ঘূর্ণিঝড় সিত্রাংয়ের প্রভাবে পটুয়াখালীতে নৌযান চলাচল বন্ধ

বঙ্গোপসাগরের গভীর নিম্নচাপটি ঘূর্ণিঝড় ‘সিত্রাং’-এ রূপ নেওয়ায় উপকূলীয় এলাকা পটুয়াখালীতে এর প্রভাব পড়তে শুরু করেছে। গতকাল রোববার দিবাগত রাত থেকে ঝোড়ো হাওয়া বইছে। শুরু হয়েছে বৃষ্টি। দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে জেলার সব নৌপথে সব ধরনের নৌযান চলাচল বন্ধ রাখতে বলেছে পটুয়াখালী নদীবন্দর।

পটুয়াখালীর নদীবন্দরের সহকারী পরিচালক আবদুল্লাহ আল মামুন বলেন, দুর্যোগপূর্ণ আবহাওয়ার কারণে জেলার সব নৌপথে ৬৫ ফুটের ছোট লঞ্চসহ সব ধরনের নৌযান চলাচল পরবর্তী নির্দেশ না দেওয়া পর্যন্ত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।

আজ সোমবার সকাল থেকে জেলা শহরের রাস্তাঘাট ফাঁকা হয়ে পড়েছে। ঝোড়ো হাওয়া ও বৃষ্টির কারণে মানুষ ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। যানবাহনগুলো সড়কে তেমন দেখা যাচ্ছে না।

আবহাওয়া অফিস থেকে পায়রা সমুদ্রবন্দরকে ৭ নম্বর স্থানীয় হুঁশিয়ারি সংকেত দেখাতে বলেছে। ভোর থেকে দুর্যোগ মোকাবিলায় জেলার ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির স্বেচ্ছাসেবকেরা মাঠে নেমে পড়েছেন।

দশমিনা সিপিপির স্বেচ্ছাসেবক পাভেল মাহমুদ রায়হান বলেন, ৭৮ জন ইউনিয়ন লিডারসহ উপজেলার ৫৬০ জন স্বেচ্ছাসেবক দুর্যোগ মোকাবিলায় ভোররাত থেকেই মাঠে নেমেছেন। সংকেত পতাকা উত্তোলনসহ নিরাপদে আশ্রয় নেওয়ার জন্য মাইকিং করা হচ্ছে।

রাঙ্গাবালীর চালিতাবুনিয়া ইউনিয়ন টিম লিডার জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, ইউনিয়নের বেশ কিছু এলাকার বাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত ও ঝুঁকিপূর্ণ আছে। এ কারণে স্বেচ্ছাসেবকেরা আগুনমুখা নদীপারের বাসিন্দাদের আগেভাগেই কাছাকাছি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রে যেতে বলা হচ্ছে।

ঘূর্ণিঝড় প্রস্তুতি কর্মসূচির কলাপাড়া উপজেলার সহকারী পরিচালক মো. আসাদুজ্জামান খান প্রথম আলোকে বলেন, জেলার কলাপাড়া, গলাচিপা, দশমিনা ও রাঙ্গাবালী উপজেলায় সিপিপির ৪৩৫ জন ইউনিয়ন টিম লিডারসহ মোট স্বেচ্ছাসেবক ৮ হাজার ৭০০ জন। দুর্যোগকালীন ও দুর্যোগ–পরবর্তী পরিস্থিতি মোকাবিলায় স্বেচ্ছাসেবকেরা প্রস্তুত আছেন। তাঁরা কাজ শুরু করে দিয়েছেন।

জেলা ত্রাণ ও পুনর্বাসন কর্মকর্তা সুমন চন্দ্র দেবনাথ প্রথম আলোকে বলেন, দুর্যোগকালে মানুষের নিরাপদ আশ্রয়ের জন্য ৭০৩টি ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্র ও বন্যা আশ্রয়কেন্দ্র এবং ২৬টি মুজিব কিল্লা প্রস্তুত রাখা হয়েছে।

দুর্যোগকালীন ও পরবর্তী সময়ে মানুষের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার জন্য ৭২টি ইউনিয়নে ৭২টি চিকিৎসা দল গঠন করা হয়েছে। জরুরি খাদ্যসহায়তার জন্য জেলায় ৩০০ মেট্রিক টন চাল মজুত আছে। ২০ হাজার প্যাকেট শুকনা খাবার ও ২৫ লাখ টাকা চাওয়া হয়েছে।