নেত্রকোনায় এক রাতে ৫ মামলা, সাবেক দুই এমপিসহ আসামি ৬২৯

নেত্রকোনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদ, নেত্রকোনা-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য আশরাফ আলী খান ও নেত্রকোনা জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামছুর রহমান
ছবি: সংগৃহীত

নেত্রকোনার চারটি থানায় আরও পাঁচটি মামলা হয়েছে। গতকাল রোববার রাত ৮টা থেকে ১২টার মধ্যে কলমাকান্দা, দুর্গাপুর, খালিয়াজুরী ও সদর মডেল থানায় মামলাগুলো নথিভুক্ত করা হয়। পাঁচ মামলায় আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের অন্তত ২২৫ নেতা-কর্মীর নাম উল্লেখ করা হয়েছে। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয়েছে আরও ৪৭০ জনকে।

দুর্গাপুর থানার মামলায় নেত্রকোনা-১ (কলমাকান্দা-দুর্গাপুর) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদ এবং সদর থানায় নেত্রকোনা-২ (সদর-বারহাট্টা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য বীর মুক্তিযোদ্ধা মো. আশরাফ আলী খানকে আসামি করা হয়েছে। এ ছাড়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদককে আসামি করা হয়েছে। এ নিয়ে গত ১৭ আগস্ট থেকে আজ সোমবার সকাল পর্যন্ত ৯টি থানায় ১৯টি মামলা হয়েছে।

পুলিশ ও আওয়ামী লীগের দলীয় সূত্রে জানা গেছে, গতকাল রাতে নেত্রকোনা মডেল থানায় বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে দুটি মামলা হয়। একটি মামলায় কাটলি এলাকার বাসিন্দা মো. আল আমিন বাদী হয়ে ৫৪ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আসামি করেন ৮০ জনকে। অপর মামলাটির বাদী কুড়পাড় এলাকার শেখ মোহাম্মদুল্লাহ। মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামছুর রহমানকে প্রধান করে সাবেক সংসদ সদস্য আশরাফ আলী খানসহ ৬৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ৫০ জনকে।

কলমাকান্দা থানায় বিস্ফোরক ও বিশেষ ক্ষমতা আইনে মামলা করেন চারুলিয়া গ্রামের রিটন মিয়া। এতে উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ও জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সহসভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল খালেককে প্রধান করে ৪৮ জনের নাম উল্লেখ করা হয়। অজ্ঞাতনামা আসামি করা হয় ৮০ জনকে। খালিয়াজুরী থানায় চাঁদাবাজি ও মারধরের মামলার বাদী জগন্নাথপুর গ্রামের রফিকুল ইসলাম। মামলায় ১০ জনের নামসহ অজ্ঞাতনামা আরও ১০ জনকে আসামি করা হয়। দুর্গাপুর থানায় বিস্ফোরক আইনে মামলা করেন বরুঙ্গা গ্রামের আবু সিদ্দিক নামের এক ব্যক্তি। মামলায় নেত্রকোনা-১ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদকে প্রধান করে ৪৭ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। এতে অজ্ঞাতনামা আরও ২৫০ জনকে আসামি করা হয়।

এ নিয়ে গত ১৭ আগস্ট থেকে আজ সকাল পর্যন্ত জেলায় আওয়ামী লীগ নেতা-কর্মীদের নামে ১৯টি মামলা হয়েছে। এতে মোট আসামির সংখ্যা ২ হাজার ৫৭ জন। তাঁদের মধ্যে ৭৮০ জনের নাম উল্লেখ করা হয়েছে। ছয়টি মামলায় জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক শামছুর রহমানকে প্রধান আসামি করা হয়। আর তিনটি মামলায় সাবেক সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদকে প্রধান আসামি করা হয়।

মামলার বিষয়ে জানতে শামছুর রহমান, সাবেক সংসদ সদস্য মোশতাক আহমেদ, আশরাফ আলী খানসহ অন্যদের মুঠোফোনে কল দিলে সেগুলো বন্ধ পাওয়া যায়। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা প্রধানমন্ত্রীর পদ থেকে পদত্যাগ করে দেশ ছাড়ার পর থেকে আওয়ামী লীগের এ নেতারা আত্মগোপনে আছেন।

নেত্রকোনার পুলিশ সুপার মো. ফয়েজ আহমেদ বলেন, বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ৯টি থানায় ১৯টি মামলা হয়েছে। মামলা হওয়ার পর থেকে পুলিশ আসামিদের গ্রেপ্তার করতে অভিযান চালাচ্ছে।