শরীয়তপুর পৌরসভা মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ–৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়
শরীয়তপুর পৌরসভা মিলনায়তনে আজ মঙ্গলবার এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ–৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের নিয়ে অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়

‘মনের সংস্কার করতে না পারলে, কোনো সংস্কারই টেকসই হবে না’

মেঘাচ্ছন্ন আকাশ। যেকোনো সময় বৃষ্টি নামতে পারে। তবে এই আবহাওয়া উপেক্ষা করে শরীয়তপুর পৌরসভা মিলনায়তনে জড়ো হয়েছে একদল মেধাবী শিক্ষার্থী তরুণ-তরুণী। তারা সবাই এসএসসি পরীক্ষায় জিপিএ-৫ পেয়েছে।

শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম শিখোর পৃষ্ঠপোষকতা ও প্রথম আলোর আয়োজনে এসএসসি ও সমমানের পরীক্ষায় জিপিএ–৫ প্রাপ্ত কৃতী শিক্ষার্থীদের নিয়ে এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

আজ মঙ্গলবার সকাল ৯টার দিকে শিক্ষার্থীরা পৌরসভা মিলনায়তনে আসতে শুরু করে। অনুষ্ঠানে এসে উচ্ছ্বসিত তারা। সহপাঠীদের সঙ্গে আড্ডা ও খুনসুটিতে মেতে ওঠে তারা। কেউ কেউ অনুষ্ঠানের স্মৃতি ধরে রাখতে ছবি ও সেলফি তোলে।

প্রথম আলো বন্ধুসভার সদস্যদের জাতীয় সংগীত পরিবেশনার মধ্য দিয়ে সকাল ১০টায় অনুষ্ঠানের মূল আয়োজন শুরু হয়। পরে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে শহীদদের স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালন করা হয়। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন প্রথম আলোর শরীয়তপুর প্রতিনিধি সত্যজিৎ ঘোষ।

অনুষ্ঠানে শরীয়তপুরের নড়িয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ মাকসুদা খাতুন বলেন, ‘সুন্দর দেশ গড়তে আমাদের সন্তানদের সব ক্ষেত্রে সংস্কারে এগিয়ে আসতে হবে। আমরা এখন শুনতে পাচ্ছি, দেশে একধরনের সংস্কার চলছে। সবার আগে আমাদের মনের সংস্কার করতে হবে। নিজের মনের সংস্কার করতে না পারলে, সমাজ বা দেশের কোনো সংস্কারই টেকসই হবে না।’

শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে মাকসুদা খাতুন বলেন, ‘আমরা সবাই মানুষ। কিন্তু তারপরও আমরা মানবিক মানুষ খুঁজি। কিন্তু কেন? এরও কারণ রয়েছে, আমাদের অবশ্যই মানবিক হতে হবে। মননে আচরণে সর্বত্রই মানবিকতা জাগ্রত করতে হবে। ন্যায়–অন্যায় বুঝতে হবে। তাহলেই তো আমরা মানবিক আচরণ করতে পারব। ১৯৭১ থেকে ২০২৪ সাল পর্যন্ত অনেক ত্যাগ ও ইতিহাসে গড়া এই প্রিয় দেশ। আমাদের প্রিয় এই মাতৃভূমিকে সব ক্ষেত্রে এগিয়ে নিতে হবে সবাইকে একযোগে কাজ করে। আজ যারা শিক্ষার্থী, তারাই আগামী দিনের দেশ গড়বে। দেশের দায়িত্ব তোমাদের কাঁধে উঠবে। সেভাবেই পড়ালেখা করে মানবিক মানুষ হয়ে নিজেকে গড়ে তুলতে হবে।’

অনুষ্ঠানে আরও বক্তব্য দেন সরকারি গোলাম হায়দার খান মহিলা কলেজের অধ্যক্ষ ওয়াজেদ কামাল, প্রথম আলোর ফরিদপুরের নিজস্ব প্রতিবেদক প্রবীর কান্তি বালা, শিক্ষার্থী নওরিন সুলতানা ও আবদুর রাকিব।

অধ্যাপক ওয়াজেদ কামাল বলেন, ‘আজকের সংবর্ধনা শিক্ষার্থীদের অনুপ্রেরণার অনুসঙ্গ। এটা জীবনের প্রথম সাফল্য এটা মাথায় রেখে আগামীর সুন্দর ও উজ্জ্বল জীবন গড়তে হবে শিক্ষার্থীদের। বর্তমানে ইন্টারনেটের যুগ। প্রতিটি পদক্ষেপে জীবনের সঙ্গে ইন্টারনেট জড়িয়ে গেছে। স্রোতে গা ভাসিয়ে নিজের ধ্বংস করা যাবে না। ইন্টারনেটের খারাপ দিকগুলো এড়িয়ে চলতে হবে। প্রথম আলো সমাজকে আলোকিত করার মানুষদের একত্রিত করে কাজ করার সুযোগ সৃষ্টি করে দেয়। আমি প্রথম আলোর পাঠক হিসেবে শিক্ষার্থীদের বলব, তোমাদের সাফল্যে যারা সম্মানিত করেছে, তোমরাও ভালো নাগরিক হয়ে নিজেকে গড়ে তুলে তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ থাকবে।’

উৎসবে শিক্ষার্থীদের দেওয়া হয়েছে ক্রেস্ট, সকালের নাশতা ও অনলাইন সনদ। মাদকের বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের শপথ করান শরীয়তপুর সরকারি কলেজের সহকারী অধ্যাপক শাহিন সরকার। অনুষ্ঠানটি সঞ্চালনা করেন বন্ধুসভার যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সালাউদ্দিন রুপম। অনুষ্ঠানে সংগীত পরিবেশন করেন শিক্ষার্থী আরিফ মাহমুদ এবং নৃত্য পরিবেশন করেন সোহেল মীর মালত ও তাঁর দল।

‘স্বপ্ন দেখো, জীবন গড়ো’ স্লোগানে প্রথম আলোর আয়োজনে এবং শিক্ষার ডিজিটাল প্ল্যাটফর্ম ‘শিখো’র পৃষ্ঠপোষকতায় সারা দেশে চলছে জিপিএ-৫ কৃতী সংবর্ধনা উৎসব। আয়োজনটি পাওয়ার্ড বাই বিকাশ এবং সহযোগিতায় থাকছে কনকর্ড গ্রুপ, ফ্রেশ, বহুব্রীহি, সানকুইক, কনকা-গ্রি, মিউচুয়াল ট্রাস্ট ব্যাংক পিএলসি, বার্জার পেইন্টস বাংলাদেশ লিমিটেড, ইউসিএসআই ইউনিভার্সিটি বাংলাদেশ শাখা ক্যাম্পাস, ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস বাংলাদেশ, এটিএন বাংলা ও প্রথম আলো বন্ধুসভা।