বগুড়া শহরের উপকণ্ঠ বনানীর একটি আবাসিক হোটেলের কক্ষ থেকে এক নারী ও তাঁর এক বছর বয়সী ছেলের মাথাবিহীন লাশ উদ্ধারের ঘটনায় হত্যা মামলা হয়েছে। ওই মামলার ওই নারীর স্বামী সেনাসদস্য আজিজুল হক (২৩) ও তাঁর বাবা হামিদুর রহমানকে গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে।
আজ সোমবার সকাল ৯টার দিকে শাজাহানপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শহিদুল ইসলাম প্রথম আলোকে বলেন, গ্রেপ্তার আজিজুল হককে আজ আদালতে হাজির করা হবে।
লাশ উদ্ধার হওয়া নারীর নাম আশামণি (২০) ও তাঁর এক বছরের ছেলে আবদুল্লাহ আল রাফি। নিহত আশামণি বগুড়া শহরের আকাশতারা এলাকার আসাদুল ইসলামের মেয়ে। অভিযুক্ত আশামণির স্বামী আজিজুল হক বগুড়ার ধুনট উপজেলার হেউতনগরের হামিদুর রহমানের ছেলে।
ওসি শহিদুল ইসলাম বলেন, হোটেলে নিয়ে স্ত্রী ও শিশুপুত্রকে নৃশংসভাবে হত্যার ঘটনায় সেনাসদস্য আজিজুল হককে প্রধান আসামি করে আজ শাজাহানপুর থানায় হত্যা মামলা করেন নিহত আশামণির বাবা আসাদুল ইসলাম। ওই মামলায় আজিজুল হকের বাবা হামিদুর রহমানকেও আসামি করা হয়েছে। ইতিমধ্যে আজিজুল হক ও তাঁর বাবা হামিদুর রহমানকে মামলায় গ্রেপ্তার দেখানো হয়েছে। আজ তাঁদের আদালতে হাজির করা হবে।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মামলার এজাহারে দাম্পত্য কলহ ও পারিবারিক নানা বিষয় নিয়ে আশামণি এবং তাঁর এক বছর বয়সী ছেলেকে হত্যা করার কথা উল্লেখ করা হয়েছে। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আজিজুল হক স্বীকার করেছেন যে পূর্বপরিকল্পনা অনুযায়ী গত শুক্রবার শুভেচ্ছা হোটেলে এসে একটি কক্ষ বুকিং দেন। এরপর বগুড়া শহর থেকে গরু জবাই করার চাকু কেনেন। কেনাকাটা করে দেওয়ার কথা বলে গত শনিবার বিকেলে শ্বশুরবাড়ি থেকে স্ত্রী-সন্তানকে নিয়ে শহরে বের হন। এরপর সন্ধ্যা সাড়ে সাতটার দিকে হোটেলে ওঠেন। প্রথমে স্ত্রীকে বাথরুমে নিয়ে গলা কেটে হত্যা করেন। এরপর শিশুসন্তানকে গলা কেটে হত্যা করতে গিয়ে দেহ থেকে মাথা আলাদা হয়ে যায়। পরে সন্তানের মাথা ব্যাগে ভরে হোটেলকক্ষে তালা দিয়ে প্রায় ছয় কিলোমিটার দূরে বগুড়া শহরের ফতেহ আলী রেলসেতু থেকে করতোয়া নদীতে ফেলেন।
রাফির মাথার খোঁজে গতকাল রোববার দুপুর ১২টা থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত করতোয়া নদীতে তল্লাশি অভিযান চালিয়েছেন ফায়ার সার্ভিসের কর্মী ও ডুবুরিরা। আজ সকাল ১০টা থেকে আবার উদ্ধার অভিযান শুরু হয়েছে।