা চালান এবং আগ্নেয়াস্ত্র দিয়ে গুলি করেন। এ সময় রিপন শীল (২৭) বুকের ডান পাশে গুলিবিদ্ধ হয়ে গুরুতর আহত হন। পরে তাঁকে হবিগঞ্জ ২৫০ শয্যা জেলা হাসপাতালে নিয়ে গেলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
নিহত রিপন শীল শহরের অনন্তপর আবাসিক এলাকায় একটি ভাড়া বাসায় পরিবার নিয়ে থাকতেন। পরে আন্দোলনকারীরা আওয়ামী লীগের নেতা-কর্মীদের ধাওয়া দিলে তাঁরা আবু জাহিরের বাসায় আশ্রয় নেন। এ সময় বাসাটি ৪ ঘণ্টা ঘিরে রাখেন ছাত্র-জনতা। পরে সেনাবাহিনী, পুলিশ জাহিরসহ তাঁর দলের নেতা-কর্মীদের উদ্ধার করেন। এর পর থেকে আবু জাহিরসহ অন্য আসামিরা পালিয়ে আছেন।