চলতি বছরের এসএসসি পরীক্ষায় তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি (আইসিটি) বিষয়ে অংশ না নিয়েও পাস করেছে ১৭ শিক্ষার্থী। চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডে এ ঘটনা ঘটেছে। এ তথ্য জানাজানি হওয়ার পর সব শিক্ষার্থীর ফলাফল বাতিল করেছে কর্তৃপক্ষ।
তবে ফলাফল নিয়ে এমন কাণ্ড কীভাবে ঘটল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ঘটনা নিছক কারিগরি ভুল নয়, পরিকল্পনা করে পাস করিয়ে দেওয়া হয়েছে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন শিক্ষকেরা। চট্টগ্রাম মাধ্যমিক ও উচ্চমাধ্যমিক শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান রেজাউল করিম তাঁর কার্যালয়ে আজ বৃহস্পতিবার প্রথম আলোকে বলেন, সম্প্রতি দুই শিক্ষার্থী আইসিটি পরীক্ষায় অংশ না নিয়েও জিপিএ-৫ পেয়েছে, এমন অভিযোগ উঠেছিল। এ ঘটনা খতিয়ে দেখতে গিয়ে আরও ১৫ জনের তথ্য বের হয়। সবার ফলাফল বাতিল করা হয়েছে। এটি ভুল না ইচ্ছাকৃতভাবে করা হয়েছে, কীভাবে ঘটল, তা খতিয়ে দেখতে শিগগির তদন্ত কমিটি গঠন করা হবে। এতে আসল ঘটনা বেরিয়ে আসবে।
আইসিটি বিষয়ের পরীক্ষায় দুই শিক্ষার্থী অংশ না নিয়ে জিপিএ-৫ পাওয়ার ঘটনা সম্প্রতি জানাজানি হয়। এ দুজন চট্টগ্রামের বাঁশখালী উপজেলার চাম্বর উচ্চবিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। পরে দুজনের তথ্য খুঁজতে গিয়ে আরও ১৫ শিক্ষার্থীর নাম পাওয়া যায়। মাধ্যমিকে আইসিটি পরীক্ষা নৈর্ব্যক্তিক ও ব্যবহারিক-২৫ নম্বর করে ৫০ নম্বরের হয়ে থাকে। গত ২৮ ফেব্রুয়ারি নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হয়। আধা ঘণ্টার নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় কেন্দ্রেই উপস্থিত হয়নি এ ১৭ শিক্ষার্থী। তবে গত ১২ জুন প্রকাশিত এসএসসি পরীক্ষার ফলাফলে ১৭ শিক্ষার্থীর ফলাফল পাস এসেছে। এসব শিক্ষার্থী চট্টগ্রামের বিভিন্ন বিদ্যালয়ে পড়াশোনা করেছে।
বোর্ড চেয়ারম্যান রেজাউল করিম জানান, নৈর্ব্যক্তিক পরীক্ষায় অংশ না নিলে ব্যবহারিক পরীক্ষার নম্বর কেন্দ্র থেকে পাঠানোর নিয়ম নেই। তবু কেন কেন্দ্রসচিবেরা পাঠিয়েছেন, তা বোধগম্য নয়। তাই শিক্ষার্থীরা যে কেন্দ্র থেকে পরীক্ষা দিয়েছে, সেসব কেন্দ্রের সচিবসহ সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সাক্ষাৎকার নেবে তদন্ত কমিটি। পাশাপাশি এবারের এসএসসি পরীক্ষার ফলাফল তৈরিতে আর কোনো ত্রুটি আছে কি না, তা-ও খতিয়ে দেখবে।
চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের অধীনে চট্টগ্রাম ছাড়াও কক্সবাজার, রাঙামাটি, বান্দরবান ও খাগড়াছড়ি জেলার শিক্ষার্থীরা পরীক্ষা দেয়। সব মিলিয়ে এবার পরীক্ষার্থী ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ৭৫৩ জন। পরীক্ষায় উপস্থিত ছিল ১ লাখ ৪৫ হাজার ২৪ জন। এবার পাস করেছে ১ লাখ ২০ হাজার ৮৭ পরীক্ষার্থী।
গত ১৫ ফেব্রুয়ারি এসএসসি পরীক্ষা শুরু হয়। তত্ত্বীয় অংশ শেষ হয় ১২ মার্চ। ব্যবহারিক শেষ হয় ২৭ মার্চ। ১ হাজার ১২৫টি বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা ২১৯টি কেন্দ্রে পরীক্ষায় বসে। এবার শতভাগ পরীক্ষার্থী পাস করেছে এমন বিদ্যালয়ের সংখ্যা ৪৪।