পঞ্চগড়ের বোদা উপজেলায় অবৈধভাবে সার মজুত করে দালালের মাধ্যমে বেশি দামে বিক্রির অভিযোগে এক মধ্যস্বত্বভোগীকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড এবং একজন ডিলারকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করেছেন ভ্রাম্যমাণ আদালত।
গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে উপজেলার বোদা সদর ইউনিয়নের নাসির মণ্ডল হাটে অভিযান চালিয়ে করে এ জরিমানা করেন ভ্রাম্যমাণ আদালতের নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার নজির।
ছয় মাসের কারাদণ্ডপ্রাপ্ত ব্যক্তির নাম আল মামুন (৪০)। কৃষকেরা সরাসরি সার না পেলেও তিনি মধ্যস্বত্বভোগী হিসেবে ডিলারদের কাছ থেকে সার কিনে বেশি দামে কৃষকদের কাছে সার বিক্রি করতেন। আর দুই লাখ টাকা জরিমানা গোনা ডিলার প্রতিষ্ঠানের নাম মেসার্স নূর নবী মজুমদার ট্রেডার্স।
ভ্রাম্যমাণ আদালত সূত্রে জানা গেছে, নাসির মণ্ডল হাটের কয়েকটি সারের দোকান ও গুদামে অবৈধভাবে সার মজুতের অভিযোগ পেয়ে গতকাল রাতে অভিযান চালায় সেনাবাহিনী ও পুলিশ। এ সময় আল মামুন নামে এক ব্যক্তির গুদামে মজুত রাখা ২৫ বস্তা টিএসপি (ট্রিপল সুপার ফসফেট) ও ২৫ বস্তা এমওপি (মিউরেট অব পটাশ) সার পাওয়া যায়। এ সময় ভ্রাম্যমাণ আদালত পরিচালনা করা হলে তিনি ডিলারদের কাছে সার কিনে বেশি দামে কৃষকদের কাছে বিক্রি করেন বলে স্বীকার করেন। পরে তাঁকে ছয় মাসের বিনাশ্রম কারাদণ্ড দেওয়া হয়।
পরে একই বাজারে মেসার্স নূর নবী মজুমদার ট্রেডার্সের গুদামে অভিযান পরিচালনা করা হয়। সেখানে অবৈধভাবে টিএসপি এবং এমওপি সার মজুত রাখার পাশাপাশি খাতাপত্র ঘেঁটে কৃষকের চেয়ে দালাল আল মামুনের কাছে সার বিক্রির পরিমাণ বেশি দেখা যায়। এমনকি তারা কৃষকের নামেও আল মামুনের কাছে সারা বিক্রি করেছেন বলে নিশ্চিত হয় ভ্রাম্যমাণ আদালত। এ সময় ডিলার প্রতিষ্ঠানটির লোকজন তাঁদের এই অপরাধের কথা স্বীকার করলে প্রতিষ্ঠানটিকে দুই লাখ টাকা জরিমানা করা হয়। এ সময় মেসার্স নূর নবী মজুমদার ট্রেডার্সের ম্যানেজার আইয়ুব আলী ভ্রাম্যমাণ আদালতকে জরিমানার টাকা নগদ পরিশোধ করেন।
বোদা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) শাহরিয়ার নজির মুঠোফোনে প্রথম আলোকে বলেন, আল মামুন দালাল হিসেবে সারের ব্যবসা পরিচালনা করে আসছিলেন। তিনি ১ হাজার ৩৫০ টাকা দামের সারের বস্তা ১ হাজার ৮০০ টাকা পর্যন্ত দামে কৃষকের কাছে বিক্রি করতেন। এ ছাড়া ডিলার নূর নবী মজুমদার ট্রেডার্সে একাধিক রেজিস্ট্রার খাতা পাওয়া গেছে। তারা কৃষকের কাছে সার বিক্রি না করে দালাল আল মামুনের কাছে বিক্রি করতেন, এমন প্রমাণও পাওয়া গেছে। কারাদণ্ডের আদেশের পর আল মামুনকে পুলিশে দেওয়া হয়েছে এবং মেসার্স নূর নবী মজুমদার ট্রেডার্সের কাছে জরিমানা আদায়ের পাশাপাশি তাঁদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা করতে কৃষি বিভাগকে বলা হয়েছে।