হেলিকপ্টারে করে বিয়ে করতে যাওয়ার কথা এখন অনেক শোনা যায়। এবার পুকুরের ওপর বাসরঘর বানিয়ে ফুলশয্যা করার ঘটনা ঘটেছে শেরপুর সদর উপজেলার চরশেরপুর ইউনিয়নের সাতানীপাড়া গ্রামে। ঘটনাটি জানাজানি হলে শনিবার সকাল থেকেই আশপাশের এলাকার উৎসুক জনতা সেই ঘর দেখতে ভিড় করে।
নববিবাহিত ওই যুবকের নাম আবদুল হালিম। তিনি সাতানীপাড়া গ্রামের আবদুল হামিদের ছেলে। শেরপুর শহরের একটি ইঞ্জিনিয়ারিং ওয়ার্কশপে শ্রমিক হিসেবে কাজ করেন। পারিবারিকভাবে জামালপুরের ইসলামপুর উপজেলার কান্দারচর গ্রামের মকছেদ আলীর মেয়ে মোর্শেদা আক্তার ওরফে মায়াকে (২০) বিয়ে করেন তিনি। শুক্রবার রাতে শহরের বাসস্ট্যান্ড গৌরীপুর এলাকার এক আত্মীয়ের বাড়িতে তাঁদের বিয়ে হয়। রাত ১১টার দিকে নববধূ মোর্শেদাকে নিয়ে হালিম সাতানীপাড়ায় নিজের বাড়িতে নিয়ে যান। বাড়িসংলগ্ন একটি পুকুরে নির্মিত বাসরঘরেই আয়োজন করা হয় নবদম্পতির ফুলশয্যার।
চরশেরপুর সাতানীপাড়া গ্রামে গিয়ে দেখা গেছে, হালিমের বাড়িসংলগ্ন পুকুরের মধ্যে পানির ওপরে কাঠ, বাঁশ, কাপড়, শামিয়ানা ও ছাতা দিয়ে একটি ঘর বানানো হয়েছে। ঘরের ভেতরে ও বাইরে নানা ধরনের ফুল ও বৈদ্যুতিক বাতি দিয়ে সাজানো। ঘরের মধ্যে খাট ও বৈদ্যুতিক পাখা আছে। পুকুরের পাড় থেকে ওই ঘরে যাতায়াতের জন্য বানানো হয়েছে বাঁশের সাঁকো।
আবদুল হালিম প্রথম আলোকে বলেন, বিয়ের তারিখ ঠিক হওয়ার পর নতুন কিছু করার কথা ভাবেন তিনি। সেই থেকেই ভাতিজা রূপন ফারাজী ও বন্ধু সোহেলকে নিয়ে পুকুরের মধ্যে পানির ওপর বাসরঘর তৈরির উদ্যোগ নেন। এক সপ্তাহ ধরে অনেক কষ্টে এটি তৈরি করেন ভাতিজা ও বন্ধু। শুক্রবার সন্ধ্যা থেকেই আশপাশের অনেক মানুষ বাসরঘরটি দেখতে আসছে। এতে তাঁরও খুব ভালো লাগছে।
নববধূ মোর্শেদা আক্তার বলেন, স্বামীর এমন আয়োজনে তিনি মুগ্ধ। তিনি খুবই খুশি হয়েছেন। দাম্পত্যজীবনে সুখী হওয়ার জন্য তিনি সবার দোয়া কামনা করেন।
সদর উপজেলার মধ্যবয়ড়া কানাশাখোলা গ্রাম থেকে হালিমের ব্যতিক্রমী বাসরঘর দেখতে এসেছেন মো. আমিনুল ইসলাম। তিনি বলেন, ‘এর আগে জীবনে এমন বাসরঘর দেখিনি। এক বন্ধুর কাছে খবর পেয়ে দেখতে এসেছি। পুকুরের পানির ওপর এমন বাসরঘর সত্যিই ব্যতিক্রমী। দেখে খুব ভালো লেগেছে।’
চরশেরপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. সেলিম মিয়া প্রথম আলোকে বলেন, হালিমের এমন বাসরঘর দেখে মানুষের মধ্যে চাঞ্চল্য তৈরি হয়েছে। পানির ওপর এমন বাসরঘরের কথা তিনি আগে কখনো শোনেননি। তিনি নবদম্পতির সর্বাঙ্গীন মঙ্গল কামনা করেন।