দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জামানত হারাচ্ছেন তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব তৈমুর আলম খন্দকার। নারায়ণগঞ্জ-১ (রূপগঞ্জ) আসন থেকে নির্বাচন করে তিনি পেয়েছেন মাত্র ৩ হাজার ১৯০ ভোট। তৈমুরের এই আসনে মোট বাতিল ভোটের পরিমাণ ৪ হাজার ৩৫টি। সেই হিসাবে তিনি বাতিল ভোটের চেয়েও কম ভোট পেয়েছেন।
গতকাল রোববার ভোট গণনা শেষে জেলা রিটার্নিং কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, আসনটিতে ১ লাখ ৫৬ হাজার ৪৮৩ ভোট পেয়ে বিজয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের প্রার্থী গোলাম দস্তগীর গাজী। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী কেটলি প্রতীকের মো. শাহজাহান ভূঁইয়া পেয়েছেন ৪৫ হাজার ৭৫ ভোট। আর তৈমুর আলম খন্দকার পেয়েছেন মাত্র ৩ হাজার ১৯০ ভোট। আসনটিতে ৪ হাজার ৩৫টি ভোট বাতিল হয়েছে।
আসনটির ৩ লাখ ৮৫ হাজার ৬১৬ ভোটারের বিপরীতে নির্বাচনে ভোট পড়েছে ২ লাখ ১২ হাজার ৬২৪টি, যা মোট ভোটের ৫৫.১৪ শতাংশ। বিধি অনুযায়ী, মোট প্রদত্ত ভোটের অন্তত সাড়ে ১২ শতাংশ ভোট না পেলে প্রার্থী তাঁর জামানত হারাবেন। সেই হিসাবে তৈমুর আলমের জামানত বাঁচাতে প্রয়োজন ছিল অন্তত ২৬ হাজার ৫৭৮ ভোট।
দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তফসিল ঘোষণার আগেই ‘কিংস পার্টি’ হিসেবে পরিচিতি পাওয়া তৃণমূল বিএনপির মহাসচিব হয়ে আলোচনায় আসেন তৈমুর আলম খন্দকার। তার পর থেকে কখনো ফোনালাপ, কখনো প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর সমালোচনা, আবার কখনো বা প্রশাসনের সমালোচনা করে নিয়মিত আলোচনায় ছিলেন তিনি। নির্বাচনের পুরো সময় জোর দিয়ে বলেছেন, ‘দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে তৃণমূল বিএনপিই হবে দেশের প্রধান বিরোধী দল।’ তৈমুরের আত্মবিশ্বাসী বক্তব্য শুনে তাঁর সমর্থকেরাও আশায় বুক বেঁধেছিলেন। কেউ কেউ ভেবেছিলেন, ‘অটো পাসে’ সংসদ সদস্য হবেন তিনি। আবার কেউ আশায় ছিলেন ‘গায়েবি ভোটের’। তৈমুরের ভোটের মাঠের হালচিত্র নিয়ে গত ২৮ ডিসেম্বর ‘“অটো পাস” আর “গায়েবি” ভোটের আশায় তৈমুর সমর্থকেরা’ শিরোনামে প্রতিবেদন করে প্রথম আলো।
এদিকে ফলাফল প্রকাশের পর নির্বাচন নিয়ে তৈমুর আলমের মূল্যায়ন জানতে তাঁর সঙ্গে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাঁর নম্বরটি বন্ধ পাওয়া যায়। এর আগে গতকাল সকালে নারায়ণগঞ্জের রূপসী নিউ মডেল স্কুল অ্যান্ড কলেজ কেন্দ্রে ভোট দেওয়ার পর তিনি নির্বাচন নিয়ে প্রতিক্রিয়া জানান। ভোটের দিন সকাল থেকেই কেন্দ্রে কেন্দ্রে তাঁর এজেন্টদের বাধা দেওয়া এবং তাঁদের ওপর হামলা হয়েছে বলে তৈমুর অভিযোগ করেন। তিনি বলেন, ‘কঠিন অবস্থার মধ্য দিয়ে নির্বাচন করতে হচ্ছে। নির্বাচনের কোনো পরিবেশ নেই।’