শরীয়তপুরের ভেদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয় ভাঙচুর ও তিন ছাত্রলীগ নেতাকে পিটিয়ে আহত করার অভিযোগ পাওয়া গেছে। গতকাল রোববার রাতে এ ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ছাত্রলীগের দুই পক্ষের বিরোধের জেরে এই হামলা হয়েছে বলে দাবি আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ নেতাদের।
আহত তিন ছাত্রলীগ নেতা হলেন ভেদরগঞ্জ উপজেলা সদরের সরকারি এম এ রেজা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ আবু জাফর আশিক (২৯), সাধারণ সম্পাদক শাহজাদা সুমন মুন্সি (২৭) ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোরসালিন হাওলাদার (২১)। তাঁদের ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
ভেদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আবদুল মান্নান হাওলাদার প্রথম আলোকে বলেন, এখন পর্যন্ত আওয়ামী লীগ কার্যালয়ে কেউ হামলা চালানোর সাহস দেখাননি। এবার যাঁরা এ দুঃসাহস দেখিয়েছেন, তাঁদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা ও সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
উপজেলা আওয়ামী লীগ ও ছাত্রলীগ সূত্রে জানা যায়, উপজেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক প্রান্ত মাদবরের সঙ্গে সরকারি এম এ রেজা কলেজ শাখা ছাত্রলীগের নেতাদের বিরোধ আছে। গতকাল রাতে কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সৈয়দ আবু জাফর আশিক, সাধারণ সম্পাদক শাহজাদা সুমন মুন্সি ও সাংগঠনিক সম্পাদক মোরসালিন হাওলাদার ভেদরগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের কার্যালয়ে বসে আড্ডা দিচ্ছিলেন। রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রান্তর নেতৃত্বে ১৫ থেকে ২০ জন ওই কার্যালয়ে হামলা চালান। তাঁরা কার্যালয়ের আসবাব ভাঙচুর করেন এবং ওই তিন ছাত্রলীগ নেতাকে মারধর করেন। পরে তাঁদের উদ্ধার করে ভেদরগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হয়।
এ বিষয়ে আহত ছাত্রলীগ নেতা শাহজাদা সুমন প্রথম আলোকে বলেন, ‘৪ জানুয়ারি এম এ রেজা কলেজে দুই ব্যক্তি নির্বাচনবিরোধী প্রচারপত্র বিলি করছিলেন। আমরা তাঁদের আটক করি। ছাত্রলীগ নেতা প্রান্ত তাঁদের ছাড়িয়ে নিয়ে যান। বিষয়টি আমরা আওয়ামী লীগ নেতাদের জানাই। এর পর থেকে তিনি ক্ষুব্ধ। গতকাল নির্বাচনের ফলাফল জানার পর আমরা কয়েকজন আওয়ামী লীগের কার্যালয়ের বসেছিলাম। রাত সাড়ে ৯টার দিকে প্রান্ত দেশি অস্ত্র নিয়ে আমাদের ওপর হামলা করেন। আমাদের তিনজনকে পিটিয়ে আহত করেন। নেত্রীর ছবি ও আসবাব ভাঙচুর করেন।’
অভিযোগের বিষয়ে জানতে প্রান্ত মাদবরের মুঠোফোনে ফোন করা হলে তিনি কোনো জবাব দেননি। ‘ব্যস্ত আছি’ বলে ফোনের সংযোগ বিচ্ছিন্ন করে দেন। এরপর অন্তত পাঁচ দফায় ফোন করা হলে তিনি আর ধরেননি।
হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ছাত্রলীগ নেতা সৈয়দ আবু জাফর আশিক প্রথম আলোকে বলেন, ‘প্রান্ত তার দলবল নিয়ে আমাদের পিটিয়ে আহত করেছে। আমি হাসপাতালে চিকিৎসা নিচ্ছি। আমার ভাইয়ের মাধ্যমে একটি মামলার এজাহার থানায় পাঠিয়েছি। প্রান্তসহ যারা এ ঘটনায় জড়িত ছিল, এমন ১৬ জনের নাম উল্লেখ করেছি এজাহারে। আওয়ামী লীগ অফিসের আশপাশের সিসিটিভি ক্যামেরার ফুটেজ দেখলেই পুলিশ ঘটনার সত্যতা জানতে পারবে।’
ভেদরগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মিন্টু মণ্ডল প্রথম আলোকে বলেন, ছাত্রলীগের দুই পক্ষের বিরোধের জেরে একটি মারামারির ঘটনা ঘটেছে। আওয়ামী লীগ কার্যালয়ের কিছু আসবাব ভাঙচুর করা হয়েছে। এ ঘটনার লিখিত কোনো অভিযোগ এখনো পাননি। অভিযোগ পেলে আইনগত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।