পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনের চারবারের সংসদ সদস্য ও জাতীয় পার্টির (জাপা) কেন্দ্রীয় ভাইস চেয়ারম্যান রুস্তম আলী ফরাজী দলীয় মনোনয়ন পাননি। আজ সোমবার সন্ধ্যায় জাতীয় পার্টির প্রার্থীদের নাম ঘোষণা করা হয়। এ আসনে জাতীয় পার্টির মনোনয়ন পেয়েছেন দলের চেয়ারম্যান জি এম কাদেরের উপদেষ্টা মাসরেকুল আজম।
দলীয় সূত্রে জানা গেছে, জাতীয় পার্টির (জাপা) প্রধান পৃষ্ঠপোষক রওশন এরশাদের প্রতি সমর্থন আছে সংসদ সদস্য রুস্তম আলীর। বছরখানেক ধরে তিনি জাতীয় পার্টির কর্মকাণ্ডে নিষ্ক্রিয় ছিলেন। নির্বাচনী এলাকায় জাতীয় পার্টির হয়ে তিনি রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে অংশ নিতেন না। উন্নয়ন কমিটি নামে একটি সংগঠনের ব্যানারে তিনি সভা-সমাবেশ করতেন। রুস্তম আলী ফরাজীর এসব কর্মকাণ্ডের জন্য জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান জি এম কাদের ক্ষুব্ধ ছিলেন।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, রুস্তম আলী ফরাজী ১৯৯৬ সালের ১২ জুনের নির্বাচনে প্রথমবার জাতীয় পার্টি থেকে সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০১ সালে তিনি জাতীয় পার্টি ছেড়ে বিএনপিতে যোগ দিয়ে সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। ২০০৮ সালে অনুষ্ঠিত নির্বাচনে তিনি বিএনপির মনোনয়ন পাননি। স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে অংশ নিয়ে পরাজিত হন। ওই নির্বাচনে আওয়ামী লীগের আনোয়ার হোসেন বিজয়ী হন। ২০১৪ সালে রুস্তম আলী ফরাজী স্বতন্ত্র প্রার্থী হয়ে আওয়ামী লীগের প্রার্থী আনোয়ার হোসেনকে পরাজিত করে আবার বিজয়ী হন। এরপর তিনি জাতীয় পার্টিতে যোগ দেন। ২০১৮ সালের নির্বাচনে তিনি জাতীয় পার্টির প্রার্থী হয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হন। ২০১৮ সালের একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পিরোজপুর-৩ আসনে আওয়ামী লীগের দলীয় প্রার্থী ছিল না। আওয়ামী আসনটি জাতীয় পার্টিকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে এ আসনে আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পেয়েছেন সাবেক ছাত্রনেতা আশরাফুর রহমান।
রুস্তম আলী ফরাজীর সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা সম্ভব হয়নি। তাঁর সমর্থক মঠবাড়িয়া পৌর জাতীয় পার্টির সভাপতি ফারুক হোসেন বলেন, রুস্তম আলী ফরাজী স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন। তিনি চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। অতীতে তিনি স্বতন্ত্র প্রার্থী হিসেবেও বিজয়ী হয়েছেন। দলের নেতা-কর্মী ও জনগণ তাঁর সঙ্গে রয়েছেন।
জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের উপদেষ্টা মাসরেকুল আজম বলেন, ‘আমি ছাত্রজীবন থেকে জাতীয় পার্টির রাজনীতির সঙ্গে যুক্ত। কখনো দল ছেড়ে যাইনি। দল আমাকে মূল্যায়ন করেছে। পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়া) আসনে জাতীয় পার্টির প্রার্থী চারবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়েছেন। এ আসনে জাতীয় পার্টির বিজয় সুনিশ্চিত।’