গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের আয়োজনে জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে শহীদের স্মরণসভায় বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। গতকাল বিকেলে নগরের মিশনপাড়া এলাকায় অবস্থিত হোসিয়ারি সমিতিতে
গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের আয়োজনে জুলাই-আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে শহীদের স্মরণসভায় বক্তব্য দেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি। গতকাল বিকেলে নগরের মিশনপাড়া এলাকায় অবস্থিত হোসিয়ারি সমিতিতে

ফ্যাসিস্ট খুনিদের বিচার চায় দেশের মানুষ: জোনায়েদ সাকি

গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকি বলেছেন, প্রশাসনে এখনো ফ্যাসিস্টদের দোসররা বসে আছে। বিভিন্ন কাঠামোতে তারা বসে আছে। তারা খুনিদের আড়াল করার চেষ্টা করছে। তারা যেন খুনিদের আড়াল করতে না পারে। আমাদের ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে উদ্দেশ করে তিনি বলেন, আপনারা যদি এদের বিচার করতে না পারেন, তাহলে কেন দায়িত্ব নিয়েছেন? বিচার আপনাদের করতেই হবে। এটাই বাংলাদেশের মানুষের আকাঙ্ক্ষা।

শুক্রবার বিকেলে নগরের মিশনপাড়া এলাকায় অবস্থিত হোসিয়ারি সমিতিতে গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ জেলা ও মহানগরের আয়োজনে জুলাই–আগস্ট গণ–অভ্যুত্থানে শহীদের স্মরণসভায় জোনায়েদ সাকি এ কথাগুলো বলেন।

স্মরণসভায় সভাপতিত্ব করেন গণসংহতি আন্দোলন জেলার সমন্বয়ক তরিকুল সুজন। এটি সঞ্চালনা করেন অঞ্জন দাস। নারায়ণগঞ্জ প্রেস ক্লাবের সাধারণ সম্পাদক রফিকুল ইসলাম, বাংলাদেশ ছাত্র ফেডারেশন নারায়ণগঞ্জ জেলা সভাপতি ফারহানা মানিক, গণসংহতি আন্দোলন নারায়ণগঞ্জ মহানগরের সমন্বয়ক নিয়ামুর রশীদ বিপ্লব, নির্বাহী সমন্বয়ক পপি রানী সরকার ও শহীদ পরিবারের সদস্যরা উপস্থিত ছিলেন।

গণ–অভ্যুত্থানে শহীদদের তালিকা তৈরির ওপর গুরুত্বারোপ করে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, এ সরকার শহীদের তালিকা প্রকাশ করবে। একজন শহীদের তালিকাও যেন বাদ না যায়। দল হিসেবে আমরা চেষ্টা করছি, আমাদের সীমাবদ্ধতা রয়েছে; কিন্তু সরকারের সক্ষমতা আছে। এই শহীদেরা শুধু নাম নয়, একেকটি সম্ভাবনাময় জীবন এগুলো। কী নিদারুণ যন্ত্রণা ভোগ করছে এই ছেলেরা। অন্তত ৫০০ যুবক চোখ হারিয়েছে। অনেকে পঙ্গুত্ব বরণ করেছে।  আমাদের সামর্থ্য অনুযায়ী তাদের পাশে দাঁড়াতে হবে। তিনি বলেন, ফ্যাসিস্ট সরকারের দোসরদের চিহ্নিত করতে হবে এবং উপযুক্ত শাস্তি দিতে হবে। এর ব্যতিক্রম ঘটলে বাংলাদেশের মানুষ তা সহ্য করবে না, মেনে নেবে না।’

সরকারকে দ্রুততম সময়ের মধ্যে শহীদদের তালিকা প্রস্তুতের আহবান জানিয়ে জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘আমাদের সবার দায়িত্ব আছে। নতুন বাংলাদেশের দিকে যাত্রা ন্যায়ের ওপর দাঁড়িয়ে হবে। কোনো শহীদ পরিবারকে যেন বলতে না হয় আমরা বিচার পেলাম না। এসব হত্যার দোসর ও নির্দেশদাতারা কোথায় গেল। আমরা শুনতে পাচ্ছি, তারা পালিয়ে গেছে, এখনো পালিয়ে যাচ্ছে। তারা কীভাবে আইনের মুখোমুখি না হয়ে পালিয়ে যাচ্ছে? সরকারকে তার জবাব দিতে হবে। আমরা তাদের বিচারের মুখোমুখি দেখতে চাই।’

জোনায়েদ সাকি বলেন, ‘বাংলাদেশ চলবে ১৯৭১ সালের বৈষম্যহীন বাংলাদেশের চেতনায়। ওরা আবার এটি মনে করিয়ে দিয়েছে। এখানে কেউ পাবে, কেউ পাবে না, সেটা আর হবে না। আমাদের নতুন রাজনৈতিক বন্দোবস্ত লাগবে। সেটার জন্য জনতার সংবিধান লাগবে। তার জন্য আইনের সংস্কার করতে হবে। এর মধ্য দিয়ে রাষ্ট্র গণতান্ত্রিক হবে। এ কাজগুলো অন্তর্বর্তীকালীন সরকারকে করতে হবে।’

এর আগে নারায়ণগঞ্জ নগরের চাষাঢ়ায় বিজয়স্তম্ভে ফুল দিয়ে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন গণসংহতি আন্দোলনের নেতারা।