দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ (সদর ও বিজয়নগর) আসনে নৌকার প্রার্থী হিসেবে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়া যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা র আ ম উবায়দুল মোকতাদির চৌধুরী মন্ত্রী হচ্ছেন, এ খবরে খুশি ব্রাহ্মণবাড়িয়াবাসী।
নতুন মন্ত্রিসভায় যে ২৫ জন পূর্ণ মন্ত্রী হচ্ছেন, তাঁদের মধ্যে মোকতাদির চৌধুরীর নাম রয়েছে। ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন থেকে তিনিই প্রথমবারের মতো মন্ত্রী হতে যাচ্ছেন। এই খবরে আওয়ামী লীগ-ছাত্রলীগ জেলায় আনন্দমিছিল করেছে।
মোকতাদির চৌধুরী ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি। তিনি এই আসন থেকে চতুর্থবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। এর আগে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন থেকে কেউই পূর্ণ মন্ত্রী হননি। এই আসন থেকে প্রথমবারের মতো পূর্ণ মন্ত্রী হতে যাওয়া মোকতাদিরই প্রথম কোনো সংসদ সদস্য।
৭ জানুয়ারির নির্বাচনে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন থেকে ১ লাখ ৫৮ হাজার ৮৭২ ভোট পেয়ে ভোট পেয়ে জয়ী হন তিনি। তাঁর নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের স্বতন্ত্র প্রার্থী সদর উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান ফিরোজুর রহমান ৬৪ হাজার ৩৭ ভোট পান।
এদিকে পূর্ণ মন্ত্রীর দায়িত্ব পাচ্ছেন—এমন সংবাদে জেলা শহরের বিভিন্ন জায়গায় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ ও ছাত্রলীগসহ সহযোগী সংগঠনের নেতা–কর্মীরা আনন্দ মিছিল করেন। আনন্দমিছিলটি শহরের কালীবাড়ি মোড়, টিঅ্যান্ডটি ও হাসপাতাল সড়ক প্রদক্ষিণ শেষে বঙ্গবন্ধু স্কয়ারে গিয়ে শেষ হয়।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক শাহাদাৎ হোসেন বলেন, ‘ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসন থেকে এখন পর্যন্ত কেউ পূর্ণ মন্ত্রী হননি। এটি আমাদের একটি আক্ষেপ ছিল। আমাদের দীর্ঘদিনের স্বপ্ন ছিল এই জনপথের নেতা বর্তমান সংসদ সদস্য মোকতাদির চৌধুরী যেন মন্ত্রীর দায়িত্ব পান। কারণ, মন্ত্রিত্ব পাওয়ার মতো মেধা, শিক্ষা ও যোগ্যতা তাঁর রয়েছে। সংসদ সদস্যকে পূর্ণ মন্ত্রী করায় প্রধানমন্ত্রীকে ধন্যবাদ ও জেলাবাসীর পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা জানাই।’
জানা গেছে, ২০১১ সালে ব্রাহ্মণবাড়িয়া-৩ আসনে সংসদ উপনির্বাচনে প্রথমবারের মতো সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন মোকতাদির চৌধুরী। তিনি ঢাকা কলেজ থেকে উচ্চমাধ্যমিক এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে রাষ্ট্রবিজ্ঞানে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর সম্পন্ন করেন। ১৯৮৩ সালে বিসিএস পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হয়ে তিনি প্রশাসন ক্যাডারে যোগদান করেন। ১৯৮৬ সালে জাতীয় সংসদের বিরোধীদলীয় নেতা শেখ হাসিনার একান্ত সহকারী সচিব এবং ১৯৯৬-০১ সাল পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার একান্ত সচিব হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন মোকতাদির চৌধুরী।
এর আগে তিনি ১৯৬৯ সালে ঢাকা কলেজ ছাত্র সংসদের ছাত্রদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত প্রথম সাধারণ সম্পাদক। তিনি ১৯৭০ সালে বাংলাদেশ ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদের সহসাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৭৩-৭৪ সালে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের গ্রন্থনা ও প্রকাশনা সম্পাদক এবং ১৯৭৫ সালে বাকশাল গঠন করা হলে ২১ সদস্যবিশিষ্ট জাতীয় ছাত্রলীগ কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্য মনোনীত হন তিনি। তাঁর স্ত্রী অধ্যাপক ফাহিমা খাতুন মাধ্যমিক ও উচ্চ শিক্ষা অধিদপ্তরের সাবেক মহাপরিচালক।