সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল ও এলাকাবাসীর সঙ্গে ‘ছাত্রলীগ-সমর্থিত শিক্ষার্থীদের’ সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে
সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল ও এলাকাবাসীর সঙ্গে ‘ছাত্রলীগ-সমর্থিত শিক্ষার্থীদের’ সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল-এলাকাবাসীর সঙ্গে ‘ছাত্রলীগ-সমর্থিত শিক্ষার্থীদের’ সংঘর্ষ

সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদল ও এলাকাবাসীর সঙ্গে ‘ছাত্রলীগ-সমর্থিত শিক্ষার্থীদের’ সংঘর্ষ ও পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটেছে। এতে ছাত্রদলের দুজন নেতাসহ অন্তত ছয়জন আহত হয়েছেন। গতকাল বৃহস্পতিবার রাত পৌনে ১২টা থেকে দেড়টা পর্যন্ত এ সংঘর্ষ হয়। পরে সেনাসদস্যরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন।

প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন শিক্ষার্থী জানান, আজ শুক্রবার বেলা ১১টা থেকে দুপুর ১২টা পর্যন্ত বিশ্ববিদ্যালয়ে ২০২৪-২৫ শিক্ষাবর্ষে কৃষিগুচ্ছ ভর্তি–ইচ্ছুকদের ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। এ উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা বিশ্ববিদ্যালয় ফটকের সামনে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে ব্যানার সাঁটায়। তবে কে বা কারা সেসব ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে পাশের নর্দমায় ফেলে দেয় বলে অভিযোগ ওঠে।
ব্যানার ছিঁড়ার জেরে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীদের সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয় হলে থাকা কিছু শিক্ষার্থীর কথা–কাটাকাটি হয়। ওই সময় সেখানে থাকা বহিরাগত এক ছাত্রদল নেতাও হলে থাকা ওই শিক্ষার্থীদের আক্রোশের শিকার হন। পরে বহিরাগত ওই ছাত্রদল নেতা বিশ্ববিদ্যালয়ের আশপাশের বালুচর ও নয়াবাজার এলাকার মানুষ নিয়ে এসে হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের ধাওয়া দেন।

এরপরই পাল্টাপাল্টি ধাওয়া এবং সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। উভয় পক্ষ ইটপাটকেল নিক্ষেপের পাশাপাশি বাঁশ ও লাঠিসোঁটা নিয়ে সংঘর্ষে জড়ায়। পরে সেনাসদস্যরা এসে রাত দেড়টার দিকে পরিস্থিতি শান্ত করেন। সংঘর্ষে মো. আবু সাঈদসহ (রবি) বিশ্ববিদ্যালয়ের দুজন ছাত্রদল নেতাসহ অন্তত ছয়জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে।

বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্রদল নেতা আবু সাঈদ জানান, রাজনৈতিক পটপরিবর্তনের পরপর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধ করা হয়েছে। তাই বিশ্ববিদ্যালয় এলাকার বাইরে ভর্তি–ইচ্ছুক শিক্ষার্থীদের স্বাগত জানিয়ে ছাত্রদল ব্যানার সাঁটিয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রলীগের দোসর কিছু শিক্ষার্থী ব্যানার ছিঁড়ে ফেলে দেয়। এটা জিজ্ঞেস করতে গেলে ওই শিক্ষার্থীরা ছাত্রদলের কর্মীদের ওপর চড়াও হন।

আবু সাঈদ আরও জানান, ওই সময় সেখানে থাকা বিশ্ববিদ্যালয়-সংলগ্ন এলাকার একজন বড় ভাইকেও তাঁরা (শিক্ষার্থীরা) ধাক্কা দিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বের করে দেন। পরে ওই বড় ভাই স্থানীয় লোকজন নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসেন এবং সংঘর্ষ হয়। এখানে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্রদলের কোনো সম্পৃক্ততা ছিল না। যাঁরা ব্যানার ছিঁড়েছে, পদ-পদবি না থাকলেও তাঁরা ছাত্রলীগের সমর্থক বলে তিনি দাবি করেছেন।

সংঘর্ষে ‘ছাত্রলীগ-সমর্থিত’ কোন শিক্ষার্থীরা জড়িত ছিলেন, সেটা ছাত্রদল কিংবা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন সূত্রে তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত হওয়া যায়নি। এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর মোজাম্মেল হক গতকাল রাত পৌনে দুইটার দিকে প্রথম আলোকে বলেন, ‘ছাত্রদল ও এলাকাবাসীর সঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের হলে থাকা কিছু শিক্ষার্থীর সংঘর্ষ হয়। হলে থাকা শিক্ষার্থীরা ছাত্রলীগ-সমর্থিত বলে প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। তবে তাঁদের পরিচয় নিশ্চিত হওয়া যায়নি।’

এদিকে স্থানীয় ছাত্রদল সূত্রে জানা গেছে, সর্বশেষ ২০১৭ সালে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের কমিটি হয়েছিল। তবে কমিটিতে থাকা শিক্ষার্থীরা এরই মধ্যে পাস করে বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বেরিয়ে যান। এরপর আর নতুন কমিটি গঠিত হয়নি। তবে কমিটি ছাড়াই বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রদলের নেতা-কর্মীরা সক্রিয় আছেন।