বন্ধ থাকা সিলেটের সরকারি তালিকাভুক্ত আটটি পাথর কোয়ারির বর্তমান অবস্থা দেখতে সিলেটে এসেছে বিদ্যুৎ, জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উচ্চপর্যায়ের একটি প্রতিনিধিদল। আজ বৃহস্পতিবার চার সদস্যের দলটি জেলার তিনটি উপজেলার চারটি পাথর কোয়ারিতে যায়।
প্রতিনিধিদলটিতে রয়েছেন জ্বালানি ও খনিজ সম্পদ বিভাগের যুগ্ম সচিব মোহা. নায়েব আলী, বাংলাদেশ ভূতাত্ত্বিক জরিপ অধিদপ্তরের পরিচালক মো. মিজানুর রহমান, পরিবেশ অধিদপ্তরের উপপরিচালক এ কে এম রফিকুল ইসলাম ও খনিজ সম্পদ উন্নয়ন ব্যুরোর উপপরিচালক মো. মাহফুজুর রহমান। সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনের একজন করে প্রতিনিধি তাঁদের সহায়তা করছেন।
গতকাল বুধবার প্রতিনিধিদলের সদস্যরা সিলেটে পৌঁছান। কোয়ারিগুলো পরিদর্শন শেষে আগামী শনিবার তাঁদের ঢাকায় ফেরার কথা রয়েছে। আজ বৃহস্পতিবার সকাল ১০টার দিকে প্রতিনিধিদলের সদস্যরা জৈন্তাপুর উপজেলার শ্রীপুর পাথর কোয়ারিতে যান। এরপর তাঁরা গোয়াইনঘাট উপজেলার জাফলং ও বিছনাকান্দি এবং কোম্পানীগঞ্জের উৎমাছড়া পাথর কোয়ারিতে যান। এ সময় তাঁরা ভূমি জরিপ ম্যাপ অনুসারে পায়ে হেঁটে কোয়ারি ঘুরে দেখেন এবং পাথরের মজুত পর্যবেক্ষণ করেন।
এ বিষয়ে সিলেটের জেলা প্রশাসক মো. মজিবর রহমান প্রথম আলোকে বলেন, প্রতিনিধিদলের সদস্যরা পাথর কোয়ারি সরেজমিনে দেখছেন। শনিবারও তাঁরা কোয়ারি দেখবেন। এরই অংশ হিসেবে দলের সদস্যরা সুনামগঞ্জেও যাবেন। পরে ঢাকায় ফিরে তাঁরা প্রতিবেদন জমা দেবেন। সে অনুযায়ী পাথর কোয়ারি চালু করা কিংবা বন্ধ রাখার বিষয়টি নির্ধারণ হবে।
এর আগে ২০১৯ সাল থেকে সিলেটে বন্ধ থাকা পাথর কোয়ারিগুলো চালুর দাবিতে পরিবহন ধর্মঘটসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করে আসছেন শ্রমিকেরা। তবে পরিবেশ ও জনজীবন রক্ষার স্বার্থে পাথর কোয়ারি বন্ধ রাখার জন্য দাবি জানিয়ে আসছে বাংলাদেশ পরিবেশ আইনবিদ সমিতিসহ (বেলা) পরিবেশবাদী বিভিন্ন সংগঠন। তাদের দাবি, বাণিজ্যিকভাবে পাথর উত্তোলনের সুযোগ বন্ধ করতে হবে। তবে নদীর নাব্যতা রক্ষা ও পানির প্রবাহ নির্বিঘ্ন রাখতে স্থানীয় প্রশাসনের ব্যবস্থাপনায় উদ্যোগ নেওয়া যেতে পারে।
বেলা সিলেটের বিভাগীয় সমন্বয়ক শাহ সাহেদা প্রথম আলোকে বলেন, ‘পাথর কোয়ারি চালু করার দাবি একেবারেই অযৌক্তিক। একসময় সিলেটে পাথর কোয়ারিগুলোতে নির্বিচার পাথর উত্তোলনের ফলে প্রকৃতি ও জনজীবন ব্যাপকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। পুরোনো এই চিত্র আমরা নতুন করে আর দেখতে চাই না।’