ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন দিয়ে গতি কমিয়ে চলাচল করছে ট্রেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় গাজীপুরের শ্রীপুরের বনখরিয়া এলাকায়
ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন দিয়ে গতি কমিয়ে চলাচল করছে ট্রেন। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় গাজীপুরের শ্রীপুরের বনখরিয়া এলাকায়

শ্রীপুরে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইনে গতি কমিয়ে চলছে ট্রেন, তদন্ত কমিটির পরিদর্শন

ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের গাজীপুরের শ্রীপুর উপজেলার বনখরিয়া এলাকায় দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত আধা কিলোমিটার অংশে সব ট্রেনের গতি নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে। ওই অংশে আপাতত সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার গতিতে ট্রেন চালানো হচ্ছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে এই রেলপথে ট্রেন চলাচল প্রায় স্বাভাবিক হয়েছে।

এদিকে ঘটনার তদন্তে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের গঠিত কমিটির সদস্যরা আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টায় দুর্ঘটনাস্থলে পৌঁছান। তিন সদস্যবিশিষ্ট কমিটির প্রধান হিসেবে আছেন রেলপথ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব শাহ ইমাম আলী রেজা। কমিটির সদস্যরা দীর্ঘক্ষণ ধরে ক্ষতিগ্রস্ত রেলপথ পরিদর্শন করেন। এ সময় তাঁরা দুর্ঘটনাকবলিত মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনে থাকা কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলেন।

ঘটনাস্থল পরিদর্শনে রেলপথ মন্ত্রণালয়ের গঠিত তদন্ত কমিটির সদস্যরা। আজ বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে ১০টায় গাজীপুরের শ্রীপুরের বনখরিয়া এলাকায়

গতকাল ভোর সাড়ে চারটার দিকে ঢাকা-ময়মনসিংহ রেলপথের শ্রীপুরের প্রহ্লাদপুর ইউনিয়নের বনখরিয়া এলাকায় আন্তনগর মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস ট্রেনের লোকোমোটিভসহ মোট সাতটি বগি লাইনচ্যুত হয়। এতে আসলাম হোসেন (৩৫) নামের ময়মনসিংহের গফরগাঁওয়ের একজন যাত্রী নিহত হন। আহত হন আরও ১২ জন। মঙ্গলবার রাতের কোনো এক সময় বনখরিয়া এলাকায় রেলপথের একটি অংশ কেটে রাখে দুর্বৃত্তরা। ফলে ভাওয়াল রেলস্টেশনে পৌঁছানোর আগেই ট্রেনটি লাইনচ্যুত হয়ে যায়।

গতকাল ঘটনাস্থল পরিদর্শন শেষে ঢাকা রেঞ্জ পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) সৈয়দ নুরুল ইসলাম বলেন, রেললাইন কাটতে অক্সি-অ্যাসিটিলিনের ব্যবহার করেছে দুর্বৃত্তরা। ঘটনাস্থল থেকে অক্সি-অ্যাসিটিলিন ও এলপিজি সিলিন্ডার জব্দ করা হয়েছে।

আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টা থেকে বেলা ১১টা পর্যন্ত সরেজমিনে দেখা যায়, দুর্ঘটনাস্থলের ৩০০ মিটার দূরে গতি নিয়ন্ত্রণের জন্য ‘১০’ লেখা একটি সাইনবোর্ড টানানো হয়েছে। এ সময়ের মধ্যে দুটো ট্রেন খুবই স্বল্পগতিতে দুর্ঘটনাস্থল অতিক্রম করে। ট্রেনগুলো চলার সময় সামনে রেলওয়ের এক কর্মী লাল ব্যানার হাতে নিয়ে সংকেত দিচ্ছেন। ক্ষতিগ্রস্ত লাইনে রেলওয়ের অন্তত ৫০ কর্মী কাজ করেছেন। ক্ষতিগ্রস্ত সড়কের দুই পাশে মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেসের লোকোমোটিভ ও বগিগুলো পড়ে আছে।

ঘটনাস্থলে রেলওয়ের তদন্ত কমিটির প্রধান শাহ ইমাম আলী রেজা প্রথম আলোকে বলেন, ‘আমরা সরেজমিন পরিদর্শন করছি। প্রয়োজনীয় ডকুমেন্টসগুলো দেখব। ট্রেনসংশ্লিষ্ট যাঁরা আছেন, তাঁদের সঙ্গে কথা বলেছি। সংশ্লিষ্ট অন্যান্য সবার সঙ্গে কথা বলব। এরপর যথাযথ সময়ের মধ্যে কর্তৃপক্ষের কাছে তদন্ত রিপোর্ট পেশ করব। তিন কার্যদিবসের মধ্যে রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে।’

রেলওয়ে সূত্র জানায়, দুর্ঘটনার পর ১৫ ঘণ্টার মধ্যে ক্ষতিগ্রস্ত রেললাইন মেরামত করা হয়। বুধবার রাতে দেওয়ানগঞ্জ কম্পিউটার, মহুয়া ও বলাকা এক্সপ্রেস ছাড়া বাকি সব ট্রেন চলাচল শুরু করে। এরপর আজ বৃহস্পতিবার সকাল থেকে সব ট্রেন আপাতত সর্বোচ্চ ১০ কিলোমিটার গতিতে চলছে।