শিল্প পুলিশের ডিআইজি

গাজীপুরে ১২৩ কারখানা ভাঙচুর, ২২ মামলায় গ্রেপ্তার ৮৮

শিল্প পুলিশের উপমহাপরিদর্শক (ডিআইজি) জাকির হোসেন খান বলেছেন, গাজীপুরে শ্রমিক বিক্ষোভে ১২৩টি কারখানা ভাঙচুর করা হয়েছে। এসব ঘটনায় মামলা হয়েছে ২২টি। আর গ্রেপ্তার করা হয়েছে ৮৮ জনকে। গাজীপুর ও কোনাবাড়ী এলাকার কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা করা হয়েছে। এসব ঘটনার পেছনে কারা জড়িত, তাদের খুঁজে বের করার চেষ্টা চলছে।

আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে গাজীপুর মহানগরীর কোনাবাড়ী এলাকায় তুসুকা কারখানার সামনে এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে জাকির হোসেন এসব কথা বলেন।

জাকির হোসেন খান বলেন, শ্রমিকদের মজুরি বাড়ানোর দাবিকে কেন্দ্র করে গাজীপুরে শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। সেখানে ভাঙচুরের ঘটনা ঘটেছে। বন্ধ আছে ১৭টি কারখানা। পুলিশের ধারণা, শুরু থেকে একটি পক্ষ আন্দোলনে উসকানি দিচ্ছে। যারা উসকানি দিচ্ছে, তাদেরও আইনের আওতায় আনা হচ্ছে। সাধারণ শ্রমিকদের আতঙ্কিত হওয়ার কিছু নেই। শুধু যারা দোষী, তাদেরই গ্রেপ্তার করা হবে। এ ছাড়া শ্রমিকদের সঙ্গে বহিরাগত কিছু লোক আছেন, তাঁদেরও গ্রেপ্তার করা হবে।

এ সময় অন্যদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত ডিআইজি মো. মাসুদ আহমদ, গাজীপুর শিল্প পুলিশের পুলিশ সুপার মো. সারোয়ার আলম, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. মাইনুল হক ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার ইমরান আহম্মেদ প্রমুখ।

গত ২৩ অক্টোবর থেকে বেতন বাড়ানোর দাবিতে গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় পোশাকশ্রমিকেরা বিক্ষোভ করে আসছিলেন। এরপর গত মঙ্গলবার ন্যূনতম মজুরি সাড়ে ১২ হাজার টাকা নির্ধারণ করে সরকার। ঘোষিত মজুরি প্রত্যাখ্যান করে বুধ ও বৃহস্পতিবার গাজীপুরের বিভিন্ন এলাকায় শ্রমিকেরা বিক্ষোভ করেন। বিক্ষোভের সময় কারখানা ও গাড়ি ভাঙচুর, সড়ক অবরোধ, অগ্নিসংযোগ ও শ্রমিক-পুলিশ পাল্টাপাল্টি ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। গত বুধবার প্রাণ হারান এক নারী শ্রমিক।

কাশিমপুর এলাকার এমওয়াই সিনটেক্স লিমিটেড কারখানার সহকারী ব্যবস্থাপক (প্রশাসন) মো. মাসুদ রানা বলেন, বাংলাদেশ শ্রমিক আইন–২০০৬ অনুযায়ী, শ্রমিকদের এ ধরনের আন্দোলন অবৈধ ধর্মঘটের শামিল। এ কারণে কারখানা অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা  করা হয়েছে।

গাজীপুর শিল্প পুলিশের পরিদর্শক মো. রেজাউল বলেন, পরিস্থিতি স্বাভাবিক হলে কারখানা কর্তৃপক্ষ হয়তো কারখানা চালু করবে।

কোনাবাড়ীর তুসুকা কারখানার পরিচালক মো. তারেক বলেন, ‘শ্রমিকেরা কারখানায় ভাঙচুর করে প্রায় সাড়ে ৫ কোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি করেছেন। এ ঘটনায় আমরা মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছি। আমার বিশ্বাস, এসব কাজে আমাদের শ্রমিকেরা জড়িত ছিলেন না। তাদের সঙ্গে অনেক বহিরাগত ছিলেন। সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখে এসব ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে।’